অবশেষে হাকালুকি হাওর তীরেওএমএসের চাল বিক্রির শুরু

May 6, 2017,

ইমাদ উদ দীন॥ হাকালুকি হাওর তীরের ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ওএমএসএর চাল বিক্রি শুরু হচ্ছে আজ থেকে। ইতোমধ্যে হাওর তীরের মৌলভীবাজার অংশের কুলাউড়া,জুড়ী ও বড়লেখা ৩টি উপজেলায় ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। হাওর তীরের দু’একটি ইউনিয়নে গেল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে চাল বিক্রি কার্যক্রম। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান ডিলার নিয়োগের পর শুক্র ও শনিবার অফিস বন্ধ থাকায় ডিলাররা ওএমএসের চাল উত্তোলন করতে পারেননি।
তাই ৭ মে  ররিবার থেকে পুরোপুরি শুরু হবে ওএমএসের চাল বিক্রি কার্যক্রম। জানা যায় এবছর চৈত্র মাসের অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ দেশের বৃহত্তম হাকালুকি হাওর পাড়ের বোরো ও মৎস্যজীবীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন। সরকার ঘোষিত ওএমসের চালের জন্য প্রতীক্ষায় ছিলেন হাওর তীরের ক্ষতিগ্রস্তরা। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর কুলাউড়া উপজেলার ৭ ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার ০৪ মে থেকে শুরু হয়েছে ন্যায্য মূল্যে চাল বিক্রি। প্রতি পরিবার ১৫ টাকা দরে প্রতিদিন ৫ কেজি করে চাল ক্রয় করতে পারবেন। জানা যায়, এ বছর অকাল বন্যায় তলিয়ে যায় হাকালুকি হাওরের বোরো ধান। হাওর পাড়ের এলাকাগুলোতে দেখা দেয় হাহাকার। অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে সরকারী উদ্যোগে ডিলার নিয়োগ করে হাওর পাড়ের ভুকশিমইল, কাদিপুর, জয়চন্ডী, ব্রাহ্মণবাজার, বরমচাল, ভাটেরা ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়নে চালু করা হচ্ছে ন্যায্য মূল্যে চাল বিক্রির দোকান। ভুকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির বলেন, যে বরাদ্দ দেয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনের সময় চাল বিক্রি শুরু হলে ২শত পরিবারের বিপরীতে প্রায় ৭শত পরিবার চাল ক্রয় করতে আসে। সরকারের কাছে আমাদের দাবী বরাদ্দ যেন আরও বৃদ্ধি করা হয়। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী জানান, প্রতি ডিলারকে প্রতিদিন বিক্রির জন্য ১ টন করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতিদিন ২শত পরিবার চাল ক্রয় করতে পারবেন। এক মাস পর্যন্ত এ চাল বিক্রি চলবে। এদিকে জুড়ীতে উপজেলা পৌর শহর, পশ্চিম জুড়ী ও জায়ফরনগর ইউনিয়নে একজন করে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বড়লেখা উপজেলায় ওএমএসের চাল বিক্রির জন্য ৪জন ডিলার নিয়োগ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বর্ণিতে একজন, সুজানগর,তালিমপুর ও পৌর শহরে ১জন করে ওএমএসের চাল বিক্রির ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে । জেলা ত্রাণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায় এ বছর অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৮,৮৯৮ হেক্টর জমির বোরো ধানের ফসল। ৭০১ হেক্টর সবজি ফসল। মাছ মরেছে ২৫ টন। মোট ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯শ’ ৫৪ জন। বোরো ধানের ক্ষতির পরিমান ১শ’ ১৩ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৭-২৮ কোটি টাকার গ্রীষ্মকালীন সবজি। তবে প্রতিদিনই এই ক্ষয়ক্ষতির হালনাগাদ করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজেস্ট্যাট) সুমি আক্তার জানান, ফসল হারানো দুর্গত মানুষদের জন্য জি আর ২০০ টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। যা ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩ মাস ৮ দিনের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১ হাজার ভিজিএফ কার্ডের অনুকূলে ৯৮ টন চাল ও ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। এই ১ হাজার কৃষক মাসে পাবেন ৩০ কেজি চাল আর নগদ ৫০০ টাকা। নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ৫০০ টন চাল ও ১০ লাখ টাকা, ১০০০ বান্ডিল ঢেউটিন সহ ও আনুপাতিক হারে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নে ওএমএস চালের অনুমোদন চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com