মৌলভীবাজার-শমশেরনগর রোডে অতিরিক্ত ভাড়ার আদায় : ভোগান্তিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজার-শমশেরনগর রোডে বিনা কারণে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীরা অনেকটা পরিবহন শ্রমিকদের কাছে জিম্মি হয়ে প্রতিদিন দিগুণ ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষ করে ভোগান্তিতে পড়েছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। কেউ এর প্রতিবাদ করলে হতে হয় হয়রানির শিকার।
জানা যায়, ব্যস্ততম ওই রোডে মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, মৌলভীবাজার টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, সমাজ সেবার এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল, রেডিও পল্লী কণ্ঠের অফিস, এম ঈসরাইল এ এম আমীর উচ্চ বিদ্যালয়, জিরেনিয়াম ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল সহ সরকারী-বেসরকারী অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও ওই রোড দিয়ে বিএফ শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত যাতায়াত করেন। সব মিলিয়ে ওই রোড দিয়ে প্রতিদিন কমলগঞ্জ, শমসেরনগর, কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গলের সহস্রাধিক লোক যাতায়াত করেন।
স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েকবছর চালকরা রাস্তা সংস্কার, করোনার দোহাই দিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেছেন। কিন্তু এখন রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে, করোনা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক, তবুও লাগামহীনভাবে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে সিএনজি-টমটম চালকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, এক সিএনজি চালক ১০টাকা ভাড়ার জায়গায় ২০ টাকা দাবী করলে আমি এর প্রতিবাদ করি। তখন সিএনজি চালক আমাকে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে সম্মান বাঁচাতে টাকা দিয়ে চলে আসি।’
ওই ইনস্টিটিউটের সপ্তম পর্বের শিক্ষার্থী বলেন, রাস্তা ঠিক হয়ে যাওয়ার পরেও দ্বিগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে। আমি শ্রীমঙ্গল থেকে প্রতিদিন কলেজে আসি। মৌলভীবাজার চৌমুহনী থেকে কলেজ পর্যন্ত দ্বিগুণ ভাড়া। এতে ভাড়ার জন্য আমার বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে।
পলিটেকনিকের পার্শ্ববর্তী কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ১০ টাকা ভাড়ার জায়গায় ২০/২৫ টাকাও দিতে হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে সিএনজি চালকরা খারাপ ব্যবহার করে।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় প্রধান (ফুড) এ.কে. এম.খাদেমুল বাশার জানান, সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি কলেজের শিক্ষার্থীদেরকেও দিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। কলেজে যাতায়াতের সময় ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়ত বাকবিতণ্ডা হয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ওই ভাড়া দেয়া অসম্ভব। শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের সাধ্যের ভিতরে ভাড়া হলে উপকৃত হবে।
মৌলভীবাজার-শমসেরনগর রোডের সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠনের সভাপতি সুজা মিয়া বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আমরা আপাতত ভাড়া বেশি নিচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা জেলা পরিষদকে অবগত করেছি। আগামী মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে শিক্ষার্থীদের জন্য ছাড় দেয়া যাবে কিনা। আর কোনো চালক যদি যাত্রীদের সাথে ভাড়া নিয়ে খারাপ আচরণ করেছে এমন তথ্যের সত্যতা পাই, তাহলে ওই ড্রাইভারকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে।’
মন্তব্য করুন