রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং ছাঁটাই, লে-অফ বন্ধসহ অপ্রতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কাজ, খাদ্য ও চিকিৎসা নিশ্চয়তা এবং রেশনিং চালুর দাবী
স্টাফ রিপোর্টার॥ বৈশ্বিক মহামারিকালীন সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং হোটেল, নৌযানসহ সকল ধরণের পরিবহন, স’মিলসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের কাজ, খাদ্য, চিকিৎসার নিশ্চয়তা ও পূর্ণাঙ্গ রেশনিং চালুর দাবি জানান বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটি। জাতীয় ভিত্তিক এই শ্রমিক ফেডারেশনের দেশব্যাপী সমাবেশ কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সংগঠনের মৌলভবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন এবং সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও অর্থনীতির এক সময়ের গর্ব ‘সোনালী আশ’ খ্যাত পাটশিল্পকে ধারাবাহিকভাবে ধ্বংস করার সাম্্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে সরকার এই রকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে চলেছে। সরকারি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ পাটকল শ্রমিকরা আমরণ অনশনসহ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করেছেন। নেতৃবৃন্দ পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বলেন ইতিপূর্বে সাম্্রাজ্যবাদী সংস্থা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের নীতি নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পৃথিবীর সর্ববৃহত পাটকল আদমজী জুট মিলসহ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানাগুলো ধারাবাহিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। সরকার শতভাগ আমদানি নির্ভর গার্মেন্টস শিল্পের মালিকদের জন্য নগদ প্রণোদনা, কর রেয়াত, স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানসহ নানারকম সুযোগ সুবিধা প্রদান করলেও সম্পূর্ণ দেশীয় কাঁচামালের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা পাটশিল্পকে রক্ষা ও অগ্রসর করতে কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করা সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়। বৈশ্বিক জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যে চাহিদা ও বাজার বৃদ্ধির পাওয়ার সময়ে সরকারে এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতিকে যেমন হুমকির মুখে ফেলছে; তেমনি করোনা দূর্যোগের এই সময়ে পাটশিল্পের উপর নির্ভরশীল হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী, পাটজাত পণ্যের ক্ষুদ্র শিল্প, পাট চাষী ও পাট ব্যবসায়ীসহ পাটের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল কোটি জনতার জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। একদিকে করোনার চরম আতঙ্ক এবং অন্যদিকে চাকুরী হারানোর আশঙ্কায় শ্রমিকরা এক দুঃসহ সময় অতিক্রম করছেন। এরকম অবস্থায় শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষায় সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বর্তমান করোনা দূর্যোগের সময়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা পাশাপাশি পাটশিল্পকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব পাটজাত পণ্যের নতুন বাজার সৃস্টির প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ জরুরী। নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগ থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান এবং একই সাথে সকল শ্রমিকের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ করে পূর্ণদ্যোমে পাটকলসমূহ চালু এবং পাটশিল্পকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানান। একই সাথে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সকল ধরনের ছাঁটাই ও লে-অফ বন্ধ, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, নৌযানসহ সকল ধরনের পরিরহন, স’মিল, রিকশা, পাদুকা, বারকি, দর্জি, নির্মাণসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সকল শ্রমিকদের কাজ, খাদ্য, চিকিৎসার নিশ্চয়তা ও পূর্ণাঙ্গ রেশনিং চালুর দাবি জানান।
মন্তব্য করুন