শিক্ষক আন্দোলন ও সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা

August 13, 2025,

বশির আহমদ : একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে জাতির আলোকবর্তিকা শিক্ষককে বারবার রাজপথে নেমে তাদের ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলন করা কোনোভাবেই মর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। শিক্ষা একটি দেশের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি, আর শিক্ষকরা সেই শিক্ষার মেরুদণ্ড। সুতরাং, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও জাতি গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষকদের দাবিকে দ্রুত বাস্তবায়ন করা সরকারের দায়িত্ব এবং সময়ের অপরিহার্য দাবি।

দুঃখজনক হলেও সত্য, দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অবহেলিত হয়ে আসছেন। বাড়িভাড়া , চিকিৎসা ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ  সুবিধা বৃদ্ধির জন্য তারা বারবার দাবি জানালেও, তা এখনও পূরণ হয়নি। বরং ইতিহাস সাক্ষী, এ দেশে একাধিকবার ন্যায্য দাবিতে রাজপথে নামা শিক্ষককে পুলিশি বলপ্রয়োগের মাধ্যমে অপমানিত করা হয়েছে—যা একটি সভ্য রাষ্ট্রে কখনোই কাম্য নয়।

শিক্ষকরা কোনো বেতনভাতা বৃদ্ধির জন্য বিলাসী দাবি করছেন না; তারা চান একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য ন্যূনতম আর্থিক নিরাপত্তা। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যেমন আধুনিক পাঠ্যক্রম, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন শিক্ষকদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক মর্যাদা।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হতে পারে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাকে জাতীয়করণ করা। জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষকদের আর্থিক বৈষম্য দূর হবে, শিক্ষাক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা আসবে এবং সর্বোপরি শিক্ষার্থীরা পাবে সমমানের মানসম্পন্ন শিক্ষা।

এখনই সময়—সরকারকে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা রেখে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের। কারণ, শিক্ষক যদি প্রেরণা হারান, তাহলে জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে পড়বে; আর মেরুদণ্ডহীন জাতি কখনো উন্নতির পথে এগোতে পারে না।

লিখক : বশির আহমদ, অধ্যক্ষ, উলুয়াইল ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com