ব্যগে ঝুলানো শিশুটির চিকিৎসা চলছে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে…

January 17, 2019,

রাজনগর প্রতিনিধি॥ রোববার সকালে মৌলভীবাজারের রাজনগরের মনসুরনগর ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামে ক্ষেতের জমির বেড়ায় বাজারি ব্যগে ঝুলানো নবজাতক শিশুটির চিকিৎসা চলছে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য ইতো মধ্যে অনেকেই যোগাযোগ করছেন বলে জানা যায।  রাজনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু মোকসেদ পিপিএম এর কাছ থেকে জানাযায়, শিশুটি রোববার পাওয়া যায় উপজেলার বড়কাপন গ্রামের এক জমির বেড়ায়। সেই দিন রাজনগর থানায় করা জিডি মূলে এ বিষয়ে মৌলভীবাজার শিশু আদালতে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। শিশু আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমার সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করছেন শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য তবে, আমরা এভাবে দিতে পারি না। আদালত থেকে শিশুটিকে নিতে হবে। আদালত যে ভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবেই হবে। যারা নিতে চায় আদালতে আবেদন করতে হবে। নবজাতক শিশুটি কন্যা সন্তান বলে জানা যায়।

নবজাতকে কি ভাবে পেয়েছিলেন বড়কাপন গ্রামের রোকেয়া বেগম? তার সাথে আলাপে জানা যায়, তিনি অন্যান্য দিনের মতো সকালে ঘুম থেকে ওঠে বাড়ি পাশের সবজি ক্ষেতে গিয়েছিলেন। ক্ষেতে সবজি তুলার সময় বাশের বেড়ায় ঝুলানো একটি বাজারের ব্যগ দেখেন তিনি। সেই ব্যগে নড়া চড়া করছে এবং শব্দও হচ্ছে দেখতে পান। বিষয়টি দেখার জন্য বাশের বেড়ার দিকে এগিয়ে যান তিনি। ব্যগ হাতে নিয়ে দেখতে পান এর মধ্যে একটি নবজাতক শিশু রয়েছে। নড়াচড়া করছে সাভাবিক ভাবে। কোয়াশার পানিতে জুবতুব ফুটফুটে শিশুটি নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে কাঁদছে। চুখ থেকে হয়তো তার পানি ঝড়ছিল না। হয়তো অনেক আগেই শুকিয়ে গিয়েছিল চোখের পানি। তা দেখে হৃদয়টা মুছড়ে উঠে রোকেয় বেগমের। অধির আগ্রহে তুলে নেন নিজ কোলে। মনে মনে বলতে থাকেন কে এই শিশু? কী তার পরিচয়? কে-ই বা রেখে গেল এমন পাষানের মতো? নিজেদের যৌন চাহিদার ফসল অনাঙ্খিত এ শিশুটির জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে?  রোকেয়া বেগমের মনের মাঝে জেগে উঠা হাজারো প্রশ্নের ভিড়ে চোখ তুলে তাকান তিনি আশেপাশে। তেমন মানুষ জন নেই সকাল বেলা। তিনি শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে যান। খবর দেন শহরের বাসায় থাকা তার দেবর মকদ্দুছ মিয়াকে। খবর পৌঁছে যায় রাজনগর থানায়ও। উপপরিদর্শক (এসআই) আবু মোকসেদ পিপিএম দ্রুত ছুটে যান ঘটনাস্থলে। শিশুটির অবস্থা দেখে তারও চোখে জল এসে যায়। ঠান্ডায় হিম হয়ে যাওয়া শিশুটিকে দ্রুত নিয়ে যান মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে। তিনি হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করান। ক্রয় করে দেয়া হয় নতুন জামা।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com