ইটভাটার মাটি সড়কে, ঘটছে দুর্ঘটনা
![](https://i0.wp.com/www.patakuri.com/wp-content/uploads/2024/02/365507.jpeg?fit=800%2C445&ssl=1)
এস আর অনি চৌধুরী॥ মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা এই ৭ উপজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার জেলা।
এই ৭ উপজেলার বিভিন্ন সড়কপথ এখন বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কে ইটভাটাসহ বিভিন্নকাজে ব্যবহৃত মাটি রাস্তায় স্তুপাকারে পড়ে থাকায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খোলা যানবাহনে বহনের কারণে রাস্তার ওপর মাটি পড়ে থাকছে। এতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
জানা গেছে, জেলায় ৫৫টি ভাটা রয়েছে। এরমধ্যে সংখ্যায় বেশি রয়েছে মৌলভীবাজার সদর, কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলায়। নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কুলাউড়া-মৌলভীবাজার, কুলাউড়া-বড়লেখা, ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর ও রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে টানা হচ্ছে ইটভাটার মাটি। এসব রুটে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। শুকনো মৌসুমে এসব রুটে এই মাটি তেমন বিপদজনক না হলেও শীত মৌসুমে ভারি কুয়াশা ও বৃষ্টির পানিতে সড়কের ওপর পড়ে থাকা ওই মাটিগুলো কাঁদা হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়। এতে করে এই সব সড়কের চলাচল করা মোটরসাইকেল, বড় বড় ট্রাকসহ সকল প্রকারের যানবাহনের চাকা পিছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা কবলে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রধান সড়কপথ দিয়ে ভাটাগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয় মাটি। মাটি বহনের জন্য ইঞ্জিনচালিত যান ট্রলি, ট্রাক্টর ও ট্রাক ব্যবহার করা হয়। এসব খোলা যানবাহনে মাটি বহনের কারণে রাস্তার ওপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকছে মাটি, যা পরে আর ভাটা মালিকপক্ষ সরিয়ে নিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করছে না। ওই মাটি রাস্তায় পড়ে থাকায় রাস্তা চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
কয়েকদিন আগে রাত ১০টার দিকে মৌলভীবাজার থেকে মোটরসাইকেলে করে কুলাউড়ায় ফিরছিলেন সাগর হোসেন। পথে লুয়াইউনি এলাকায় পৌঁছালে কুয়াশায় পিচ্ছিল সড়কে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান। এতে তিনি হাত ও পায়ে সামান্য আঘাত পান।
তিনি জানান, এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ছোট-বড় যানবাহন ও মোটরসাইকেল আরোহীরা মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হন এবং দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
মনির মিয়া নামে এক বাসচালক জানান, মাটিগুলো রাস্তায় পড়ে থাকে, সরানো হয়না। মাটি রাস্তার ওপর শুকিয়ে যায়। গাড়ি যখন চলে তখন ঘট ঘট ঘট ঘট শব্দ হয়। কিন্তু সামান্য একটু বৃষ্টি হলে বড় সমস্যা দেখা দেয়। তখন বড় ধরনের দুর্ঘটনার ভয় থাকে। এ অবস্থায় খুবই সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়।
মৗলভীবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার হামিদ বলেন, সড়ক কাদামুক্ত রাখার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) চিঠি দেওয়া হবে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, বিষয়টি মাত্র জানলাম। যদি কেউ অপরিকল্পিতভাবে মাটি পরিবহনের সময় সড়কের ওপর মাটি ফেলেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন