বাজেট সম্পর্কে জানার বিষয় : জাতীয় বাজেটে ঘাটতি কি এবং কেনো ?

রজত গোস্বামী॥ এক: মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট সংসদে প্রস্তাব করেছেন। এবারের বাজেটের আকার জিডিপি’র ১৫.২ শতাংশ। বাজেটের মোট আকারের ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে রাজস্ব বা অনুন্নয়ন খাতে এবং অবশিষ্ট ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে উন্নয়ন খাতে। উপরোক্ত সংখ্যা গুলো হলো ব্যয়ের প্রস্তাব। এবং এই ব্যয়ের বিশ্লেষণ, খাত ওয়ারী ভাবে বাজেটে দেয়া আছে।
অন্যদিকে, বাজেটে আয়ের লক্ষমাত্রা দেখানো হয়েছে ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক বিভিন্ন কর ও শুল্ক থেকে সংগ্রহ করা মোট আয়ের পরিমান ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বহির্ভূত কর থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর, কর ব্যতীত বিভিন্ন খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
ফলে, বাজেটে মোট ঘাটতি হবে (আয় ব্যয়ের পার্থক্য) ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এই পরিমান ঘাটতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫.৫ শতাংশ।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাজেটের এই ঘাটতি পূরণ করা হবে অভ্যন্তরীন ঋণ ও বৈদেশিক ঋণ এবং অনুদান প্রাপ্তি থেকে। বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, বৈদেশিক অনুদান ও ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা, এবং অভ্যন্তরীন উৎস থেকে পাওয়া যাবে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এই অভ্যন্তরীন উৎসে, ব্যাংক খাত থেকে নেয়া হবে ১ লক্ষ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ৪০ হাজার ১ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে সঞ্চয়পত্র ইত্যাদি বিক্রয়ের মাধ্যমে। পাঠক, আমার প্রবন্ধে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের পরিসংখ্যানকে উদাহড়ন হিসাবে ব্যবহার করবো।
দুই: বাংলাদেশে যখন প্রতি জুন মাসে মাননীয় অর্থমন্ত্রী নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করেন, তখন দেখা যায় বাজেটে ঘাটতি রাখা হয়। বাজেটের এই ঘাটতি কিভাবে মোকাবেলা করা হবে, মাননীয় অর্থমন্ত্রী সে পরিকল্পনার কথাও জানিয়ে রাখেন। যেমন সদ্য প্রস্তাবিত বাজেটেও জানানো হয়েছে, যা উপরে আলোচনা করা হয়েছে। মাননীয় অর্থমন্ত্রী বাজেট ঘাটতি পূরনের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থার সাথে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার কথাও জানিয়ে রাখেন। এটাই বাংলাদেশে প্রচলিত আছে।
জেনে রাখা ভালো, জাতীয় বাজেটের ক্ষেত্রে, তিন রকমের বাজেট হতে পারে। (এক) ভারসাম্য বাজেট- যেখানে সরকারের সম্ভাব্য ব্যয়ের অঙ্ক, এবং আয়ের অঙ্ক পরস্পর সমান হয়। (দুই) উদ্বৃত্ত বাজেট- যেখানে সরকারের সম্ভাব্য ব্যয়ের অঙ্ক অপেক্ষা আয়ের অঙ্ক বড় হয় এবং (তিন) ঘাটতি বাজেট- যেখানে সরকারের সম্ভাব্য ব্যয়ের অঙ্ক অপেক্ষা আয়ের অঙ্ক ছোট হয়। বাংলাদেশে জাতীয় বাজেটে ঘাটতি রাখা এবারের বাজেটেও ব্যতিক্রম হয়নি। সাধারন একটা প্রত্যাশা থাকে, বাংলাদেশ যখন অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন, জাতীয় বাজেটে উদ্বৃত্ত না থাক, অন্ততঃ ভারসাম্য তো থাকা উচিত।
প্রতি বছর জাতীয় বাজেট সংসদে উত্থাপনের পর, বাজেট নিয়ে আমাদের জাতীয় সংসদের বাহিরে, দেশে দুই রকমের আলোচনা চলে। প্রথমতঃ রাজনৈতিক আলোচনা। সরকার-বিরোধী ডান-বাম কোন রাজনৈতিক দলই বাজেটে ভালো কিছু খুঁজে পান না। তাদের আলোচনায় জাতীয় বাজেট মানেই রাজনৈতিক সমালোচনার একটা ইস্যু। ভালো কোনকিছু নেই বলে ঢালাও সমালোচনা করা হয়। এরমধ্যে, তাদের তীব্র সমালোচনায় বাজেটে ঘাটতি রাখার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব বা প্রাধান্য পায়।
দ্বিতীয়ত: সাধারন আলোচনা। দেশের সচেতন সাধারন মানুষ সহ বুদ্ধিজীবিগন এ আলোচনায় যুক্ত হন। তারা অবশ্য প্রস্তাবিত বাজেটের ভালো-মন্দ উভয় দিকই আলোচনা করেন। তাদের কেউ কেউ নিজের সচেতনতায় হোক বা অসচেতনতায়ই হোক, বাজেটের ঘাটতি থাকা প্রসঙ্গে উদ্বেগ বা নানা আশঙ্খার কথা তুলে ধরেন।
তিন: সার্বিকভাবে বলতে গেলে, বাজেট দুই প্রকারের। (এক) ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক বাজেট (বেসরকারি) এবং (দুই) জাতীয় বাজেট (সরকারি)। এ দুই ধারনের বাজেটের প্রধান পার্থক্য আবার দুইটি। ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক বাজেটে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয় অনুযায়ী ব্যয় নির্ধারন করা হয়। তাই, ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক বাজেটে কোন ঘাটতি প্রদর্শিত হয় না। কারন ইচ্ছা করলেই তারা তাদের আয় বাড়াতে পারেন না। তারা ভারসাম্য বাজেট অথবা উদ্বৃত্ত বাজেট তৈরী করেন। চরিত্রগতভাবে জাতীয় বাজেট আবার এর উল্টো। জাতীয় বাজেটে সরকারের ব্যয়ের সম্ভাব্য খাত সমূহ আগে নির্ধারণ করা হয় এবং সেই ব্যয় মেটাতে কোন কোন খাত থেকে কি পরিমান অর্থ পাওয়া যাবে (আয় হবে) তা নির্ধারন করা হয়। ফলে, বাজেটে বাড়তি ব্যয় সংস্থানের জন্য তারা কিছু কিছু দ্রব্যের বিদ্যমান কর ও শুল্কের হার বাড়িয়ে দেন এবং নতুন করের উৎস সন্ধান করেন। এরপরও কর ও শুল্কের বোঝা জনগনের উপর যাতে অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য, প্রস্তাবিত ব্যয়ের অঙ্ক ঠিক রেখে বাজেটে অর্থের ঘাটতি প্রদর্শন করেন। আগেও বলেছি, জাতীয় বাজেটের এই ঘাটতি ঋণ, অনুদান ইত্যাদির মাধ্যমে পূরণ করার কথা বলা হয়।
দ্বিতীয় পার্থক্য হচ্ছে, ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক বাজেট ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একটি গোপনীয় দলিল। এটা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয় না। কিন্ত, জাতীয় বাজেট হচ্ছে একটি উন্মুক্ত দলিল। তাই জাতীয় সংসদে দেশবাসীর সামনে জাতীয় বাজেট পেশ করা হয় যাতে জনগণ তাদের প্রদত্ত করের টাকা সরকার কিভাবে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য ব্যয় করতে চায়, সে সম্পর্কে অবহিত হতে পারে।
চার: এবার আসি জাতীয় বাজেটের ঘাটতি প্রসঙ্গে। জাতীয় বাজেটের দুইটি অংশ থাকে। প্রথম অংশকে বলা হয় রাজস্ব বাজেট বা অনুন্নয়ন বাজেট এবং দ্বিতীয় অংশকে বলা হয় উন্নয়ন বাজেট। বিগত শতাব্দীর নব্বুইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশের রাজস্ব বা অনুন্নয়ন বাজেটে কোন ঘাটতি থাকে না, বরং উদ্বৃত্ত থাকে। রাজস্ব বা অনুন্নয়ন বাজেটের উদ্বৃত্ত টাকা, উন্নয়ন বাজেটে স্থানান্তর করা হয়। বাংলাদেশের ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন বাজেটের ১ হাজার ২ কোটি টাকা আসবে রাজস্ব বা অনুন্নয়ন বাজেটের উদ্বৃত্ত থেকে (বাজেট প্রস্তাবনা পড়ুন)। তাারপরেও, উন্নয়ন বাজেটের ঘাটতি থাকবে (আয় ব্যয়ের পার্থক্য) ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অতএব জাতীয় বাজেটে ঘাটতি বলতে উন্নয়ন বাজেটে ঘাটতি থাকাকে বুঝায়, যা আমরা আলোচনা করছি।
জাতীয় বাজেট তৈরীর সময় আগে বিবেচনা করা হয় আলোচ্য অর্থবছরে কোন কোন বিষয়ে কত টাকা ব্যয় হতে পারে। সার্বিক ব্যয়ের অঙ্ক আগে নির্ধারন করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটে অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন মিলিয়ে ব্যয়ের যে যে খাত নির্ধারিত আছে সে গুলো হলো- ১. শিক্ষা ও প্রযুক্তি, ২. শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা, ৩. বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম, ৪. গৃহায়ন, ৫. জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা, ৬. সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যান, ৭. জনপ্রশাসন, ৮. প্রতিরক্ষা, ৯. কৃষি, ১০. স্বাস্থ্য, ১১. জ্বালানী ও বিদ্যুৎ. ১২ স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, ১৩ পরিবহন ও যোগাযোগ, ১৪. ঋনের দেশীয় ও বৈদেশিক) সুদ ১৫. বিবিধ ব্যয়।
বাজেটে এভাবে ব্যয়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারনের পর, এই ব্যয় সংকুলানে কিভাবে অর্থের সংস্থান করা হবে তা নির্ধারন করা হয়। বাংলাদেশের বাজেটে অর্থ সংস্থানের খাত হলো- ১. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত আয়, যথা- মূল্য সংযোজন কর, আয়কর, আমদানী শুল্ক, সম্পুরক শুল্ক, অন্যান্য শুল্ক। ২. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বহির্ভূত কর, যথা- ভূমি উন্নয়ন কর ইত্যাদি। ৩, কর ব্যাতিত প্রাপ্তি, যথা- বিভিন্ন লাইসেন্স ফি, জরিমানা, বাজেয়াপ্ত করা অর্থ সম্পদ, ষ্ট্যাম্প, কোর্ট ফি, বিদ্যুৎ, ্গ্যাস, টেলিফোন, রেলওয়ে, সরকারি ব্যাংক, বীমা, শিল্প প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি থেকে প্রাপ্ত আয়।
পাঁচ: সরকারকে জাতীয় বাজেটের ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ও অনুদান সংগ্রহ করতে হয়। অভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক ঋণ এবং অনুদান প্রাপ্তির অংশ থেকে বাজেটের ঘাটতি পূরন করা হয়ে থাকে।
বলা বাহুল্য, নির্দিষ্ট মাত্রায় জাতীয় বাজেটে ঘাটতি থাকা উন্নয়নশীল দেশের জন্য কাঙ্খিত একটি অনুষঙ্গ। অর্থনীতিবিদদের মতে উন্নয়নশীল দেশের বাজেটে ঘাটতি দেখানো যেতে পারে, তবে তা জিডিপি’র ৩ শতাংশের বেশী হওয়া উচিত নয়। শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজেটেও ঘাটতি দেখানো হয়।
অভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান কিন্তু শুধুমাত্র বাজেট ঘাটতি পূরনের জন্য সংগ্রহ করা হয় না। এর পিছনেও পরোক্ষ ভাবে দেশের কল্যান নিহিত তাকে। অভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে, স্বল্প আয়ের জনগন যাতে তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কারনে সঞ্চয় করতে পারে, সে সুযোগ প্রদানের জন্য জনগনের সঞ্চয়কে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্প, যেমন- বিভিন্ন প্রকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি, ডাকঘর সঞ্চয়ব্যাংক ইত্যাদির মাধ্যমে সরকার বাজেট ঘাটতি পূরণের জন্য জনগণের নিকট থেকে ঋণ হিসাবে গ্রহন করে। বাংলাদেশের ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এখাত থেকে সরকার মোট ৪০ হাজার ১ কোটি টাকা টাকা সংগ্রহ করবে। এটা সরকারের একটি নৈমিত্তিক কাজ। অন্যদিকে সরকার দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। সামান্য হলেও এর প্রয়োজন অছে। বানিজ্যিক ব্যাংক গুলোতে যখন ঋণযোগ্য তহবিল বেশী হয়ে যায়, তখন অনুৎপাদনশীল খাতে ঋণের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে বাজারে অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। বাজারে অর্থসরবরাহ বেড়ে গেলে, মূদ্রাস্ফীতি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তখন, সাধারন জনগনের ক্রয়ক্ষমতাকে অসহনীয় করে তুলে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে অনুৎপাদনশীল খাতে ঋণ প্রদান নিরুৎসাহীত করতে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ সংগ্রহ করে। তবে বাজেটে বেশী ঘাটতি থাকলে এই ঋণ গ্রহনের পরিমান বেড়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে, সরকারকে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান গ্রহন করতে হয় প্রধানত দুইটি কারনে। প্রথমতঃ আমাদের দেশে একটি বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয় বিদেশ থেকে ভোগ্যপণ্য ও মূলধনী দ্রব্য আমদানী করার জন্য। আমদানী মূল্য পরিশোধের জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা (যেমন ডলার, পাউন্ড, ইউরো ইত্যাদি)। একটি দেশ ঋণ-অনুদান ছাড়া দুই উপায়ে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে থাকে। এক, রপ্তানী আয় থেকে এবং দুই. বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ থেকে, যা তারা বৈদেশিক মূদ্রায় পাঠায়। কিন্তু এই দুই উৎস থেকে অর্জিত বৈদেশিক মূদ্রা দ্বারা বিশাল আমদানী ব্যয় মেটানো সম্ভব হয় না। ফলে, কেবল মাত্র বাজেটের ঘাটতি পূরনের জন্য নয়, বরং আমদানী ব্যয় ও অন্যান্য বৈদেশিক লেনদেন মেটানোর স্বার্থে বৈদেশিক মূদ্রার সংগ্রহ বাড়াতে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান গ্রহন করতে হয়। বড় অর্থনীতির দেশ গুলোকে ও তা করতে হয়।
ছয় : তাই জাতীয় বাজেটে ঘাটতি রাখার জন্য সরকারের সমালোচনা করা উচিৎ নয়। হ্যাঁ, যদি বাজেটের ঘাটতি জিডিপি’র নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে অধিক হয়, তা হলে বেশ সমস্যা হতে পারে। অর্থাৎ জাতীয় বাজেটে স্বাভাবিক মাত্রায় ঘাটতি থাকা বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের বেলায় ভালো ফল প্রদান করতে পারে। মনে রাখা উচিৎ, প্রতিটি বাজেটে যেমন অভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান গ্রহনের একটি লক্ষমাত্রা দেয়া হয়, ঠিক তেমনি, প্রতিটি বাজেটে পূর্ববর্তী সময়ে গৃহীত অভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক ঋণ, ঋণের সুদ ও অনুদান পরিশোধের অর্থ বরাদ্দও রাখা হয়। অর্থাৎ বর্তমান বাজেটে যেমন নতুন ঋণ গ্রহনের কথা বলা হয়, ঠিক তেমনি, পুরাতন ঋণ ও সুদ পরিশোধের ব্যবস্থা ও রাখা হয়।
অতএব, জাতীয় বাজেটে সহনীয় মাত্রায় ঘাটতি থাকলে, মূদ্রাস্ফীতি রোধে, জনগণের সঞ্চয় প্রবনতা বাড়াতে, বৈদেশিক মূদ্রার প্রয়োজনীয় সংস্থান করতে, সর্বোপরি দেশের উন্নয়ন তরান্বিত করতে সহায়ক হয়।
রজত গোস্বামী, অর্থনীতি বিষয়ের কলেজ শিক্ষক, প্রধান পরীক্ষক (অর্থনীতি) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। (প্রাক্তন সাংবাদিক)
৮৬২, এম সাইফুর রহমান রোড মৌলভীবাজার।, ফোন- ০১৭১২ ৮৫৫৭১১
e-mail- rajatgoswami399@gmail.com
মন্তব্য করুন