শ্রীমঙ্গলে দেয়াল ধ্বসে শিশুর মৃত্যু ॥ প্রতিবাদে চা বাগান ম্যানেজারের বাংলো ভাংচুর ॥ ম্যানেজারসহ আহত ৫ ॥ চা বাগানে কাজ বন্ধ
বিকুল চক্রবর্ত্তী॥ শ্রীমঙ্গলের ভুড়বুড়িয়া চা বাগানের লেবার কলনীর সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে মারা গেছে ৩য় শ্রেণীর একছাত্র। এ ঘটনায় ফোঁসে উঠেছে চা বাগানের শ্রমিকরা।
প্রতিবাদে তারা ভাংচুর করেছে ভুড়বুড়িয়া চা বাগানের সহকারী ম্যানেজারের বাংলো ও বাগানের কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি মটর সাইকেল। আহত হয়েছেন সহকারী ম্যানেজার শফিক আহমদ, বাগান স্টাপ জোবের আহমদ ও বাগান পঞ্চাত সভাপতিসহ ৫ জন। এ ঘটনায় চা বাগানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বন্ধ রয়ছে বাগানের চাপাতা তোলার কাজ।
ঘটনার সত্যতা শিকার করে শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমান জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে এবং আবারো যাতে কোন উত্তেজনা না ছড়ায় তাই ভুড়বুড়িয়া চা বাগানকে রেখেছেন তাদের নজরদারীতে।
ভুরবুড়িয়া চা বাগানের বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি সদস্য শাওন পাশি জানান, ৫ জুন রোববার রাতে বধ্যভুমি একাত্তর এর পাশে তাদের লেবার কলোনীর গনেশ মোদীর ছেলে জিত মোদী (৯) প্রকৃতির ডাকে সারা দিলে পাকা সীমানা প্রাচীরের পাশে যায়। তখন ঐ প্রাচীরের উপরের অংশ ভেঙ্গে তার উপর পড়লে সে গুরুতর আহত হয়। আহতবস্থায় রাতেই তাকে সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৬ জুন সোমবার ভোরে সে মারা যায়।
এদিকে মারা যাওয়ার খবর চা বাগানে এসে পৌছালে বাগানের শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং তারা ম্যানেজারের বাংলো আক্রমন করে। তিনি আরো জানান, দেয়াল নির্মানের সময়ই শ্রমিকরা বাগান কর্তৃপক্ষকে বাঁধা দিয়েছিলো। কিন্তু বাঁধা উপেক্ষা করে এটি নির্মান করে।
শ্রমিকরা জানায়, এই দেয়ালটি পাকা সড়কের পাশ দিয়ে এর ভিতরে তাদের দোকানও পড়েছে। দেয়াল স্থাপন নিয়ে এমনিতেই তারা ক্ষুব্ধ ছিলো বাগান কর্তৃপক্ষের উপরে।
এ ব্যাপারে বাগানের ডিজিএম জিএম শিবলী জানান, রাতে তাদের এক শ্রমিকের ছেলে নির্মানাধীন দেয়ালের উপর উঠে সেখান থেকে দেয়ালের অংশ বিশেষসহ পড়ে গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে সাথে সাথে কোম্পানীর গাড়ি দিয়ে তিনি তাকে সিলেটে উন্নত চিকিতসার জন্য প্রেরণ করেন। সকালের দিকে ছেলেটি মারা গেলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে তাদের সহকারী ব্যবস্থাপকের বাংলো আক্রমন করে। এ সময় আহত হন সহকারী ব্যাবস্থাপক শফিক, স্টাপ জোবের ও বাগান পঞ্চাত সভাপতিসহ আরো কর্মচারী। ভাংচুর করা হয় বাংলোর দরজা জানালা, আসবাব পত্র, ম্যানেজার ও স্টাপের মটরসাইকেল। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসে ম্যানেজার ও আহতদের উদ্বার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তিনি নিহত শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের সান্তনাদেন এবং নিহত শিশুটির সতকারের জন্য প্রাথমিক ভাবে নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তাও করেন।
এই মুহুর্তে পরিস্থিতি শান্ত হলেও কোন শ্রমিক কাজে যোগ দেয়নি বলেও তিনি জানান।
মন্তব্য করুন