বড়লেখায় সরকারি খাল ভরাট করে অবৈধ ঘর নির্মাণ : জলাবদ্ধতায় অনাবাদি কয়েকশত একর কৃষি জমি

June 24, 2023,

আব্দুর রব॥ বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুরে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের সরকারি খাল ভরাট করে তিন ব্যক্তির অবৈধ বসত বাড়ি নির্মাণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ৩ শতাধিক একর কৃষি জমিতে ধান চাষ করা যাচ্ছে না।

এতে শতাধিক ভূমি মালিক বছরে সহস্রাধিক মেট্টিক টন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ভুক্তভোগী ভূমি মালিক ও বর্গাচাষীরা সরকারি ভূমির উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করে অনাবাদি কৃষি জমি আবাদের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। পাশাপাশি অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

জানা গেছে, উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের সায়পুর মৌজার ‘চিলার বন্দ’ হাওরে শতাধিক ভূমি মালিকের ৫ শতাধিক একর এক ফসলি কৃষি জমি রয়েছে। হাওরের (জমির) বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য রেললাইন সংলগ্ন রেলওয়ের নিজস্ব ভূমির ওপর সরকারি খাল রয়েছে।

৩-৪ বছর আগে শাহবাজপুর রেল গেইটের পশ্চিম দিকে স্টেশনমূখী রাস্তার মধ্যখানে আমির উদ্দিনের বাড়ির পাশের খাল ভরাট করে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করেন স্থানীয় ইলাই মিয়া, আব্দুস সইদ ছানুর ও লোকমান হোসেন।

এতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। বছরের প্রায় ৭ মাস জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদি পড়ে থাকে ‘চিলার বন্দে’র কয়েকশ’ একর কৃষি জমি।

৩-৪ বছর ধরে ভূমি মালিকরা এসব জমিতে ধান চাষ করতে পারছেন না। এতে তারা বছরে সহস্রাধিক মেট্টিক টন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সরেজমিনে গেলে ভূমি মালিক আব্দুল হালিম, ছামাদ মিয়া, ফৈয়াজ আলী, রুপন ধর, আবু তাহের, নুরুল ইসলাম প্রমুখ জানান, স্থানীয় ইলাই মিয়া, আব্দুস সইদ ছানুর ও লোকমান ‘চালির বন্দ’ হাওরের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের সরকারি খাল ভরাট করে ঘর নির্মাণে তাদের ব্যাপক কৃষি জমি জলাবদ্ধ থাকে।

এতে ৩-৪ বছর ধরে তারা ধান চাষ করতে পারছেন না। একাধিক বার তাদেরকে অনুরোধ করা স্বত্ত্বেও তার ভরাট করা খাল খোলে দেয়নি।

অবশেষে গত বছরের ১৮ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু আজও কোন সুফল পাননি। তারা খালের উপর নির্মিত অবৈধ ঘর দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

 সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, ইউএনও’র নির্দেশে তিনি অভিযোগটি তদন্ত করিয়েছেন।

এতে সরকারি খাল ভরাট করে ঘর নির্মাণের ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে ব্যাপক কৃষি জমি অনাবাদি থাকার সত্যতা মিলেছে। খালের উপরের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মনোয়ার হোসেন জানান, মাত্র তিন ব্যক্তির অবৈধ স্থাপনার কারণে শতাধিক ভূমি মালিকের বিশাল পরিমাণ কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে থাকা আমাদের জাতীয় ক্ষতি।

এই জমি থেকে মালিকরা বছরে ৮শ’ থেকে ১ হাজার মেট্টিক টন ধান প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com