মৌলভীবাজারে শ্রমিকনেতা আবুল কালাম আজাদ-এর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাবেক উপদেষ্ঠা, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবুল কালাম আজাদ-এর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে মৌলভীবাজার ও জুড়ীতে পৃথক পৃথকভাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
৬ মার্চ বুধবার সন্ধ্যায় জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে শহরের চৌমুহনাস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশ। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম-সম্পাদক মোঃ ছাদেক মিয়া।
এছাড়াও আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ সুহেল মিয়া। সভায় বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ২৩০৫-এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, কোষাধ্যক্ষ মোঃ সুবলে মিয়া, সদস্য মোঃ মাছুম মিয়া ও সিদ্দিক মিয়া।
এদিকে ৫ মার্চ রাত ৮ টায় হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন জুড়ী উপজেলা কমিটির উদ্যোগে প্রয়াত শ্রমিকনেতা আবুল কালাম আজাদ-এর স্মরণে এক আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন জুড়ী উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন জুড়ী উপজেলা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী, উপদেষ্ঠা ছানালাল দাশ ও বাবুল আহমেদ, জুড়ী উপজেলা রাইস মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি জমির উদ্দিন, স’মিল শ্রমিক সংঘের সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল আলী, ডেকোরেটার্স শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম আহমদ প্রমূখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন দূরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাত্র ৪৯ বছর বয়সে শ্রমিকনেতা আবুল কামাল আজাদ মৃত্যুবরণ করেন। প্রয়াত আবুল কালাম আজাদ আমৃত্যু হোটেল শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এমনি কি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরও যতদিন সচল ছিলেন ততদিন সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। মহান মে স্ববেতনে সর্বাত্মক ছুটি কার্যকর, হোটেল সেক্টরে সরকার কর্তৃক নি¤œতম মজুরি ঘোষণা, রমজান মাসে বিনা বেতনে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ঈদ উৎসব বোনাস আদায়, বেআইনী ছাঁটাই বন্ধসহ তাঁর নেতৃত্বে সিলেট বিভাগে অসংখ্য আন্দোলন সংগ্রামে হোটেল শ্রমিকরা দাবি আদায় করতে সমর্থ হয়। এছাড়াও অনেক স্থানীয় ও জাতীয় আন্দোলন সংগ্রামে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন। তাঁর অসমাপ্ত সংগ্রাম অগ্রসর করে নেওয়ার দায়িত্ব তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে আমাদের পালন করতে হবে।
সভায় সাম্প্রতিক সময়ে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন চাল-ডাল, তেল-লবন-চিনি, মাছ-মাংস, ডিম-দুধ, শাক-সবজিসহ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের মূল্য ও নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি করে শ্রমিক, শ্রমজীবী, স্বল্প আয়ের মানুষ ও ব্যাপক জনগণের জীবন ও জীবিকাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আয় বাড়েনি। সভা থেকে নিত্যপণ্যের মূল্য কমানো, গ্যাস-বিদ্যুত-জ্বালানি থেকে আইএমএফর নির্দেশে ভর্তুকি প্রত্যাহার করে দফায় দফায় মূল্য বৃদ্ধি করা বন্ধ, রমজান মাসে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ঈদের আগে একমাসের বেতনের সমপরিমান উৎপাস বোনাস প্রদান, মহান মে দিবসে স্ববেতনে ছুটি, বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ নি¤œতম মজুরি ঘোষণা, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালু, ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস, নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্রসহ শ্রমআইন বাস্তবায়ন করার দাবি জানানো হয়।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মন্তব্য করুন