ভাষা আন্দোলনের ৬৫ বছরেও মৌলভীবাজারে তিন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার
![](https://i0.wp.com/www.patakuri.com/wp-content/uploads/2017/02/images.gif?fit=800%2C445&ssl=1)
হোসাইন আহমদ॥ আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারী। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলা ভাষার জন্য সালাম, বরকত, জব্বার ও শফিউলসহ নাম অজানা আরো অনেকেই রাজপথে পুলিশের গুলির সামনে আন্দোলন করে জীবন দিয়েছেন। তাদের স্মরণে বাংলাদেশসহ বিশ্ব ব্যাপি এই দিনটিকে যথাযত মর্যাদার সহিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে ভাষা রক্ষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই ছিলেন ছাত্র। আর ওই ছাত্রদের ও ভাষা রক্ষার আন্দোলনে শহীদের স্মরণ করতে ১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে অদ্যবধি পর্যন্ত ওই দিনটিকে পালন করা হলেও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৩১১টি শিক্ষা প্রতিষ্টানে নেই কোন শহিদ মিনার। যে সকল শহীদদের আত্মত্যাগের বিনীময়ে আমরা আজকে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি সে সকল শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না ওই প্রতিষ্টানের প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থীরা। যার কারণে অনেকেই ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও আত্মত্যাগ জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে না তাদের মধ্যে দেশপ্রেম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৩১টি মাধ্যমিক স্কুলের মধ্যে শহিদ মিনার নেই ১৩টি স্কুলে, ১৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহিদ মিনার নেই ১৮২টি বিদ্যালয়ে, ১৬টি দাখিল মাদ্রাসার মধ্যে একটিতেও শহিদ মিনার নেই এবং প্রায় ১০০টি কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে শহিদ মিনার নেই। এছাড়াও উপজেলার মধ্যে আরও কয়েকটি কলেজ রয়েছে যে গুলোতে শহিদ মিনার নেই বলে জানা গেছে।
৫২ থেকে ২০১৭ সাল। দীর্ঘ ৬৫ বছরেও এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মিত হয়নি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শহীদ মিনার। অযতœ অবহেলায় ও রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে জেলা শহরের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শহীদ মিনার ভেঙে গেছে অনেক আগেই। এমন বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও আজো গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার। অথচ, সরকারি আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি মাধ্যমিক/কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকার জন্য সদর উপজেলা শিক্ষা অফিস দুষছেন সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে। অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারি বাজেট ও স্থানাভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। উভয়েরই আন্তরিকতার অভাব আছে বলে মন্তব্য করলেন ওই অঞ্চলের শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
তবে প্রতি বছর শিক্ষার্থীরা স্কুল প্রাঙ্গণে বাঁশ, কাঠ দিয়ে অস্থায়ী একটি শহীদ মিনার তৈরি করে সেখানে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আব্দুস সামাদ মিয়া জানান, শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও অনেক প্রতিষ্টানে শহিদ মিনার নির্মাণ হয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা কোন বধ্যবাদকথা নয়, যে সকল প্রতিষ্টানের পক্ষে শহিদ মিনার করা সম্ভব তারা করেছে এবং বাকীদেরকে করার জন্য আবার বলা হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয় প্রধানকে শহীদ মিনার তৈরির জন্য তাগিদ দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন