রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কমিটিতে নারী অন্তর্ভূক্তি করার জন্য সংবাদ সম্মেলন
![](https://i0.wp.com/www.patakuri.com/wp-content/uploads/2022/11/Moulvibazar-Woman-Fourm.jpg?fit=800%2C450&ssl=1)
স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কমিটিতে নারী অন্তর্ভূক্তি করার জন্য সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ১৫ নভেম্বর দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদের অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য ও জেলা-উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামে আয়োজনে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি রাজনগর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তি চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও শ্রীমঙ্গল সিন্দুঁর খান ইউনিয়ন পরিষদ,ইউনিয়ন নেটওয়ার্কের সভাপতি রাবেয়া বেগমের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি শাহীন রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ সংবিধানের ৯০-এর বি ধারা অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী অর্ন্তভূক্তি করার কথা থাকলেও, কোন রাজনৈতিক দল এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী অর্ন্তভূক্ত করতে পারেনি। যারা বিভিন্ন কমিটিতে আছেন নামকাবাস্তে কমিটির সদস্য হিসেবে বিদ্যমান আছেন, বাস্তবে তাদেরকে কোন কার্যক্রমে ডাকা হয় না।
বক্তারা আরো বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ অনুচ্ছেদ ৯০(খ) তে বলা ছিল যে, রাজনৈতিক দলগুলির কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সকল কমিটিতে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব ২০২০ সালের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। ইতিমধ্যেই ২০২২ সাল অতিক্রম করছি আমরা। তথাপি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোসহ অন্য কোনো রাজনৈতিক দলই এই শর্ত পূরণে সক্ষম হয়নি। আমরা ধারণা করছি দেশের বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সকল পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণের হার ও ধারণা সম্পর্কে আপনারা কম বেশি অবগত রয়েছেন। যেমন- ইসিতে পাঠানো বা পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ২৪শতাংশনারী নেতৃত্ব রয়েছে । বিএনপির সব পর্যায়ের কমিটিতে ১৫ভাগ নারী সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জাতীয়পার্টি (জাপা)-তে নারীপ্রতিনিধিত্ব রয়েছে ২০ শতাংশ। আর আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে এই হার ১৬ শতাংশ। অন্যান্য দলের মধ্যে সিপিবিতে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও জাসদে ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রয়েছে। এনপিপির ২০ শতাংশ,বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ৬ শতাংশ, গণতন্ত্রী পার্টিতে ১৫ শতাংশ ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টে ১ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রয়েছে। কর্নেল অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলিডিপির) কমিটিতে নারী নেতৃত্ব রয়েছে ২২ শতাংশ। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে কোনো দলেই প্রত্যাশিত ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব নেই।
অবশ্য এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হিসাবে একটি দলের নাম সামনে এসেছে – গণফ্রন্ট যারা ইসিকে জানিয়েছে, তাদের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখা হয়েছে (তথ্যসুত্র : ২৫ জুলাই ২০২১,দৈনিক সমকাল)। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার ব্যাপাওে প্রায় সব দলের দায়সারা অঙ্গীকারের পাশা পাশি কিছু দল সরাসরি এর বিরোধিতা ও করে আসছে। (তথ্যসূত্র: আরটিভিনিউজ, ২৪ জুলাই ২০২২)।
বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের নারীরা যখন এগিয়ে যাচ্ছে এবং নারী নেতৃত্বকে এগিয়ে নেয়ার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা ও যখন অব্যাহত রয়েছে, তখন এমন বিরোধিতা নারীদেরকে আবার পিছিয়ে দেওয়ার সামিল। রাজনৈতিক দলগুলিতে নারীদের প্রতিনিধিত্বের যে চিত্র আমরা জাতীয় পর্যায়ে দেখতে পাই, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের চিত্র ও তার থেকে খুব একটা ভিন্ন নয়।
প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সাংবাদিকগণ ১৬টি জেলায় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ না রেখে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নে কাজ অব্যাহত রাখার জন্য পরামর্শ দেন।
মন্তব্য করুন