রাতের আধারে তাদের গন্তব্য অসহায়দের বাড়ি

সাইফুল্লাহ হাসান॥ তারাবীহ এর নামাজ আদায় করে সবাই একত্র হন। ভাগ করে দেয়া হয় নিজ নিজ দায়িত্ব। কেউ হাতে করে, কেউ মোটরবাইকে করে, কেউ-বা আবার হেঁটে হেঁটে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যান অসহায়, হতদরিদ্রদের বাড়িতে।
এভাবেই জাগরণ সমাজ কল্যান সংস্থার সদস্যরা রমজানের প্রথম থেকেই নির্বিঘ্নে কাজ করে যাচ্ছেন। রাতের আধারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার বিশেষত্ব হলো, যাদেরকে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হবে বা যাদের বাড়িতে নিয়ে দেয়া হবে তারা যাতে লোক লজ্জা না পায়। কিংবা পাশের বাড়ির কেউ যাতে টের না পায় যে ঐ বাড়িতে ত্রাণ দেয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার অন্যতম একটি সামাজিক সংগঠন জাগরন সমাজ কল্যাণ সংস্থা। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১২ সালে। এর পর থেকে সংস্থাটির সবাই মিলে ও এলাকার যুবকদের একত্র করে ব্যতিক্রমী সকল আয়োজন করে যাচ্ছেন।
ক্লাব সূত্রে জানা যায়, রমজান শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন দু-চারটি বাড়ি করে এ পর্যন্ত ৬৫ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে। রমজানের শেষ দশক থেকে ঈদ সামগ্রীও বিতরণ করছেন তারা। এর মধ্যে গোয়ালবাড়ী ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়ননে সবচেয়ে বেশি বিতরণ করা হয়েছে। এতে করে তারা অনেক সাড়া পাচ্ছেন। জানাজানির কারণে দেশ এবং বিদেশ থেকে অনেকেই তাদের সহযোগিতা করছেন।
জাগরণ সমাজ কল্যাণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা পর থেকে, সমাজে বিভিন্ন সামাজিক মহৎ কাজ করে যাচ্ছে, অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো, কোন মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দেওয়া, কৃতিত্ব ছাত্র ছাত্রীদের সম্মাননা দেওয়া। প্রতি বছর রমজান মাসে ইফতার সামগ্রী বিতরণ, পবিত্র দুই ঈদে ঈদ উপহার সামগ্রী ছিন্নমূল মানুষের মাঝে বিতরণ, এছাড়াও রাস্তাঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পরিস্কার করা। অসচেতন মানুষকে সচেতন থাকার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে তারা।
ক্লাবটির সভাপতি হুমায়ূন রশীদ রাজি বলেন, আমরা যেই উদ্দেশ্য এই সংস্থার যাত্রা শুরু করেছি, সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের এই প্রতিটি কাজ সফল করা জন্য দেশে এবং প্রবাস থেকে এলাকার ব্যক্তিবর্গ আমাদেরকে সহযোগিতা করেন। তার জন্য আমরা সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আশা করি ভাল কাজের জন্য আগামীতে আমাদেরকে অতীতের চেয়ে আরো বেশি সহযোগিতা করবেন। আমরা সবার কাছে দোয়া ও সার্বিক ভাবে সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, এই সমাজে কত মানুষ যে অবহেলিত, বঞ্চিত। তাদের কাছে যাওয়া ছাড়া বুঝা মুসকিল। তাই সবাইকে মানবতার তরে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মন্তব্য করুন