কুলাউড়ায় পালাক্রমে গৃহবধুকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, এক লাখটাকা চাঁদা দাবি, আটক-১

স্টাফ রিপোর্টার॥ কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে কথিত সালিশের নামে গভীর রাতে গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণ অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সাথে জড়িত ধর্ষকরা ধর্ষণের ঘটনাটি মোবাইলে রেকর্ড করে এবং ছবি তুলে রাখে দুষ্কৃতিকারীরা। ঘটনাটি কাউকে জানালে স্বামী সন্তানকে হত্যার হুমকি দেয়। পাশাপশি নগ্ন ভিডিও এবং ছবি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় ১৯ নভেম্বর রবিবার মামলার অভিযুক্ত শাকিব মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে জয়চন্ডী ইউনিয়নের কুতুব আলীর ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ নভেম্বর রোববার রাত আনুমানিক ১টায়। পরদিন ওই গৃহবধু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওই গৃহবধু কুলাউড়া থানায় এসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নো গ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ১২ নভেম্বর মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের একসপ্তাহ পর পুলিশ শাকিব মিয়া (২২)কে গ্রেফতার করলেও অন্যান্য আসামীরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী হওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধুর থানায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গৃহবধুর স্বামীর বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদ নগর থানায়। তিনি শ্বশুর বাড়িতে এসে শহরে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে ভুলক্রমে অন্য বাসায় ঢুকে পড়েন। বাসার মালিক জয়চন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলিম উদ্দিন বিষয়টি নিষ্পত্তির নামে গৃহবধুর স্বামীকে নিয়ে (গৃহবধুর বাবার) বাড়িতে যান। সেখানে সালিশের নামে সময় ক্ষেপন করে রাত আনুমানিক একটায় আসামীরা গৃহবধুকে তার স্বামী খারাপ লোক তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।
এক পর্যায়ে কাদিপুর ইউনিয়নের পূর্ব মনসুর গ্রামের ছিদ্দেক আলীর ছেলে সুন্দর আলী (৩২), স্থানীয় লৈয়ার হাই গ্রামের কুতুব আলীর ছেলে শাকিব মিয়া (২২) ও রায় গ্রামের কানাইলাল ঘোষের ছেলে রনধীর ঘোষ (৪০)গৃহবধুকে জোর পূর্বক বাথরুমে নিয়ে ওড়না ও জামা দিয়ে হাত-মুখ বেঁধে সম্পুর্ন বিবস্ত্র করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ এবং স্থিরচিত্র তৈরী করে। এদিকে গৃহবধুর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রণধীর ঘোষ গৃহবধুকে ছেড়ে দেয় এবং ধর্ষণকারী এই ঘটনা কাউকে জানালে তার স্বামী সন্তানকে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
ধর্ষণকারীরা ঘটনার পরদিন গৃহবধুর বাড়িতে গিয়ে ভিডিও এবং স্থিরচিত্র দেখিয়ে এক লক্ষটাকা দাবি করে। গৃহবধুর মান সম্মানের ভয়ে নগদ ৪০ হাজার টাকা এবং দুটি চেক প্রদান করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনার সাথে জড়িতরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হওয়ায় গৃহবধু মামলা করতে সাহস পাননি। কিন্তু ঘটনা জানাজানি হলে রহস্যময় কারণে স্থানীয় মেম্বারকে বাদ দিয়ে মামলা নেয় কুলাউড়া থানা।
এ ব্যাপারে জয়চন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলিম উদ্দিন জানান, আমি ধর্ষণের ঘটনা কিছুই জানিনা। তারাও আমাকে কিছু বলেনি। পরের দিন টাকা নিয়েছে শুনেছি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুছ ছালেক জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শাকিব মিয়া (২২) কে ১৯ নভেম্বর রোববার গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা চলছে।
মন্তব্য করুন