মৌলভীবাজারের পাহাড়ী টিলায় আগাম জাতের আনারসে কৃষকের মুখে হাসি

April 18, 2024,

স্টাফ রিপোর্টার॥ আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় এ বছর মৌলভীবাজারের পাহাড়-টিলায় আগাম জাতের আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদনের এ মৌসুমে চাষিরা ন্যায্যদাম পেয়ে খুবই খুশি। প্রতিদিন শ্রীমঙ্গলের আড়তজুড়ে প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে। মৌলভীবাজারের এ সুস্বাদু আনারস খুব শিগগিরই রফতানির চিন্তাভাবনা চলছে।
জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, মৌলভীবাজারের উৎপাদিত আনারস শিগগিরই বিদেশে রফতানির বিষয়ে সরকার একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে চাষিরা আরও লাভাবান হবেন।
সম্প্রতি সরেজমিনে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার একাধিক পাহাড়ে দেখা যায়, টিলার বুকজুড়ে সাজানো-গোছানো অপরূপ দৃশ্যের এক একটি আনারস বাগান। কাঁটাযুক্ত গাঢ সবুজের পাতায় পাতায় ডানা মেলেছে শত শত কাঁচা-পাকা আনারস। তবে অসময়ে আগাম জাতের এ আনারস চাষে চাষিদের শুরুতে চরম বেগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে সেচ সংকট মোকাবিলা ও অধিক দামে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়েছে। এতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর চাষিদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। তারপরও এবার আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদনের এ ভরা মৌসুমে চাষিরা আনারসের ন্যায্যদাম পেয়ে খুবই খুশি।
চাষি সামছুল হক জানান, তিনি এ বছর তিন থেকে চারটি টিলায় আনারস চাষ করেছেন। প্রথম দিকে সেচ সমস্যার সম্মুখীন হন। তবে সেচ সমস্যা কাটিয়ে তার বাগানে আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার আনারস বিক্রি করেছেন।
একইভাবে চাষি জসিম উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত তার বাগান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার আনারস বিক্রি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তার বাগানে অন্তত আরও দেড় লাখ আনারস রয়েছে। বাজারের এ দাম অব্যাহত থাকলে এ বছর লাভের পরিমাণ বেশি থাকবে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলায় আনারসের চাষাবাদ হয়ে এলেও সবচেয়ে বেশি চাষ ও উৎপাদন হয় শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায়। এ জেলায় হানিকুইন, জায়েন্ড কিউ ও ক্যালেন্ডার এ তিন জাতের মধ্যে বিলাতি জাতের আনারস হানিকুইনেরই উৎপাদন হয় বেশি এবং এর চাহিদাও ব্যাপক। গরমের কারণে রসালো ফল আনারসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে শ্রীমঙ্গল আড়তে। কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যমতে, জেলায় ১ হাজার ২১৫ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে আনারস চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬শ মেট্রিক টন।
শ্রীমঙ্গল নতুন বাজার আড়ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. আবু তাহের আগাম জাত আনারসের উৎপাদন খরচ বেশি জানিয়ে জানালেন, তাদের আড়তে প্রতিদিন কম করে হলেও কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে। এতে আড়তদাররা যেমন খুশি, তেমনি চাষিরাও ভালো দাম পেয়ে খুশি।

 

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com