নানা সমস্যায় জর্জরিত কুলাউড়ার ঐতিহ্যবাহী ছকাপন রেলস্টেশন

May 24, 2016,

এম. মছব্বির আলী॥ সিলেট-আখাউড়া রেলরুটের ঐতিহ্যবাহী কুলাউড়ার ছকাপন রেলস্টেশনটি এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। নির্মাণের ৪০ বছরেও এ ষ্টেশনে লাগেনি কোন উন্নয়নের ছোঁয়া। স্টেশনটিতে নেই বিদ্যুৎ ও টেলিফোন সংযোগ। নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ ষ্টেশনের উন্নয়ন ও বিদ্যুতায়নের দাবিতে এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী ও রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
এলাকাবাসীর লিখিত আবেদন থেকে জানা যায়, ছকাপন রেলওয়ে স্টেশনটি আনুমানিক ১৯৭৫-৭৬ সালে স্থাপিত হয়। স্টেশনটি স্থাপনের ৪০ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি স্টেশনটিতে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, জনগুরুত্ত্বপূর্ণ এই পাবলিকস্থানে নেই কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ। স্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় রাতের লোকাল ট্রেনগুলো অনেকসময় অন্ধকারের কারণে স্টেশনে না থেমে রেলক্রসিং অতিক্রম করে চলে যায়। পরে ট্রেন চালক ট্রেনটি আবার স্টেশনে ফিরিয়ে এনে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে যান। পুরো স্টেশন এলাকাটি অন্ধকারের কারণে ট্রেন থেকে যাত্রীরা ঠিকমতো উঠানামা করতে পারে না।
স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষার্থী সৈয়দ আব্দুল হামিদ মাহফুজ, ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান মিন্টু, কামিল আহমদ, নজরুল ইসলাম জানান, ছকাপন রেলস্টেশনটি কাদিপুর ও ভুকশিমইল ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত হওয়ার কারণে উভয় এলাকার জনসাধারণ এই স্টেশন ব্যবহার করেন। এছাড়া এলাকার কলেজ পড়–য়া সকল ছাত্রছাত্রী স্টেশনটি ব্যবহার করে খুব সহজেই কুলাউড়া ও সিলেটে যাতায়াত করতে পারে। এছাড়া স্টেশনটিতে কোনো অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। স্টেশন ভবন নেই। প্লাটফর্ম না থাকার কারণে যাত্রীরা ট্রেন থেকে উঠানামা করার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন। তাছাড়া স্টেশনে কোনো টেলিফোন সংযোগ না থাকার কারণে যাত্রীরা ট্রেনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারেন না। স্টেশনের ভেতর যাত্রীদের ট্রেনের অপেক্ষা করার জন্য নেই কোনো বিশ্রামাগার। শৌচাগারেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। স্টেশন থেকে ছকাপন বাজার পর্যন্ত নেই কোনো সংযোগ সড়ক। স্টেশন এলাকায় স্টেশনমাস্টারের থাকার জন্য নেই কোনো ভালো কোয়ার্টার। রয়েছে জনবল সঙ্কট। ফলে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন।
এই স্টেশনটি বর্তমানে ডি গ্রেডের। সব লোকাল ট্রেন এখানে নিয়মিত থামায়। আখাউড়া সিলেট রুটে সবক’টি স্টেশনে কমিউটার ডেমো ট্রেন থামলেও ছকাপন রেলস্টেশনে ট্রেনটির কোন যাত্রা বিরতি নেই। এনিয়ে স্টেশন দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা খুব হতাশ। এখানে ডেমো ট্রেন থামলে যাত্রীদের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা খুব উপকৃত হবে।
স্টেশনটি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের অভাবে বর্তমানে হুমকির সম্মুখীন। যাত্রীরা পর্যাপ্তসেবা না পাওয়ার কারণে আস্তে আস্তে স্টেশন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com