আগরতলা ঐতিহাসিক দৃষ্টিনন্দন রাজবাড়ী
![](https://i0.wp.com/www.patakuri.com/wp-content/uploads/2023/06/Agartala-is-a-historical-palace.jpg?fit=800%2C450&ssl=1)
পিন্টু দেবনাথ, আগরতলা ( ভারত) থেকে ফিরে॥ সুগন্ধি আগর গাছের নাম থেকেই ত্রিপুরা আগরতলা নামকরণ করা হয়। ত্রিপুরা আগরতলা ঐতিহ্য ঘেরা একটি শহর। প্রাচীন রাজাদের আদি নিবাস। এই ত্রিপুরা শহরজুড়েই রয়েছে রাজাদের বিভিন্ন নিদর্শন।
১৯৪৭ সালে ভারতের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ত্রিপুরা শাসন করেছিলেন মানিক্য রাজবংশ। প্রায় আড়াই হাজার বছর ধরে এই রাজবংশের ১৮৬ জন রাজা ত্রিপুরা শাসন করেন ।
আগরতলা প্রাণকেন্দ্রে ২০ একর জমির ওপর অবস্থিত রাজবাড়ি প্রাসাদ। যা উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রাসাদ।
জানা গেছে ১৯০১ সালে দিকে তৎকালীন রাজা রাধা কিশোর মানিক্য এই বাড়িটি তৈরে করেন। রাজ প্রাসাদটি খুব পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন। রাজবাড়ি নিচে আর উপরে রয়েছে সুন্দর পরিপাটি সাজানো জাদুঘর। জাদুঘরটিতে আছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যগুলো প্রত্নতত্ত্ব, চারুশিল্পের অনেক নির্দশন।
জাদুঘরের প্রত্নতত্ত্ব বস্তর পাশে লেখা আছে ত্রিপুরা জাতির নিজস্ব ভাষা ককবরক, বাংলা ও ইংরেজি বিবরণ। একই সাথে বিভিন্ন গ্যালারিতে সাজানো রয়েছে দেবদেবীর মূর্তি, মৃৎশিল্প, পোড়া মাটি ও ব্রোঞ্জ নির্মিত মূর্তি। সোনা-রুপা ও তামার মুদ্রাসহ তৈলচিত্র, বস্ত্র, অলঙ্কারও আছে। আদিম যুগের বেশ কিছু শিলালিপি ও সাজানো আছে সাথে বিভিন্ন মানচিত্রও। আছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সংস্কৃতির অংশ বিশেষ।
আর সবচেয়ে আকর্ষীণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গ্যালারিতে। এই গ্যালারিতে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে থেকে আসা শরর্ণাথীদের বিভিন্ন দূর্লভ ছবি। আছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সকল সদস্যবৃন্দ।
ছবিগুলোতে ফুটে উঠছে শরর্ণাথীদের দুর্দশার চিত্র। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অপারেশনসহ যুদ্ধের সময় বিভিন্ন পত্রিকাতে প্রকাশিত সংবাদ, ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি সাজানো রয়েছে গ্যালারিতে; যা নিজ চোখে না দেখলে বুঝানো যাবে না।
পুরো রাজবাড়ি ঘুরে সাথে জাদুঘরে বিভিন্ন জিনিস দেখে ভারতের বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে সহজেই জানা যাবে। রাজবাড়িতে প্রবেশ মূল্য ভারতীয়দের জন্য ৪০ রুপি বিদেশি পর্যটকদের জন্য ২৫০ রুপি দিতে হয়।
রাজবাড়ির বাহিরে যত ছবি বা ভিডিও করা যাবে। কিন্তু ভিতরে ছবি তোলা একদম নিষেধ। রাজবাড়ী দেখতে আসেন দেশী বিদেশী পর্যটকরা। সার্বক্ষনিক দর্শনার্থীদের আনাগোনায় মুখরিত থাকে। তাই সময় পেলে যে কেউ বেড়াতে পারেন।
মন্তব্য করুন