রাজনগরে ডাকাত আতঙ্কে মসজিদে মাইকিং, নির্ঘূম রাত

March 8, 2017,

রাজনগর সংবাদদাতা॥ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মানুষ ডাকাত আতঙ্কে সোমবার নির্ঘূম রাত কাটিয়েছেন। সম্প্রতি চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় এই আতঙ্ক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এলাকাবাসীকে সচেতন করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মাইকে সতর্ক বার্তা প্রচার করা হয়েছে। ডাকাতির আশঙ্কায় এলাকাবাসী গ্রামে গ্রামে পাহার বসিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ‘কামারচাক ইউনিয়নে ডাকাত হানা দিতে পারে’ রাজনগর থানা থেকে এমন বার্তা পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নজমুল হক সেলিম পরিষদের সদস্যদের জানান। তারা মোবাইল ফোনে এলাকাবাসীকে জানালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। ওই ইউনিয়নের ইসলামপুর, মশাজান, খাসপ্রেমনগর, একাসন্তোষ, তেঘরী, মিঠিপুর, ভোলানগর, দস্তিদারের চক, বিশালী, আদমপুর ও টেংরা ইউনিয়নের ভাঙ্গারহাট সহ বেশ কিছু গ্রামে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মসজিদের মাইকে সতর্ক বার্তা প্রচার করা হয়। ঘোষণা শুনে ডাকাতদের প্রতিহত করতে সাধারণ মানুষ হাতে লাঠি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। গ্রামে গ্রামে পাহারা বসানো হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় চলাচলকারী বিভিন্ন গাড়িতেও শুরু হয় তল্লাশি। এভাবেই চলে যায় রাজনগরবাসীর একটি নির্ঘুম রাত। পুলিশের পক্ষ থেকে রাস্তায় টহল জোরদার করা হয়। তবে এতো কিছু হলেও কোথাও কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারী রাতে উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের চাঁনভাগ গ্রামের জাবেদ আলীর বাড়িতে একদল ডাকাত অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার সহ দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরের দিন (২৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে রাজনগর বাজারের হাবিব ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর ও রহমানিয়া ফার্মেসী থেকে ল্যাপটপ ও নগদ টাকা সহ লক্ষাধিক মালামাল চুরি হয়েছে। এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারী রাতেও ওই বাজারের খান ব্রাদার্স থেকে জানালার গ্রিল কেটে লক্ষাধিক টাকা চুরি হয়। রবিবার (৬ মার্চ) দিবাগত রাতেও সদর ইউনিয়নের বাগাজুরা গ্রামে এক প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে। ডাকাতদের হামলায় দুইজন আহত হয়েছেন। এসময় এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে ডাকাতরা।
এ ব্যাপারে কামারচাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজমুল হক সেলিম বলেন, রাজনগর থানার ওসি আমাকে ফোনে জানান ‘ এলাকায় ডাকাতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে’। ইউপি সদস্যদের এ ব্যাপারে সতর্ক করার পরামর্শ দেন। আমি ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিদের ফোন করে বিষয়টি জানাই। পরে তারা বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা করে মানুষকে সচেতন থাকতে বলেন।
রাজনগর থানার ওসি শ্যামল বণিক বলেন, ডাকাতির ব্যাপারে ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সতর্ক করতে কামারচাক ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছিলাম। রাতে পুলিশি টহল ও তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো ধরণের অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশ তৎপর রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com