ভারতে হাঁসের বাচ্চা পাচার কালে মদ সহ আটক

May 10, 2022,

বিকুল চক্রবর্তী॥ শ্রীমঙ্গল সিন্দুরখান সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হয় হাঁসের বাচ্চার বিনিময়ে আসে মদ ফেনসিডিল ও ইয়াবা ট্যাবলেট।
১০ মে মঙ্গলবার সকালে এমনই একটি চালান ধরা পড়েছে বিজিবি ৫৫ ব্যাটালিয়ানের সিন্দুরখান বিওপির জোয়ানদের হাতে। এ সময় পাচারের উদ্দেশ্যে আনা ৩৮০টি হাঁসের বাচ্চা, ভারত থেকে আনা বিভিন্ন প্রকারের ৯ বোতল দামী মদ ও এ চক্রের এক সদস্য আটক হয়। এ সময় এ চক্রের আরেক সদস্য পালিয়ে যায়। ধৃত আসামীর নাম হুমায়ূন মিয়া। তার বাড়ি ব্রাহ্মন বাড়িয়া জেলার নাসিন নগর উপজেলার ঢলমন্ডল গ্রামে।
বিজিবি সিন্দুরখান ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদা মো: তোফাজ্জল হোসেন জানান, এ চক্র গোপনে প্রায়ই এই আদান প্রদানের কাজ করে আসছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে শ্রীমঙ্গল সিন্দুরখান সীমান্তের লালটিলা এলাকায় এ চক্রকে তারা সনাক্ত ও এর এক সদস্যকে আটক করতে স্বক্ষম হন। এ সময় চক্রের স্থানীয় সদস্য ফোরকান মিয়া পালিয়ে যায়। তবে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফোরকান মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পড়ে গেলে এটি তারা জব্দ করেন।
তিনি জানান, চক্রটি বাংলাদেশ থেকে হাঁসের ছানাসহ বিভিন্ন পন্য দিয়ে বিনিময়ে মদ আনে। এর আগে বুটের ডালের বিনিময়ে মদ আনার সময় বেশ কিছু বুটের ডাল ধরা পড়ে।
সিন্দুরখান বিজিবির অপর সদস্য নায়েক মো: মাহবুব আলম জানান, মঙ্গলবার সকালে তারা সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় সীমান্তের লাল টিলা এলাকায় সীমান্ত পিলার ১৯৪২ এর ১৫ এস এর ৭০০ মিটার অভ্যান্তরে মাটির মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের কয়েক বোতল মদ দেখতে পান। এ সময় তারা মদের মালিক খোঁজতে বেরহন। তাৎক্ষনাৎ একজন লোক দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেন। তারাও পিছু ধাওয়া করেন। দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পালিয়ে যাওয়া ব্যাক্তির সেল ফোনটি মাটিতে পড়ে যায়। বিজিবি জোয়ানরা মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করলেও পালিয়ে যায় লোকটি। এ সময় লোকটির মোবাইলে ফোন করে হুমায়ুন নামে একজন। হুমায়ুন ফোনে বলে ফোরকান ভাই হাঁসের বাচ্চা নিয়ে কোথায় আসবো। বিজিবি জোয়ানরা ফোরকান সেজে তাকে আসার লকেশন দেন। কথামতো ওই জায়গায় ৩৮০টি হাসের বাচ্চা নিয়ে আসে ব্রাহ্মন বাড়িয়ার নাসিন নগরের হুমায়ুন। হুমায়ুনকে আটক করার পর তারা জানতে পারেন ফোরকান গং তার মাধ্যমে হাঁসের বাচ্চা কিনে আনেন এবং তা ভারতে পাচার করেন। অন্যদিকে ভারত থেকে আসে মদ।
বিজিবির হাতে আটক হুমায়ুন জানায় এটি তার দ্বিতীয় চালান। ৩০ টাকা পিসে এই বাচ্চা ফোরকানকে দিচ্ছিলো। এর আগেও আরেক চালান হাঁসের বাচ্চা সে ফোরকানকে দিয়েছে।
আটকৃত হাসের ছানা, মদ ও আসামীকে বিকেলে ৫টার দিকে শ্রীমঙ্গল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত ) হুমায়ুন কবির জানান, এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা হয়েছে। তবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিজারে সম্পৃক্ত ৩৮০টি হাঁসের ছানা নিলামে বিক্রি বিক্রি করেন।
এ ব্যাপারে বিজিবি ৫৫ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক এস এন এম সামিউন্নবী চৌধুরী জানান, আগের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন সীমান্ত এলাকার টহল তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সীমান্ত বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে যারাই এ কাজ করতে আসে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ধরা পড়ছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com