ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধের অজুহাতে কমলগঞ্জে কেজিতে ৭০-৮০ টাকা বৃদ্ধি, ক্ষুব্ধ মানুষ
প্রণীত রঞ্জন দেবনাথ॥ ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধের অজুহাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার হাটবাজারেও ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দাম বৃদ্ধি করেছেন। এভাবে বাজারে বিভিন্ন পণ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া, ওজনে কারচুপি, মূল্যচার্ট না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলেও ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তেমন কোন তৎপরতা নেই। আকস্মিকভাবে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছেন সাধারণ মানুষ।
ক্রেতাদের অভিযোগে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর, ভানুগাছ, মুন্সীবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধের অজুহাতে শুক্রবার বিকেল থেকেই সেসব পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। দোকানে পূর্বের পেঁয়াজ মজুদ থাকার পরও মোদী দোকানী ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম আদায় করে নিচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে নেয়া, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া, ওজনে কারচুপি, মূল্যচার্ট না থাকার বিষয়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা ঠকছেন। এসব বিষয়ে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তেম কোন তৎপরতা নেই বলে অনেকেই অভিযোগ তুলেন।
শমশেরনগর বাজারের ক্রেতা জাবের আলী, আলমগীর হোসেন, শাহজাহান আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দাম বাড়ার সংবাদ শুনেই ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি মোটেও ঠিক হয়নি। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম আদায় করে নিচ্ছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সোহেল আহমদ বলেন, কিছুদিন পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে কেজি ১৮০ টাকা হয়েছে। এটি কোন অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না। পূর্বের পেঁয়াজ রেখে ব্যবসায়ীরা সাথে সাথেই কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা বাড়িয়ে নিচ্ছে। এতো দামে পেঁয়াজ কিনার ক্ষমতা মুষ্টিমেয় মানুষের পক্ষে সম্ভব হলেও বর্তমান দ্রব্যমূল্যেল বাজারে সাধারণ মানুষজনের সেই সামর্থ্য নেই বলে তিনি দাবি করেন। এতে সরকারের ভাবমুর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে।
শমশেরনগর বিমানবন্দর সড়কের ব্যবসায়ী বাবলু মিয়াসহ কয়েকজন মোদী দোকানী জানান, দাম কমলে আমরা লোকসান দিতে হয়। তাই দাম বাড়ার সংবাদে আমরাও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছি।
ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার এর সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি। শনিবারও অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় শ্রীমঙ্গলে অভিযান করে ২ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদ্য়া করেছি। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসার কারণে কিছুটা দাম বেড়েছে। তবে কত টাকা বেড়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তাছাড়া সব সময়েই হাটবাজারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবরে আমাদের অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন