শ্রীমঙ্গলে জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত মানুষের সংখ্যা পাঁচশতাধিক

August 5, 2023,

বিকুল চক্রবর্তী॥ শ্রীমঙ্গলে ব্যানারে ‘জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন’ লিখে পাঁচশতাধিক মানুষ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন এক ব্যবসায়ী।

শবিবার ৫ আগস্ট দুপুরে শ্রীমঙ্গল জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম ভাড়া নিয়ে লেবু ব্যবসায়ী মখন মিয়ার বিরুদ্ধে সরকারী, দেবত্তোর ও ভুমিহীনদের জমি দখল এবং অবৈধভাবে সরকারী ছড়া থেকে বালু উত্তোলনসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে এ সংবাদ সম্মেলন করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ব্যবসায়ী ইউছুফ আলী।

তিনি ব্যানারে লিখেছেন জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলন কিন্তু তার সম্মেলনে শ্রীমঙ্গলের দুই প্রেসক্লাবের সাংবাদিক ছাড়াও উপস্থিত হয়েছেন পাঁচশতাধিক মানুষ।

সরজমিনে দেখা যায়, ৫’শ আসনের জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম পরিপূর্ণ হওয়ার পরও বারান্দায় ও দরজার পাশে অনেক লোক দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

ইউছুফ আলী জানান, এই সংবাদ সম্মেলনে অনেক ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন এলাকার অনেক মানুষ আসবেন তাদের জায়গা কোন প্রেসক্লাবেই হবে না তাই তিনি শ্রীমঙ্গলের সবচেয়ে বড় অডিটরিয়াম ভাড়া নিয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন।

তিনি বলেন, তিনি একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। কিছুদিন পূর্বে তার বিরুদ্ধে জনৈক লেবু কারবারী ও বালু ব্যবসায়ী মখন মিয়া শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। এরই প্রতিবাদে মখন মিয়ার সকল দূর্নীতি তুলে ধরে এ সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

ইউসুফ আলী মখন মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে বলেন, মখন মিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিতর্কীত ভূমিকার কারণে নিজ এলাকা সিলেট কুশাইন গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে শ্রীমঙ্গলে আশ্রয় নেন।

এরশাদ সরকারের আমলে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ফয়েজাবাদ হিলে সরকারী খাস ভূমিতে ভূমিহীনরা দিদারাবাদ ও সুন্দরাবাদ নামে ২টি গ্রাম তৈরী করে বসবাস করে আসছিল। মখন মিয়া তাদেরকে উচ্ছেদ করে সেখানে লেবু ও আনারস বাগান করেন।

একই সাথে মখন মিয়া ওই এলাকায় ফিনলে টি কোম্পানির ফয়জাবাদ চা বাগানের প্রচুর জমি জবর দখল করে লেবু ও আনারস বাগান গড়ে তুলেছেন।

তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তরসুর মৌজাতে বিসিক শিল্প নগরীর পাশে হিন্দু সম্প্রদায়ের দূর্গাদেবী ও লক্ষি দেবী ট্রাস্টের প্রায় ৩ একর দেবোত্তর সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছেন।

শ্রীমঙ্গল হবিবপুর মৌজায় ভূমিহীনদের বরাদ্ধকৃত জমিতে গড়ে তুলেছেন মাছের ফিশারী, শহরের সেন্ট্রাল রোডে এনিমি সম্পত্তি দখল করে করেছেন মার্কেট।

এছাড়া তিনি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জনৈক ফুলমিয়াকে নিয়ে উপজেলার তিনটি ছড়া থেকে মেশিন দিয়ে প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছেন।

এ ব্যাপারে মখন মিয়ার সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তার মানহানী করায় ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবেন।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সহকারি কমিশনার (ভূমি) সন্দ্বীপ কুমার তালুকদার জানান, ভূমিহীনদের নামে বরাদ্ধকৃত জায়গা কেউ দখলে রাখতে পারবে না, যদি কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ জানান, সরকারি খাস জায়গা যদি বন্দোবস্তো না থাকে তাহলে কারো পক্ষে তা দখল করে রাখা সম্ভব নয়। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জমি উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com