মোবাইল ফিরিয়ে দিয়ে অটোরিকশা চালকের সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন

বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখায় সাংবাদিকের ফেলে যাওয়া মুঠোফোন (এন্ড্রোয়েড) ফিরিয়ে দিয়ে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ফয়জুর রহমান নামে এক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক। তিনি উপজেলার তালিমপুর ইউপির বড়ময়দান গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে। এলাকায় তিনি ফকির ফয়জুর রহমান নামেই চেনেন।
জানা গেছে, দৈনিক সবুজ সিলেট পত্রিকার বড়লেখা উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক এজে লাভলু সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার কাঠালতলী থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় বড়লেখা শহরে যাচ্ছিলেন। এসময় অসাবধানতাবশত তার প্যান্টের পকেট থেকে ব্যবহৃত নোকিয়া মডেলের একটি মুঠোফোন গাড়িতে পড়ে যায়। মুঠোফোনটি গাড়িতে পেয়ে নিজের কাছে রেখে দেন চালক ফয়জুর রহমান। কিছুক্ষণ পর সাংবাদিক এজে লাভলু মুঠোফোনটি বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে মুঠোফোন নম্বরে কল দেন। ওপাশ থেকে ফোন ধরেন অটোরিকশাচালক ফয়জুর রহমান। এরপর ফয়জুর তার পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেবেন বলে জানান। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই সাংবাদিক এজে লাভলু বিষয়টি তালিমপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাসকে জানালে তিনি যোগাযোগ করলে ফয়জুর রহমান তাদেরকেও মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। মঙ্গলবার ২৮ আগস্ট সকাল ৮টায় ফয়জুর রহমান সাংবাদিক এজে লাভলুর বাড়িতে গিয়ে মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেন।
অটোরিকশা চালক ফয়জুর রহমান বলেন, কারও কোনো জিনিসের প্রতি আমার লোভ নেই। যখন মোবাইলটি গাড়িতে পেয়েছি, তখনই প্রকৃত মালিকের কাছে তা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞা করি। রাতে তালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছোটভাই সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত কান্তি দাস কল দিয়ে মোবাইল ফোনের মালিকের সন্ধান দেন।
সাংবাদিক এজে লাভলু জানান, ‘মঙ্গলবার সকালে ফয়জুর রহমান সোজা ফোনটি নিয়ে আমার বাড়িতে হাজির হয়ে তা আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। মুঠোফোনটি খুঁজে না পেয়ে প্রথমে আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ফয়জুর রহমানের মতো সৎ মানুষের কারণে ফোনটি ফিরে পেয়েছেন। হারানো ফোনটি ফিরিয়ে দেয়ায় অটোরিকশা চালক ফয়জুর রহমান এবং তা ফিরে পেতে সহযোগিতা করায় তালিমপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস ও সুজিত কান্তি দাসের কাছে চির-কৃতজ্ঞ।’
তালিমপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস জানান, ‘অটোরিকশা চালক ফয়জুর রহমান একজন ভালো মানুষ। রাতে সাংবাদিক এজে লাভলু মুঠোফোন হারানোর বিষয়টি জানালে আমি দ্রুত ফয়জুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে ফোনটি ফিরিয়ে দিবে বলেছিলো। ফোনটি ফিরিয়ে দিয়ে ফয়জুর সততার অনন্য নজির স্থাপন করেছে।
মন্তব্য করুন