কুলাউড়ায় ১৫ পরিবারের রাস্তায় চলাচলে বাঁধা

August 20, 2023,

মাহফুজ শাকিল॥ কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নের মাদানগর গ্রামে ১৫টি পরিবারের রাস্তায় চলাচলে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার ১১ ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় বুধবার ৯ আগস্ট প্রতিকার চেয়ে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন শেখ ইবাদুর রহমান আব্দুল্লাহ।

এছাড়া একই অভিযোগ দেয়া হয়েছে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজীপুর ইউনিয়নের মাদানগর গ্রামে উপরিভাগ মৌজার জেএলনং- ১১০, এসএ ২৭৬ ও ২৭৭ দাগের ভূমির রাস্তায় এলাকার ১৫টি পরিবার প্রায় শত বছর ধরে যাতায়াত করে আসছেন।

ওই ১৫টি পরিবারের মধ্যে শেখ আহমদ আলীর ছেলে শেখ এবাদুর রহমান, মুমিতুর রহমান, আব্দুল হাসিব, মোস্তাফিজুর রহমান, আসাদুর রহমান, শেখ এবাদুর রহমানের ছেলে শেখ মাহবুবুর রহমান, প্রতিবেশি আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল সালামের বসতভিটার পূর্ব দিকে বের হওয়ার একমাত্র মাধ্যম হলো রাস্তাটি।

এলাকার লোকজন রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গেলে বাঁধা প্রদান করেন এলাকার বাসিন্দা মৃত মোশারফ আলীর ছেলে মোস্তাক আহমদ।

গ্রামবাসী তার বাঁধা দেওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই রাস্তার জায়গা তাঁর মালিকানা সম্পত্তি ওই রাস্তা দিয়ে আর কেউ চলাচল করতে পারবেনা।

ওই রাস্তা দিয়ে গ্রামের ১৫টি পরিবারের পূর্ব পুরুষরা চলাচল করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এখনকার প্রজন্ম চলাচল করছে। রাস্তা দিয়ে চলাচল আর কোন বাঁধা না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় স্থানীয় বিচারে। রায় অমান্য করে মোস্তাক আহমদ চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করেই আসছেন।

বাঁধা প্রদানের অন্য সহযোগীরা হলেন সাইফুল ইসলাম, জামাল মিয়া, আব্দুস সহিদ, আব্দুল মালিক, গুলজার মিয়া, হারুন মিয়া, আব্দুল গফুর, ইয়াছিন আলী, রফিক মিয়া, শাহীন মিয়া। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি মেরামত করতে গেলে এলাকার বাসিন্দা শেখ তজমুল আলীকে কুদাল দিয়ে পিটে আঘাত করে আহত করে।

অভিযোগকারী শেখ এবাদুর রহমান বলেন, প্রায় শত বছর আগ থেকে পূর্বপুরুষরা এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন এখন আমরা রাস্তায় চলাচল করছি। কিন্তু চলাচলে ও রাস্তা মেরামত করতে বাঁধা দিচ্ছেন প্রতিবেশী মোস্তাক গং। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সুন্দর একটি সমাধান চাই।

অভিযোগের বিষয়ে মোস্তাক আহমদ বলেন, মৌরসী সূত্রে রাস্তাটি আমার রেকর্ডীয় ভূমিতে পড়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষরা প্রায়শই রাস্তাটি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। আমি রাস্তা মেরামতে কোন বাঁধা দেইনি।

উল্টো তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি গত ১৯ জুলাই প্রতিপক্ষের শেখ এবাদুর রহমানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামান হেলাল বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে এলাকার লোকজনসহ বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত হয়েছিল চলাচলের জন্য ৭ ফুট রাস্তা থাকবে।

কিন্তু এখন রাস্তা নিয়ে কয়েকদিন পর উভয়পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হন। দু’পক্ষকে নিয়ে আপোষ মীমাংসায় বসতে চাইলে মোস্তাক গং সমাধানে রাজি নন।

হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বক্স বলেন, রাস্তার সীমানা নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এই রাস্তা নিয়ে অনেক মারামারি হয়েছে। এখন যদি উভয়পক্ষ সম্মত হয় তাহলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমরা সুন্দর একটি সমাধান করে দিবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, রাস্তার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com