আহমদ এরদোয়ান
তুরস্কের উত্তর-পূর্বে
ছোট্ট একটি প্রদেশ,
কৃষ্ণ সাগরের পাশে
মনোরম পরিবেশ।
এখানে জন্মে ছিলেন
আহমদ এরদোয়ান
রেজেপ তায়িপের পিতা
ছিলেন অতি মহান।
চাকুরীর আশায় যান
ইস্তাম্বুল শহরে,
১৩ বছর বয়সে
প্রথম বিয়ে করে।
এসেছিল দুই সন্তান
আলোকিত ঘর,
ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল
আপন হল পর।
সেরা ছাত্র
পিয়ালে পাশা প্রাইমারির
তখন তিনি ছাত্র,
শিক্ষক বলেন নামায পার কে?
একজন দাঁড়ায় মাত্র।
সবার সামনে পড়েন নামায
অবাক হলো সবে,
বুঝে ফেলে সবাই সেদিন
অনেক বড় হবে।
এই ছাত্রটি রেজেপ তায়িপ
বিদ্যালয়ের সেরা,
সারা সময় থাকত হৃদয়
স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা।
লেখাপড়ায় মনোযোগী
শ্রেণির সভাপতি,
তিনি তো সকল শিক্ষকদের
ছিলেন প্রিয় অতি।
সব সময় প্রথম
ইমাম হাতিব স্কুল-কলেজ
ভর্তি রেজেপ হলেন,
সেরা ছাত্র আমি হবো
বিশ্বাস বুকে বলেন।
সকল প্রতিযোগিতায় তিনি
সবার চেয়ে সেরা,
স্বপ্ন দিয়ে সকল সময়ে
থাকত হৃদয় ঘেরা।
কোরআন তেলাওয়াত আবৃত্তিতে
তিনি প্রথম ছিলেন
তুরস্কের সব মানুষ কে তিনি
অবাক করে ছিলেন।
পরাজয় হয়নি কখনো
তিনি কোন খানে,
বিশ্ব সেরা হবেন তিনি
তখন সবে জানে।
রেজেপ তায়িপের জন্ম
পিতা আহমদ এরদোয়ান
আবার করেন বিয়ে,
এলেন তাদের ঘরে রেজেপ
আলো জ্বেলে দিয়ে।
ঊনিশ শত চুয়ান্ন সাল
ফ্রেব্রুয়ারি মাস,
তাঁকে নিয়ে পিতা মাতা
দেখলেন কত আঁশ।
২৬ তারিখ ছিল সেদিন
বার ছিল রবি,
বড় হয়ে পাল্টে ছিলেন
তুরস্কের ছবি।
পিতা ছিলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন
কাছিম পাশায় থাকতেন
তানযিলে হানিম মায়ের নাম
স্বপ্ন তাঁরা আঁকতেন।
হকার রেজেপ
অবস্থা খুব ভাল ছিলনা
বড় ছিল পরিবার,
ভাবেন তিনি কি করা যায়
হলেন তিনি তাই হকার।
সিমিট, পানি, লেবু বিক্রি
ছুটির দিনে করতেন,
সেরা হওয়ার জন্য তিনি
বেশী বেশী পড়তেন।
আয়ের টাকার কিছু অংশ
বাবার হাতে দিতেন,
বিদ্যালয়ের বেতন দিতে
কিছু অংশ নিতেন।
মহান ব্যক্তির প্রথম জীবন
কষ্টের ছিল কত,
সাহস বুকে পার হয়েছেন
বাঁধা শত শত।
পাঠাগার
ছেলে বেলায় বই কিনতেন
পাঠাগারের জন্য,
তায়্যিপ এরদোয়ান পাঠাগার
করে হলেন ধন্য।
সেরা লেখকের সেরা বই
ছিল পাঠাগারে,
পড়ার ইচ্ছে হলে কারো
বলত গিয়ে তাঁরে।
রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি
পাঠাগার করেছেন,
দক্ষ মানুষ হওয়ার জন্য
সেরা বই পড়েছেন।
দক্ষ মানুষ তৈরি করতে
করেছেন তিনি চেষ্টা
সারা সময় স্বপ্ন দেখেন
সেরা হবে দেশটা।
রাজনীতিতে তায়িপ
এম. টি. টি. বি ছাত্র দলে
অংশ গ্রহণ করেছেন,
লেখাপড়ার করেন নি ক্ষতি
মনোযোগে পড়েছেন।
লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে
দলের কাজে যেতেন,
দেশের জন্য ভাবতে পেরে
আনন্দ খুব পেতেন।
ড. নাজমুদ্দিন এববাকান
দলের প্রধান ছিলেন,
সুন্দর স্বদেশ গড়বেন তাঁরা
সবাই শপত নিলেন।
ইস্তাম্বুল প্রদেশের তিনি
হলেন সভাপতি,
সব মানুষকে ভালবাসেন
করেন নাকো ক্ষতি।
ফুটবলার রেজেপ
ছেলেবেলায় ছিলেন তিনি
খুব ভাল খেলোয়ার,
ইস্তাম্বুলে হয়ে ছিলো
মোটামোটি নাম তাঁর।
খেলে খেলে কিছু কিছু
করতেন তিনি রুজি,
দিনে দিনে হতে চলল
পা দুখানা তাঁর পুজি।
বাবা তাঁকে কড়া ভাবে
নিষেধ করিলেন,
খেলাধুলা ছেড়ে দিয়ে
আবার পড়িলেন।
খেলোয়ার না হয়ে তিনি
আজকে রাষ্ট্রপতি,
সারা বিশ্বের সবার কাছে
প্রয়োজনীয় অতি।
রেজেপের কর্মজীবন
আশি সালে সেনাবাহিনী
ক্ষমতায় এসেছিল,
সকল রাজনৈতিক দল গুলি তাই
বন্দ করিয়া দিল।
রেজেপ তায়্যিপ এরদোয়ান
লেখাপড়া শেষ,
চাকুরী খুঁজতে শুরু করেন
পেলেন চাকুরী বেশ।
বেসরকারি প্রতিষ্টানে
কর্মকর্তা একজন,
পরামর্শ দিতেন তিনি
কর্মক্ষেত্রে তখন।
একে, একে অনেক বছর
চাকুরী তিনি করেন,
সময় সুযোগ পেলেই তিনি
ভাল সব বই পড়েন।
রেজেপের বিয়ে
বয়স যখন ২৩ বছর
দলের সভাপতি,
ভালবাসা ছিল শুধু
স্বদেশের প্রতি।
এমিনে নামক এক নারী
মহিলা দলে ছিলেন,
রেজেপ তাঁকে বিয়ে করে
আপন করে নিলেন।
অনেক স্বপ্ন বুকের মাঝে
স্বদেশ নিয়ে তাঁর,
স্বপ পূরণ হবে কবে
ভাবেন বরং বার।
দুটি ছেলে দুটি মেয়ে
একে একে এলো,
যেতে যেতে রেজেপ তায়্যিপ
দেশের পাশে এলো।
এমিনে এরদোয়ান
ছেলে বেলা থেকে তিনি
রাজনীতি করিতেন,
লেখাপড়ার হয়নি ক্ষতি
সব সময় পড়িতেন।
বিয়ের পরে রাজনীতিতে
স্বক্রিয় থেকেছেন
স্বামী রেজেপ তায়্যিপ পাশে
সব সময় রেখেছেন।
অসহায় মানুষের পাশে
তিনি ছুটে যাচ্ছেন,
অভাব মুক্ত বিশ্ব গড়তে
তাঁরা এখন চাচ্ছেন।
রেজেপ তায়্যিপ এরদোয়ানের
প্রধান উপদেষ্টা,
বিশ্ব শান্তি আনতে তাঁরা
করে চলছেন চেষ্টা।
সামরিক প্রশিক্ষণ
বয়স যখন আঠারো হয়
শুধু যুবক যারা,
সামরিক প্রশিক্ষণে
যাবে তখন তাঁরা।
জন্মের পর আইডি কার্ড
সবার করতে হবে,
আঠারো হলে চিঠি যায়
যেতে হবে সবে।
তুরস্কের সব যুবকেরা
সৈনিক হয়ে যাচ্ছে,
যোগ্য মানুষ গড়ে তুলতে
সরকার যে চাচ্ছে।
রেজেপ তায়্যিপ এরদোয়ান
তিনি গিয়েছিলেন,
সাব-লেফটেনেন্ট হিসাবে
শিক্ষা নিয়ে ছিলেন।
রাজনীতি
দেশের সেবা করতে তিনি
রাজনীতিতে এলেন,
রেজেপ তায়্যিপ সব মানুষকে
আপন করে নিলেন।
আপন স্বার্থ ভুলে গেছেন
সবার আগে দেশ,
দেশের জন্য আপন জীবন
করে যাবেন শেষ।
জনগনের দুঃখ দেখলে
হৃদয় কেঁদে ওঠে,
দুঃখ মোচন করতে তিনি
স্বার্থ ভুলে ছোটে।
সব মানুষকে ভালবেসে
সামনে তিনি চলছেন
বিশ্ব শান্তি আসবে বিশ্ব
সবল সময় বলেছেন।
মেয়র
ইস্তাম্বুলের মেয়র হলেন
রেজেপ তায়িপ এরদোয়ান,
আসন গ্রহণ করে তিনি
দ্দরু করেন আভিযান।
ময়লার পাহাড় হঢেছিল
ইস্তাম্বুল শহরে,
পরিবেশ ও নষ্ট ছিল
গাড়ি ঘোড়ার বহরে।
পানিশূন্য শহর ছিল
সংকট ছিল গ্যাস
জনগনের দুর্ভোগ থাকত
বছরের সারা মাস।
প্রথম ১০০ দিনে তিনি
করলেন সমস্যা দূর,
সবার নেতা, সবার মেয়র
উঠলো শহরে সূর।
কারাবরণ
তুরস্কের শির্ট শহরে
কবিতা পড়লে,
বড় বড় শয়তানেরা
মামলা তাই করলেন।
শয়তানেরা করল বিচার
কারাগারে দিলেন,
হাঁসতে হাঁসতে ১২০ দিন
তিনি মেনে নিলেন।
জেলের ভিতর থেকে তিনি
রাজনীতি করতেন,
সকল শয়তানের বিরুদ্ধে
প্রতিরোধ গড়তেন।
অবশেষে মুক্তি পেলেন
ঐ কারাগার থেকে
এখন এমন কাজ করিলেন
অবাক সবাই দেখে।
প্রধান মন্ত্রী
২০০১ সাল ১৪ আগষ্ট
একে পার্টি করলেন
নির্বাচন করতে পারবে না
বিপদে তাই পড়লেন।
অবশেষে একে পার্টির
মহা বিজয় এলো,
বড় বড় দলগুলি সব
সবাই হেরে গেল।
অবশেষে সুযোগ দিলেন
নির্বাচন করার তাই,
শির্ট প্রদেশে আসন ছাড়া
আর আসন খালি নাই।
বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন
রেজেপ তায়্যিপ এরদোয়ান,
প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি
শুরু করেন অভিযান।
প্রেসিডেন্ট
রেজেপ তায়িপ এরদোয়ান
তিনি ভোটে দাঁড়ান,
জনগনের পাশে গিয়ে
হাতটা শুধু বাড়ান।
জনগনের আপন মানুষ
তাইতো ভোট দিলেন
বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে
দায়িত্ব নিলেন।
জয়ের পর বিশ্ব থেকে
অভিন্দন আসে,
তুরস্কের সব জনগনে
আনন্দে তাই ভাসে।
আপন স্বার্থ ভুলে গিয়ে
দেশের সেবা করছেন,
দিনে দিনে বিশ্ব সেরা
আপন স্বদেশ গড়েছেন।
একটি কালোরাত
২০১৬ সাল ১৫ জুলাই
কালো রাত্রি ছিল,
কিছু সামরিক বাহিনী
ক্যুঃ যে করে দিল।
রেজেপ তায়্যিপ ঘোষণা দেন
স্বদেশ ভালোবাসেন?
আমরা সবাই রাস্তায় নামব
তাড়াতাড়ি আসেন।
মিনিট দশেক পরে রাস্তায়
হাজার হাজার লোকজন,
সেনা ট্যাঙ্কের সামনে তাঁরা
শুয়ে পড়েলে তখন।
অবশেষে ব্যর্থ হল
গুলেনের বাহিনী,
ইতিহাসে অমর হয়ে
থাকবে এ কাহিনী।
বিশ্ব শান্তি
হকার থেকে প্রেসিডেন্ট আজ
রেজেপ তায়িপ এরদোয়ান,
অন্যায় মুক্ত বিশ^ গড়বেন
চালাচ্ছেন অভিযান।
মন্দ লোকের বিরুদ্ধে আজ
কথা বলছেন তাই,
বুকের মাঝে সাহস আছে
ভয়ের কারণ নাই।
বিশ্ব শান্তি আনার জন্য
চেষ্টা তাই করছেন,
মন্দ লোকের বিরুদ্ধে আজ
প্রতিরোধ গড়েছেন।
মহান আল্লাহ পাশে আছেন
বিশ্ব শান্তি আনিবেন,
অন্যায় করে টেকা যায় না
মন্দ লোকরা জানবে।
লেখকঃ
সুমন বিপ্লব
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান
ড. মঞ্জুশ্রী একাডেমী
আকিলপুর, পরগনাবাজার , বিশ্বনাথ , সিলেট – ৩০৮৩
মোবাঃ ০১৩১৫৬৫৬১২৫(সুমন বিপ্লব)
মন্তব্য করুন