মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুতের বিল নিয়ে বিপাকে গ্রাহকরা

July 24, 2021,

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥ একেই তো কঠোর লকডাউন। দোকান -পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। আয় রোজগার বলতে কিছুই নেই। এই কঠোর লকডাউনের মাঝেই জুলাই মাসের বিল পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করেছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এতে করে বিপাকে পড়েছে সাধারণ গ্রাহকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মাসের ২৫ দিন হাতে রেখেই চলতি জুলাই মাসের বিল ৬ তারিখেই প্রস্তুত করে। গ্রামীণ এলাকাগুলোতে বিল পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ জুলাই। এতে করে একজন গ্রাহককে জুলাই মাসের বিল জুলাই মাসের ২৪ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় জরিমানা গুনতে হবে।
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত গ্রামীণ এলাকাগুলোর গ্রাহকদের বিল পরিশোধের সময়সীমা চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে নির্ধারণ করা হয়। আর পৌরসভা বা শহর এলাকাগুলোতে পরের মাসে ৭ তারিখ পর্যন্ত তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছে। সমিতির বিল পরিশোধের এই দ্বিমুখী আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ইছবপুরের বাসিন্দা মো. আজহার মিয়া বলেন, এটা নামেই পল্লী বিদ্যুৎ। সমিতি পল্লী গ্রাহকদের বোকা ভাবতে পারেন। পল্লীর গ্রাহকেদের আগে আর শহুরে গ্রাহকদের পরের মাসে বিল পরিশোধের সময়সীমা দেখে মনে হয় তারা আমাদের সাথে দ্বিমুখী আচরণ করছে।
উত্তর ভাড়াউড়া এলাকার গ্রাহক সারমিন আক্তার বলেন, কঠোর লকডাউন চলাকালে বিল পরিশোধের সময়সীমাটা না দিলেও পারতো। ৫ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন। সংসারের উপার্জনক্ষম মানুষরা ঘরে বসে। আয় রোজগার বলতে কিছুই নেই। টাকার অভাবে গত মাসের বিল বকেয়া পড়েছে। সংসার চালাতেই নাভিশ্বাস। এ অবস্থায় জুলাই মাসের বিল আগষ্টের ২য় সপ্তাহে নির্ধারণ করতে পারতো। তা না হওয়ায় এখন উল্টো জরিমানা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।
কঠোর লকডাউনের মধ্যে বিল পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করায় মোহাজিরাবাদ এলাকার এক অটোরিকশা চালক বলেন, এটা গরীব মানুষদের জরিমানার ফাঁদে ফেলার একটা কৌশল। আমাদের মতো কর্মহীন মানুষের পক্ষে এই সময়টাতে খেতেই পারছি না। বিদ্যুৎ বিল দেবো কোথা থেকে। সমিতির বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ করতে পারবো না -এটা বুঝেই তারা কঠোর লকডাউনের মধ্যে বিল পরিশোধের সময়সীমা দিয়ে রেখেছে।
জানতে চাইলে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, এটা ইচ্ছাকৃত নয় সমিতির ৪ লক্ষ ৮০ হাজার গ্রাহকদের পর্যায়ক্রমে বিল পরিশোধে এটা করা হয়েছে। জুলাই মাসের বিল জুলাইয়ের ২৪ তারিখের পরের দিন দিলে কেন জরিমানা গুনতে হবে? আবার অপেক্ষাকৃত শহুরে গ্রাহকদের পরের মাসে বিল পরিশোধের সময়সীমা কেন? এমন প্রশ্নের সরসরি কোন উত্তর না দিয়ে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘বিইআরসি এর নাম শুনেছেন কখনও?’ শুনেছি, একজন সংবাদকর্মীকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এর নাম জানতে হয় -এটা জানালে জিএম জিয়াউর রহমান কিছুটা ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, ‘সাংবাদিকদের সব জানার কথা না। আর না জেনে কিছু বলাও ঠিন না’। তিনি বলেন, ‘কোন কুচক্রি মহল থেকে ভুল তথ্য দেয়া হতে পারে। সমিতির সব গ্রাহক সমান। এখানে গ্রামীন শহর বলে কোন কথা নেই। বিইআরসি থেকে পাওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত হয় ‘ বলে তিনি জানান সমিতির সাধারণ শাখার জিএম জিয়াউর রহমান ।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com