তরুণ সমাজে অনলাইন জুয়ার ভয়ংকর ছোবল

বশির আহমদ : মোবাইল অ্যাপের প্রলোভনে যুবকেরা আসক্ত, পরিবারে নেমে আসছে বিপর্যয়।
দেশের অনেক তরুণ এখন ভয়ংকর এক আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে, এটি হলো অনলাইন জুয়া ও বেটিং। ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা এই বিপদের দরজা খুলে দিয়েছে। সেই দুনিয়ায় তারা প্রবেশ করছে কৌতূহল থেকে, কিন্তু বেরিয়ে আসতে পারছেনা প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে।
মোবাইল ফোনের ব্রাউজার ব্যবহার করে জুয়ার বহু বিদেশি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ব্যবহার করে তরুণরা সহজেই খেলে যাচ্ছে মোবাইলে জুয়া। খেলার পক্রিয়া সহজ হওয়ায় অন্যরা বুঝতে পারেনা।আর এই সুযোগটিই নিচ্ছে অনলাইন জুয়াডুরা।
প্রথমে অল্প টাকায় শুরু করলেও ধীরে ধীরে তারা বড় অঙ্কের টাকায় জড়িয়ে পড়ে এবং একসময় সব হারিয়ে ফেলে।
এই আসক্তি শুধুমাত্র ব্যক্তির ক্ষতি করছে না, উদ্ভিগ্ন করছে পুরো পরিবারকে। অনেক তরুণ ঋণে জড়িয়ে পড়ছে, কেউ চুরি বা প্রতারণায় নামছে, কেউ হতাশায় আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
বাংলাদেশের আইনে জুয়া ও বেটিং সম্পূর্ণ অবৈধ, কিন্তু বিদেশি সার্ভার, ভিপিএন ও ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে এসব সাইট সহজেই ব্যবহার করে নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও মূল উৎস বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিতেও জুয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তি ও ভাগ্য নির্ধারণের শর ব্যবহার শয়তানের অপবিত্র কাজ, তোমরা এসব থেকে বিরত থাকো। (সূরা আল-মায়িদা: ৯০)
অনলাইন জুয়া বন্ধ করতে, সরকারি নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলতে হবে এবং পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ একযোগে কাজ করতে হবে।
অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের অনলাইন ব্যাবহারের দিকে নজর রাখা এবং তাদের খেলাধুলা, স্কাউটিং, ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে যুক্ত করে দেওয়া।
মোবাইলে জুয়ার অ্যাপ বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা সময়ের দাবী। আইনশৃঙ্খলা সংস্হা গুলো কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে, তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে হবে,নতুবা পরিনতি ভয়াবহ হওয়ার আশংকা করছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
সুতরাং অনলাইন জুয়ার লাগাম এখনই টানতে হবে নতুবা ভবিষ্যতে প্রযুক্তি নির্ভর নানা অপরাধ ঘটতে পারে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে।
লেখক, বশির আহমদ, সেক্রেটারী,টি.এফ.কে.
মন্তব্য করুন