বড়লেখায় এসএসসিতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মাহফুজের সাফল্য
![](https://i0.wp.com/www.patakuri.com/wp-content/uploads/2024/05/ww-1.jpg?fit=800%2C445&ssl=1)
আব্দুর রব॥ বড়লেখা উপজেলার গাংকুল গ্রামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সৈয়দ মাহফুজ আলী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.৮২ পেয়ে পাশ করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। সে গাংকুল পঞ্চগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্লে শ্রেণি থেকেই পড়াশুনা করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। জন্মগতভাবে মাহফুজ হাবাগোবা টাইপের, কম স্মৃতি শক্তি সম্পন্ন ও কথাবার্তা অস্পষ্ট হওয়ায় তার পড়াশুনা নিয়ে বাবা সরকারি কর্মকর্তা সৈয়দ মুহিত আলী ও মা শামছুন নাহার ইয়াছমিনের চিন্তার শেষ ছিল না। এসএসসি পরীক্ষার কিছুদিন আগে মায়ের মৃত্যুতে সে আরো অস্বাভাবিক হয়ে উঠে। একমাত্র পুত্রের আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাবা ও স্কুলের শিক্ষকরা। অবশেষে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল করায় তার বাবা ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।
গাংকুল পঞ্চগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ হায়দার জানান, প্লে শ্রেণি থেকেই মাহফুজ তার স্কুলের ছাত্র। তার মধ্যে কোনো বোধশক্তি ও স্মৃতি শক্তি নেই বললেই চলে। ক্লাসে যে স্যার পড়াচ্ছেন তাও বুঝতে পারতো না। সে কিছুই বুঝতো না। তিনি ও অন্য শিক্ষকরা অত্যন্ত যতœ সহকারে তাকে কিছু শেখানোর চেষ্টা করতেন। মাহফুজ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নিশ্চিত হওয়ার পর সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে একটি প্রতিবন্ধী সনদ সংগ্রহ করে শিক্ষাবোর্ড থেকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর কোটায় তাকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছেন। অটিজমের উপর তার (প্রধান শিক্ষক) প্রশিক্ষণ ছিল। আর এই প্রশিক্ষণলব্দ অভিজ্ঞতার আলোকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সৈয়দ মাহফুজ আলীকে তিনি পাঠদান করেছেন। প্রধান শিক্ষক আশরাফ হায়দার আরো জানান, যে কোন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারলে তাকে দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ানো কঠিন কোনো কাজ নয়। শিক্ষাবোর্ড প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের ব্যাপারে সৈয়দ মাহফুজ আলীর কাছে জানতে চাইলে, সে কোনো উত্তর না দিয়ে শুধু হাসতে থাকে।
মন্তব্য করুন