কাকিয়াছড়া চা বাগানে চা শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি, সুপেয় পানির পেয়ে কষ্ট কেটেছে

February 26, 2024,

চৌধুরী ভাস্কর হোম॥ দেশে চা-বাগান গোড়াপত্তনের ইতিহাস দেড় শতাধিক বছরের। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত জনগোষ্ঠী প্রায় পাঁচ লাখ। এই জনগোষ্ঠী এখনো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ নানা সংকটের বৃত্তে আটকে থাকলেও আগের চেয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো নিরাপদ পানীয় জল, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারের মতো বিষয়ে তাঁরা অনেক পিছিয়ে। এখনো চা-জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ মানুষকে প্রতিদিনের চাহিদা পূরণে কুয়া ও ছড়ার (খাল) পানির ওপরই বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নিরাপদ পানি পান, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবহার এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসচেতনতা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব যেমন আছে, তেমনি নিরাপদ পানি ও শৌচাগারের অপর্যাপ্ততাও রয়েছে।
কাজের স্থানেও নারী শ্রমিকেরা পানির সংকটে ভোগেন। চা-বাগানে নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি (প্রায় ৫৫ শতাংশ)। সেখানে প্রচুর পানির চাহিদা থাকে। কাঁধে করে কলসিতে পানি এনে শ্রমিকদের সরবরাহের জন্য বিভিন্ন বাগানে কর্তৃপক্ষ লোক রেখেছেন। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। তীব্র দাবদাহে সেই সংকট আরও বেড়ে যায়। চা-জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ মানুষকে প্রতিদিনের পানির চাহিদা পূরণে কুয়া ও ছড়ার (খাল) পানির ওপরই বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে। এমন চিত্র প্রতিটি চা বাগানেই। সেই চিত্র দেখেই শ্রীমঙ্গলের চা শ্রমিকদের পাশে দাড়িয়েছে আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।
এখন থেকে শ্রীমঙ্গল কাকিয়াছড়া চা বাগানের শ্রমিকদের আর পানির জন্য হাহাকার করতে হবে না। গভীর নলকূপ স্থাপনসহ পানি সংরক্ষণে আড়াই হাজার লিটারের একটি ট্যাংকের ব্যবস্থা করে দিয়েছে আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট । সেখান থেকে আশপাশের প্রায় ৩০ টি পরিবারের পানির সমস্যা মিটবে। এছাড়া এখান থেকে সুপেয় পানি পান করতে পারবেন চা বাগানে বেড়াতে আসা দেশ-বিদেশের পর্যটকরা।
সোমবার ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে শ্রীমঙ্গল কাকিয়াছড়া চা বাগানে প্রধান অতিথি হয়ে গভীর নলকূপটি উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়। এ সময় এস এস জি জলধারা প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ আল আমিন রাজিব, এস এস জি জলধারা সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক মুহাম্মাদ হাছানুজ্জামান চৌধুরী এবং কাকিয়াছড়া চা বাগানের জেনারেল ম্যানাজার সৈয়দ সালাউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নলকূপ পেয়ে চা শ্রমিক কবিতা হাজড়া বলেন, তাঁদের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িতে সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে কুয়া ও ছড়ার (খাল) পানি ওপরই বেশি নির্ভর থাকতে হত। ময়লা পানিই ভরসা ছিল। এখন নলকূপ পেয়ে তাঁরা খুবই খুশি।
এস এস জি জলধারা প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ আল আমিন রাজিব জানান, চা বাগানে শ্রমিক হিসাবে যারা কাজ করেন তাদেও জীবন মান খুব কঠিন। তাদের জীবন মান উন্নয়নে তাদের মাঝে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে দেশের ৬৪টি জেলায় সুপেয় পানির জন্য ১০৩টি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com