মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস, হিম হাওয়ায় মৌলভীবাজারের জনজীবন বিপর্যস্ত

January 20, 2023,

স্টাফ রিপের্টোর॥ মৌলভীবাজার জেলার উপর দিয়ে বইছে তীব্র শৈত প্রবাহ। টানা কয়েক দিন থেকে তীব্র শীত ও হিম হাওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সূর্যের ঝলমল আলো থাকলেও জেলা জুড়ে বইছে তীব্র হিম হাওয়া। বিকেল থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
শুক্রবার ২০ জানুয়ারি সকাল ৯ টায় চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৫.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। হিম হাওয়া ও শীতের তীব্রতার কারণে সময়মত কাজে যোগ দিতে পারছেনা শ্রমজীবি মানুষ। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন বোরো চাষী, ছিন্নমূল ও দিনমজুর মানুষ। দিনে ও রাতে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের কেনাকাটা সবচেয়ে বেশী। পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়েও মানুষ পড়েছে বিপাকে। পশুর গায়ে ছেড়া বস্তা ও কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। গরম কাপড়ের ফুটপাতের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের কেনাকাটা সবচেয়ে বেশী।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিন্নার হাওর এলাকার কৃষক রাজু মিয়া জানান, শীতের তীব্রতায় জমিতে ঠিক মতো চাষ দিতে পারছেননা। একই অবস্থা জানালেন পার্শবতী আজমেরু এলাকার বাচ্চু মিয়া, তিনি বলেন শীতের কারণে জমিতে চারা লাগাতে পাছেননা। জমিতে পানির মধ্যে কাজ করায় সময় শরিরে কাপুনি আসে।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, শীতের কারণে রোরো ধানের বীজতলায় চারাবৃদ্ধি বিলম্বিত হয়েছে। কৃষকরা অত্যাধিক শীতের কারণে মাঠে যেতে পারছেননা। শীত ও ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে ধানে চিটা হতে পারে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা: চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুরর্শেদ জানান, অন্য সময়ের তুলনায় এখন শীতজনিত রোগে প্রতিদিন জেলার সরকারি ও বেসরবারি বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের ভর্তির সংখ্যা অনেক বেশি।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, জেলায় মোট বরাদ্দ এসেছে ৩৫ হাজার ২শত ৮০ পিস কম্বল। ইতো মধ্যে কম্বলগুলো জেলার ৭টি উপজেলার ছিন্নমূল, দিনমজুর ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বলের চাহিদা চাওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, কুয়াশা ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন কেটে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। আজ সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার উপর দিয়ে বইছে তীব্র শৈত প্রবাহ। এটি চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। আবহাওয়ার এ অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। এ অঞ্চলে মূলত জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেশী থাকে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com