রাজনগরে বোরো ধান সংগ্রহ শুরু লটারির মাধ্যমে ১২২২ জন কৃষকের নাম চূড়ান্ত

শংকর দুলাল দেব॥ রাজনগরে প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান ক্রয় করছে সরকার। চলতি বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের জন্য উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে প্রকৃত কৃষকদের চূড়ান্ত তালিকা করা হয়েছে। এবার বোরো চাষীদের কাছ থেকে এই উপজেলায় ২২৩৩ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। গত ১৫ মে ১৫ মে শুক্রবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এই লটারি অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বোরো ধান ক্রয়ে অনিয়ম দূর করতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার জন্য উপজেলা অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটি এবছর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বোরো ধান বিক্রয়ে আগ্রহী প্রান্তিক কৃষকদের একটি তালিকা তৈরি করে। এসব ইউনিয়নে মোট উৎপাদিত ধানের পরিমান বিবেচনায় কৃষকের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। তালিকা থেকে উত্তরভাগ ইউনিয়নের ৩৫৪ জন ধান বিক্রয়ে আগ্রহী কৃষকের মধ্য থেকে ২১৪ জন, মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ৩৫৪ জনের মধ্য থেকে ২১২ জন, রাজনগর ইউনিয়নে ২০৪ জনের মধ্য থেকে ৬৪ জন, কামারচাক ইউনিয়নের ৫১৪ জনের মধ্য থেকে ১৭০ জন, টেংরা ইউনিয়নে ৩৪ জন, পাঁচগাঁও ইউনিয়নে ১৮২ জন ও মনসুরনগর ইউনিয়নের ২৮৫ জনের মধ্য থেকে ৮২ জনের নাম লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়। তবে ফতেপুর ইউনিয়নে প্রয়োজনীয় কৃষকের চেয়ে তালিকায় প্রাপ্ত কৃষকের সংখ্যা কম থাকায় আগ্রহী সকল কৃষককে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেখানে ৩৭৪ জনের চূড়ান্ত তালিকা করার কথা থাকলেও ধান বিক্রয়ে আগ্রহী প্রকৃত কৃষক পাওয়া গেছে ২৬৪ জন। তাই বাকী ১১৪ জনের নাম ওই ইউনিয়ন থেকে আবারো সংগ্রহ করা হবে। তবে আবার তালিকা করতে গিয়ে চাহিদার চেয়ে বেশি ধান বিক্রয়ে আগ্রহী কৃষক পাওয়া গেলে তাদের মধ্য থেকে লটারি করে ১১৪ জনকে নেয়া হবে।
জানাযায়, শেষ পর্যন্ত অনেক কৃষক নির্ধারিত পরিমান ধান সরবরাহ করতে পারেন না বলে এবছর প্রযোজনীয় কৃষকের সংখ্যার চেয়ে শতকরা ২০ ভাগ বাড়িয়ে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করছে উপজেলা অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটি। কৃষক নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রান্তিক কৃষক ও মহিলা কৃষকদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা রাজনগর উপজেলার ওয়েবসাইট ও নোটিশ বোর্ড, কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা খাদ্য গুদামের নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গানো হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভা কক্ষে লটারি করার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলাল মিয়া, কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম খান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুন নূর, উপসহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, সদর ইউপি চেয়োরম্যান দেওয়ান খয়রুল মজিদ ছালেক, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ময়নুল ইসলাম খান প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন, সরকার প্রান্তিক কৃষকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বোরো ধান সংগ্রহ করছে। সরকারি খাদ্য শস্য ক্রয়ের নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বচ্ছতার জন্য উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে যে সকল কৃষকদের থেকে ধান সংগ্রহ করা হবে তাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনেক কৃষক পরবর্তীতে ধান সরবরাহ করতে পারেন না বলে এবার অতিরিক্ত শতকরা ২০ ভাগ কৃষকের নাম তালিকায় বেশি রাখা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খান বলেন, লটারির পুরো সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। স্বচ্ছতার সাথে লটারি করে বোরো ধান বিক্রয় করতে আগ্রহী কৃষকদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে প্রকৃত প্রান্তিক কৃষকরা তাদের ধান বিক্রির সুযোগ পেয়েছেন।
মন্তব্য করুন