ব্যক্তি মালিকানার ভুমি খাস হিসেবে বন্দোবস্থ প্রদান বড়লেখায় ভুমি কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় ভুমি মালিকরা চরম হয়রানির শিকার

June 8, 2016,

বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখায় ভুমি কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার কারনে অনেক ভুমি মালিককে চরম খেসারত দিতে হচ্ছে। দুর্নীতিবাজ ভুমি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উৎকোচের বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্রে ও তদন্ত ছাড়াই একজনের দখলিয় জমি অন্যের নামে নামজারী করে দিচ্ছেন। সার্ভেয়ার ও তহশীলদারের ভুল ও স্বেচ্ছাচারী প্রতিবেদনে অনেকেই পথে বসেছেন। সম্প্রতি তারা ব্যক্তি মালিকানাধীন দখলিয় ও রেকর্ডিয় ভুমি সরকারী খাস জমি গ্রহীতা এক মহিলার নামে নামজারি করে দিয়েছেন ! দুই ভুমি মালিকের দীর্ঘদিনের দখলিয় ভুমিতে সরকারী খাস জমি গ্রহীতা পক্ষ সম্প্রতি দখলে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা দেখা দেয়। খোঁজ নিতে গেলে বেরিয়ে আসে ভুমি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চরম অনিয়ম দুর্নীতির চিত্র। ভুক্তভোগী ভুমি মালিকগন খাস জমি বন্দোবস্থ নথি বাতিলের দাবীতে ৬ জুন সোমবার জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ গ্রামের ফারুক উদ্দিন ও জহিরুল ইসলাম দোহালিয়া মৌজার ৪১০ নং খতিয়ানে ১২০১ নং দাগের ১০২ শতাংশ ভুমি বিগত ২০১২ সালে জনৈক ছানু মিয়ার নিকট থেকে ক্রয়, ভোগ দখল ও নিজেদের নামে নামজারী করেন। সম্প্রতি দোহালিয়া গ্রামের ময়নু বিবির পক্ষের লোকজন ফারুক উদ্দিন ও জহিরুল ইসলামের ক্রয়কৃত ভুমি দখলের উদ্দেশ্যে ঝুপড়ি ঘর তৈরী ও কলাগাছ রোপণ করে। দখলদাররা জানায় এ ভুমি সরকারের নিকট থেকে ময়নু বিবি বন্দোবস্থ নিয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা উপজেলা ভুমি অফিসে গিয়ে জানতে পারেন ময়নু বিবি ভুমিহীন হিসেবে কৃষি বন্দোবস্থ নিতে ডিসির খতিয়ানের ১২০৬ নং দাগে ৭৫ শতাংশ ভুমির জন্য আবেদন (মোকদ্দমা নং-৫৩৯৮/৮৯, ১০৪৫/৮৯) করেন। ২০১৩ সালের ১২ মার্চ ময়নু বিবির নামে দলিল রেজিস্ট্রারী করে দেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার আব্দুল ছায়েম মামুন গত বছরের ১২ মার্চ ব্যক্তি মালিকানাধীন ১২০১ নং দাগ সরকারী খাস ভুমি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন। পরবর্তীতে দক্ষিণভাগ ইউনিয়ন ভুমি অফিসের তহশীলদার সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই ফারুক উদ্দিন ও জহিরুল ইসলামের দখলিয় জমি ময়নু বিবির নামে নামজারী করেন। তাদের ভুয়া প্রতিবেদনে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন দুই ভুমি ভুমি মালিক।
ভুক্তভোগী জহিরুল ইসলাম ও ফারুক উদ্দিন জানান, ভুমি অফিসের লোকজনের স্বেচ্ছাচারিতার কারনে তারা চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। উৎকোচের বিনিময়ে আমাদের রেকর্ডিয় ও ভোগ দখলীয় ভুমি সার্ভেয়ার ও তহশীলদার ময়নু বিবির নামে নামজারি করেছেন। আমাদের ক্রয়কৃত ভুমি বহাল রাখতে দলিল রেজিস্ট্রিী করায় নথি বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছি। পরে দলিল বাতিলের জন্য আদালতের শরনাপন্ন হব।
সার্ভেয়ার আব্দুল ছায়েম মামুন জানান, দলিল অনুযায়ী তিনি ময়নু বিবির নামে নামজারীর প্রতিবেদন জমা দেন। দখল আছে কিনা, সরেজমিন তদন্ত করেছেন কি-না এসব প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অনেক দিন আগের ঘটনা, সঠিক মনে নেই।
ভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভুমি) এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ১২০১ দাগটি ডিসির খতিয়ানের নয়। ভুমিহীন মহিলার নামে যেহেতু দলিল রেজিস্ট্রী ও নামজারী হয়ে গেছে সেহেতু ভুমি মালিকদের সংশ্লিষ্ট ভুমি বন্দোবস্থ নথি (মোকদ্দমা নং-৫৩৯৮/৮৯, ১০৪৫/৮৯) বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com