বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় অতিষ্ঠ গ্রাহক কমলগঞ্জে ৫ দিন ধরে বিদ্যুৎবিহিন ৬টি গ্রাম
![](https://i0.wp.com/www.patakuri.com/wp-content/uploads/2016/04/973.jpg?fit=800%2C445&ssl=1)
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় এখন চলছে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। কয়েকদিনে বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড়ের পর থেকে কমলগঞ্জে গত ৫দিন ধরে ৬টি গ্রাম বিদ্যুৎবিহিন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার ২২ এপ্রিল দিবাগত সন্ধ্যার পর সৃষ্ট কাল বৈশাখী ঝড়ের পর গাছ গাছালি ভেঙ্গে বিদ্যুৎ লাইনের ক্ষতি হওয়ার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহে এ অবস্থা বিরাজ করছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলা একাংশের ৪৬ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন, ঘন ঘন সেকশন পরিবর্তন, ফিডারে সমস্যা, ঝড়-বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। গত কয়েকদিন ধরে কমলগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিলেও সাম্প্রতিক ঝড়ের কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের অধীনস্থ অধিকাংশ হাটবাজার ও গ্রামে দফায় দফায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।
শুক্রবার রাত আটটায় কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে গাছ গাছালি ভেঙ্গে বিদ্যুৎ লাইনের বেশ ক্ষতি হয়। ঘটনার পর থেকে মেরামত কাজ শেষে কমলগঞ্জ সদরসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে ১২ ঘন্টা পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছিল। তবে সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আট থেকে ১০ দফা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়। দিনে প্রচন্ড খরতাপে এ অবস্থা বিরাজ করলেও সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় ধমকা বাতাস শুরু হলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। প্রতি আধা ঘন্টা পর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবে কোন কাজ করা যায় না। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা, কম্পিউটার ও শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হচ্ছে। শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল মালিক ও সাধারন সম্পাদক এম এ আউয়াল বলেন, বিদূতের আসা যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ফ্রিজিং কোন কিছ্ইু বিক্রি করা যাচ্ছে না। তাছাড়া ফ্রিজে রাখা সামগ্রীও বিনষ্ট হচ্ছে। এ এ টি এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মিহির ধর চৌধুরী বলেন, দিনে খরতাপে বিদ্যুতের আসা যাওয়ায় স্কুলে স্বাভাবিকভাবে ক্লাস করা যায় না। সন্ধ্যা হতেই প্রতি আধা ঘন্টা পর পর বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন।
৫ দিনের এক গড় হিসাবে দেখা যায় ২৪ ঘন্টার মাঝে ১০ থেকে ১২ বার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কমলগঞ্জ জোনালের নি¤œমান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, গ্রীড লাইন থেকে চলমান ৩৩ কেভি প্রধান বিদ্যুৎ লাইন টেকানো যাচ্ছে না। তাছাড়া যেভাবে বিজলি চমকায় ও ধমকা বাতাস বহমান তাতে আধা ঘন্টা পর পর বিদ্যুৎ বন্ধ হচ্ছে। এ দিকে ২২ এপ্রিল শুক্রবার রাতের ঝড়ে গাছ গাছালি ভেঙ্গে ও ঘর ভেঙ্গে পড়ে বিদ্যুৎ লাইনের বেশ ক্ষতি হওয়ায় ৫ দিন ধরে উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম এখনও বিদ্যুৎ বিহিন অবস্থায় আছে।
পবিস এলাকা পরিচালক প্রভাষক আব্দুল আহাদ ৬টি গ্রাম বিদ্যুৎবিহিন থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আরো বেশী গ্রাম বিদ্যুৎবিহিন ছিল। রোববার মেরামত কাজ শেষে বেশ কিছু গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা গেলেও বেশী ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি।
পবিস কমলগঞ্জ জোনাল ম্যানেজার প্রকৌশলী এস এম হাসনাত হাসান বলেন, উল্লেখিত ছয়টি গ্রামে বিদ্যুৎ লাইনের বেশী ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎকর্মীরা মেরামত কাজ করছে। আশা করা যায় দ্রুততম সময়ে এই ছয়টি গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
মন্তব্য করুন