মৌলভীবাজার জেলা সদর কি সাগরের পানির উপরে : এখানে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জায়গা নেই? – নেছার আহমদ

June 13, 2021,

মু.ইমাদ উদ দীন॥ মৌলভীবাজার-৩ (রাজনগর-মৌলভীবাজার সদর) আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নেছার আহমদের বক্তব্যে এখন সরগরম মৌলভীবাজার। মেডিকেল কলেজ নিয়ে যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশনের টকশোতে দেওয়া তার বক্তব্য এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ওই বক্তব্যটি এখন “টক অবদ্যা” জেলায় পরিণত হয়েছে। ওই বক্তব্যে তিনি জেলা সদরে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি দৃঢ় কন্ঠে খোলাসা করেছেন। আর তাতেই মেডিকেল কলেজের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ অনেকটাই প্রশমিত হয়ে হচ্ছেন আশ^ান্বিত।
জানা যায় ৬ জুন সংসদে সম্পূরক বাজেট বক্তৃতায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি করেন মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনের এমপি সাবেক চিফ হুইপ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ। ওই বক্তব্যে তিনি তার নির্বাচনী এলাকার নানা উন্নয়ন ফিরিস্তি তোলে ধরার পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের যৌক্তিকথা দেখিয়ে বলেন ওখানে ৩ শ ৫৮ একর জায়গা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রয়েছে। তাই ওই স্থানে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হলে জায়গা অধিগ্রহণ করে ক্রয় করার প্রয়োজন হবেনা।
সংসদে দেওয়া তার ওই বক্তব্য জেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তার সংসদীয় আসনের লোকজন ছাড়া জেলা জুড়ে ২০১৮ সাল থেকে দেশ ও প্রবাশে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা সদরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি মেডিকেল কলেজে রুপান্তরিত করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা বিস্মিত হন। কারণ ওই দাবিতে আন্দোলনের শুরু থেকে দেশ ও বিদেশে (যুক্তরাজ্য) গণস্বাক্ষর,সেমিনার ও গোলটেবিল আলোচনায় তিনি অংশগ্রহণ করে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এর পর সংসদে হঠাৎ তার এমন দাবি জেলা জুড়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে ৯ জুন রাতে যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশনের টকশোতে মৌলভীবাজার জেলায় মেডিকেল কলেজ দ্রুত বাস্তবায়নে আমাদের করণীয় শীর্ষক র্ভ্যাচুয়াল আলোচনায় মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নেছার আহমদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। এজেলার মানুষ দেশ ও বিদেশে যারা অবস্থান করছেন সবাই চায় মৌলভীবাজার জেলা সদরে মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হউক। প্রধান মন্ত্রীও জানেন আমাদের ২৫০ শয্যা হাসপাতাল আছে। সেটিকেই মেডিকেল কলেজে রুপান্তরিত করার কথা। এখানে জানিনা কি কারণে কথাটি বলা হয়েছে। আমি নিজেও ঠিক বুজতেছিনা। জেলার যে কোনো বড় প্রতিষ্ঠান বা মূল প্রতিষ্ঠান জেলা সদরেই হয়। এটি আমাদের দেশের একটি প্রচলিত নিয়ম। অবশ্যই এর কারণও আছে। একসময় মহকুমা ছিলো। সেই মহকুমাগুলো পরবর্তীতে জেলায় রুপান্তরিত করা হয়েছে। মহকুমা যখন প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন তৎকালীন সরকার সবচেয়ে ভালো জায়গায় যেখানে জেলা হেডকোয়ার্টার নির্ধারণ করলে সবাই সহজেই সেবা পেতে পারে ও যেতে পারে সেটাই গুরুদিয়ে নির্ধারণ করেছিলো।
৭টি উপজেলা নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা হেডকোয়ার্টার। মেডিকেল কলেজ চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী মৌলভীবাজার সদরেই হবে। সে ব্যাপারে জেলাবাসী কারো কোনো আপত্তি নেই। আর সেটি প্রচলিত প্রথা ভেঙ্গে অন্যথ্য যাবে তা প্রশ্নই আসেনা। তিনি আব্দুস শহীদকে ইঙ্গিত করে বলেন একজন সম্মানীয় ব্যক্তি জায়গা নিয়ে বলেছেন। জেলা সদরে কি জায়গার অভাব পড়েছে। আমি প্রশ্ন রাখতে চাই। জেলা সদর কি সাগরের পানির উপরে।
যে ওখানে মেডিকেল কলেজ করা যাবেনা। এই অবান্তর কথাগুলো কোনো অবস্থাতেই ঠিক নয়। জেলাবাসী ঐক্যবদ্ধ মৌলভীবাজারে একটি মেডিকেল কলেজ হবে। আর সেটা অবশ্যই জেলা সদরে হবে। যে ভাবে সারা বাংলাদেশে হচ্ছে। যদিও হঠাৎ ওই বক্তব্য শোনে অনেকেই দু:খ পেয়েছেন। বিব্রত হয়েছেন। আমি জেলার সম্মানিত নাগরিকদের আশ^স্ত করতে চাই। ইনশাআল্লাহ মৌলভীবাজার সদরেই মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবে। ২৫০ শয্যাকে উন্নিত করে মেডিকেল কলেজ হবে। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। জেলা সদর থেকে অন্যথ্য যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
যেমনটি আমরা সিলেট জেলার অধীনে থাকার সময় সিলেট সদরেই মেডিকেল কলেজ হয়ে ছিলো। আব্দুস শহীদকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন উনি নিজ এলাকার লোকজনকে খুশি করতে হয়ত এটা বলেছেন। নেছার আহমদ আরও বলেন ২৫০ শয্যা হাসাপাতালে ১০ একর জায়গা রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগেরও আরও ৫-৬ একর জায়গা রয়েছে। এছাড়া শহরের স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় হাজার একর সরকারি জায়গা রয়েছে। সুতরাং জেলা সদরে যে জায়গার সমস্যা রয়েছে এমনটি সটিক নয়।
সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় ওই টকশোতে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক ব্রিটিশ কাউন্সিলর বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও রাজনীতিবিদ আলহাজ এম এ রহিম (সি.আই.পি),মৌলভীবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ চাই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড হোয়াটস্যাপ ক্যাম্পেইন গ্রুপের এডমিন বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার মোহাম্মদ মকিস মনসুর. যুক্তরাজ্য জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়া,মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিলর মুজিবুর রহমান জসিম ও এস করিম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম সাব্বির করিম।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com