হাকালুকির মৎস্যবিল ইজারা পেতে রাতারাতি সমিতি কার্যালয় নির্মাণ!
আব্দুর রব॥ হাকালুকি হাওরের পলোভাঙ্গা মরাসুনাই ও চিকনউটি বিল গ্রুপ (বদ্ধ) জলমহাল ইজারা পেতে দূরুত্ব জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে বড়লেখা উপজেলার ইসলামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে। সমিতি সংশ্লিষ্টরা বিলের পাড়ে রাতারাতি ঘর নির্মাণ করে স্থায়ী কার্যালয় দেখানোর পায়তারা চালাচ্ছে।
জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি দরপত্র জমা দানকারী সমিতির কার্যালয় হতে জলমহালের দূরত্ব তদন্ত করতে আসতে পারে এমন খবরে এই সমিতির সভাপতি বিলাল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আলম চান্দ শনিবার ২ মার্চ সকাল থেকে সংশ্লিষ্ট বিলের পাড়ে সমিতির কার্যালয় নির্মাণে নেমে পড়েন। যদিও প্রায় অর্ধকিলোমিটার দূরে সভাপতির বাড়িতেই সমিতির কার্যক্রম চলে আসছে। কার্যালয় জালিয়াতির ঘটনায় দরপত্র জমাদানকারি অপর দুই সমিতিতে চলছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলা রাজস্ব বিভাগ গত ১৬ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরের ২০ একরের উর্ধ্বের ২৪টি জলমহাল ১৪৩১-১৪৩৩ বাংলা সনের জন্য ইজারা দরপত্র আহ্বান করে। এরমধ্যে পলোভাঙ্গা মরাসুনাই ও চিকনউটি বিল গ্রুপ (বদ্ধ) জলমহাল ইজারা নিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বড়লেখা উপজেলার তিনটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি সিউিউল ক্রয় করে। একাধিক সমিতি ইজারা নিতে দরপত্র জমা দিলে সংশ্লিষ্ট জলমহাল হতে কম দূরত্বের সমিতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্দেশে যেকোন সময় একটি কমিটি সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলোর কার্যালয়ের দূরত্ব নিরুপনে সরেজমিনে যাবে। আর এই খবরেই ইসলামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি এমন জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। সমিতির সভাপতি বিলাল মিয়ার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে সমিতির কার্যক্রম চলে আসছে। সমিতি কার্যালয়ের দূরত্ব বিবেচনায় ইজারা প্রদানের উদ্যোগে সচতুর বিলাল মিয়া ও আলম চান্দ রাতারাতি বিলের অনতিমূরে কার্যালয় নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পলোভাঙ্গা মরাসুনাই ও চিকনউটি বিল গ্রুপ (বদ্ধ) জলমহালের উত্তর পাড়ে পতিত জমিতে (বর্ষায় ডুবে যায়) কয়েক ব্যক্তি বাঁশ দিয়ে ঘর তৈরী করছেন। পাশেই রাখা হয়েছে উপজেলার ইসলামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাইনবোর্ড।
এব্যাপারে ইসলামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিলাল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আলম চান্দ জানান, এখানেই তাদের সমিতির কার্যালয়। সমিতির মিটিং বসলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঘর ভেঙ্গে তা বড় করছেন। তার (সভাপতি) বাড়িতে সমিতির কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তবে স্থানীয় লোকজন জানান, এই জায়গায় কখনও কোনো ঘর ছিল না।
আশার আলো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি নিমার আলী অভিযোগ করেন, অস্থায়ী ঘর বানিয়ে ইসলামপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি জেলা জলমহাল কমিটির সাথে প্রতারণা করতে চাচ্ছে। গ্রামের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে প্রকৃতপক্ষে কার সমিতির কার্যালয় কোন জায়াগা থেকে চলে আসছে।
বড়লেখা উপজেলা সমবায় অফিসার জবা রানী নাথ জানান, মৎস্যজীবী সমিতির নিবন্ধন গ্রহণকালে তাদের কার্যালয়ের উল্লেখিত ঠিকানা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিত পরিবর্তন অবৈধ। ইসলামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির দূরত্ব কমাতে রাতারাতি কার্যালয় নির্মাণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন