কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড, সেনেগালের বিদায়
বিশেষ প্রতিনিধি॥ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ইংলিশরা রীতিমতো নাজেহাল। কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ম্যাচের আগে সে কথা স্বীকারও করে নিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন ঘরে থাকা লাখো মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চান। আজ অন্তত কথা রেখেছেন তিনি, কথা রেখেছে তার দল। দাপুটে পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছে মাঠে, সেনেগালকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে, তাতেই দলটি টানা দ্বিতীয় বারের মতো পৌঁছে গেছে বিশ্বকাপের শেষ আটে।
ইংল্যান্ড এমন দাপট নিয়ে পা রাখবে বিশ্বকাপের শেষ আটে, আজ আল বাইত স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুটা অন্তত তেমন বলেনি। থ্রি লায়ন্সরা যখন প্রথম গোলের অপেক্ষায়, তখনই নিজেদের সেরা সুযোগগুলো তৈরি করেছে প্রতিপক্ষ সেনেগাল। বিশ্বকাপে নিজেদের শুরুর ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে নাড়িয়ে দেওয়া সেনেগাল এদিনও প্রথম বড় সুযোগটা পেয়েছে।
গোলমুখে ইসমাইলা সার গোলের বড় সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। এরপর বুলায়ে দিয়ার দারুণ এক শট কোনোক্রমে ঠেকিয়ে ইংলিশদের রক্ষা করেছেন জর্ডান পিকফোর্ড। সেই সব সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার মাসুল সেনেগাল দিয়েছে ম্যাচের ৩৮ মিনিটে। জুড বেলিংহ্যামের বাড়ানো বল পেয়ে বাঁ পাশ দিয়ে আক্রমণে ওঠেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন; করেন ক্রস। বক্সের ভেতর থাকা জর্ডান হেন্ডারসন গোলটা করতে ভুল করেননি মোটেও।
সেই গোলেই ম্যাচের লাগামটা হাতছাড়া হয়ে যায় সেনেগালের, ইংল্যান্ড চলে আসে চালকের আসনে। সেই গোলটা হয়তো সেনেগালের মনোবলটাই ভেঙে দিয়েছিল। তার ছাপ পড়েছে ম্যাচের বাকি অংশে। সেই গোলের পর থেকে যে রীতিমতো ‘একমুখী চলাচল’র দেখাই মিলেছে ম্যাচটিতে! প্রথমার্ধের বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগে হ্যারি কেইন ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফিল ফোডেনের স্কয়ার থেকে।
প্রথম গোলের কারিগর বেলিংহ্যাম এই গোলেও রেখেছেন বড় ভূমিকা। মাঝমাঠে গোটা দুই চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে বলটা বাড়ান ফোডেনকে। তার স্কয়ার করা বলটাই জালে জড়িয়ে স্কোরলাইনটা ২-০ করে বসেন কেইন। হারানো মোমেন্টামটা ফেরাতে সেনেগাল কোচ আলিউ সিসে বিরতির পর পরিবর্তন আনেন তিনটি। তবে তাতে লাভ হয়নি। ম্যাচের লাগামটা আর হাত ফসকে বেরিয়ে যেতে দেয়নি ইংল্যান্ড। দূরপাল্লার শটে ইংলিশ অধিনায়ক কেইন দূরপাল্লার শটে বারদুয়েক পরীক্ষা নিয়েছেন গোলরক্ষক এদুয়ার্দ মেন্দির।
দ্বিতীয়ার্ধের ১২তম মিনিটে সেনেগালের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠোকেন বুকায়ো সাকা। বাঁ প্রান্ত থেকে ফোডেনের বাড়ানো বল ছয় গজের বক্সে পেয়ে যায় আর্সেনাল ফরোয়ার্ডকে। গোলরক্ষককে চিপ করে বলটা জালে জড়ান সাকা। স্কোরলাইনটা ৩-০ হওয়ার পরই নিশ্চিত হয়ে যায়, এই ম্যাচে আর হারছে না ইংল্যান্ড। হারলে সেটা রীতিমতো অভাবনীয় কিছুই হয়ে যেত, তবে সেটা সেনেগাল করে দেখাতে পারেনি। তাতে সাউথগেটের দল পৌঁছে যায় শেষ আটে।
কোয়ার্টার ফাইনালে হ্যারি কেইনরা খেলবেন ফ্রান্সের বিপক্ষে। কিলিয়ান এমবাপের ফ্রান্সও অনেকটা একই ঢঙে বিদায় করেছে পোল্যান্ডকে। আগামী শনিবার এই আল বাইত স্টেডিয়ামেই সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ে মাঠে নামবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স আর গেল ইউরোর ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড। সেই লড়াইয়ে কেইনরা উতরে গেলে ইংলিশদের মুখের হাসিটা আরও চওড়া হবে বৈকি!
মন্তব্য করুন