বৃটিশ ভারতে উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে মুসলিম জাতীয়তা বাদী চেতনার কথা সাহিত্যিক ডা. লুৎফুর রহমানঃ কর্ম্ম ও জীবন দর্শনঃ একশত বিশ তম জন্ম জয়ন্তির ভাবনাঃ কামনাঃ কতেক বিনীত প্রস্তাবনা

July 26, 2017,

মুজিবুর রহমান মুজিব॥ উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বাংলা-ভারতের রাজ্য হারা মুসলিম সমাজে যখন ঘোর দুর্দিন, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অসহায়, দিশাহারা তখন বাঙ্গাঁলি মুসলমানকে ঘুম ভাঙ্গাঁর গান এবং যথাযথ পথ প্রদর্শনের উদার মানসিকতা ও মূল্য বোধ নিয়ে বাংলার সাহিত্যাকাশে ধ্রুব তারার মত ব্যাতিক্রমি জীবনবাদি কথা সাহিত্যিক লুৎফুর রহমানের আবির্ভাব। জীবন ঘনিষ্ট ও জীবনবাদি কথা সাহিত্যিক ডা. লুৎফুর রহমান মাত্র উনিশ বছরের সাহিত্য কর্ম্ম জীবনে যে ঐতিহাসিক অবদান রেখে স্বীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন তা বাংলা সাহিত্যের ভূবনে এখনও অম্লান। অমলিন। সমুজ্জল। ১৮৯৭ থেকে ১৯৩৬ সাল মাত্র ৩৯ বৎসরের খন্ডিত যাপিত মানব জীবন তাঁর। বড় অসময়ে অবেলায় অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় নিরবে নিঃশব্দে চলে গেছেন তিনি। এক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর, ছন্দের প্রবর্তক ডাকসাইটে জমিদার নন্দন মাইকেল মধুসুদন দত্তের করুন মৃত্যোর কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।
কথা সাহিত্যিক ডা. লুৎফুর রহমানের জন্ম নিয়ে লেখক-গবেষকদের মধ্যে কিঞ্চিত মত পার্থক্য থাকলেও তাঁর পুত্র নিয়ামত উল্লাহর হস্ত লিখিত জীবনী থেকে জানা যায় লুৎফুর রহমান ১৮৯৭ সালে তার মাতা মুনশী গোলাম কাদেরের গৃহে পর নান্দুয়ালী গ্রামে জন্মগহন করেন। তাঁর পিতা মাতার নাম যথাক্রমে জরদার মইন উদ্দীন আহমদ এবং শামসুন নাহার। ২০১৭ সালে এবার ডা. লুৎফুর রহমানের জন্মের একশ কুড়ি বছর পূর্ন হল।
বৃটিশ ভারতে রাজ্যহারা বাঙ্গাঁলী মুসলিম সমাজের ঘোর দুর্দিনের মাঝেও লুৎফুর রহমানের পিতা জরদার মঈন উদ্দীন অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল, বিত্ত, বেসাত জমি জিরাতের মালিক ছিলেন। আর্থীক স্বচ্ছলতা ও শিক্ষানুরাগের কারনে পিতা জরদার মঈন উদ্দিন পুত্র লুৎফরকে ইংরেজী ও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য মাদ্রাসায় না পাঠিয়ে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। বালক লুৎফর কৃতিত্বের সাথে এনট্রান্স পাশ করলে তাকে হুগলি হাজি মোহাম্মদ মহসীন কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয়। অধ্যায়নকালে যুবক লুৎফুর এর জীবনে প্রবল সাহিত্যানুরাগ এবং কতেক ঘটনা দূর্ঘটনা তার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়। স্বগ্রাম নিবাসী কিশোরী আয়েশা খাতুনের সঙ্গেঁ প্রগার প্রেম ভালোবাসা এবং সিমাহীন সাহিত্যানুরাগের কারনে লেখাপড়ায় মনযোগ না দেয়ায় যুবক লুৎফুর রহমান উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য্য হয়ে জীবনের শুরুতে মুসড়ে পড়েন। অতঃপর তিনি কৃষ্ণনগরস্থ হোমিওপ্যাথিক কলেজে ভর্তি হয়ে ১৯২১ সালে এইচ.এম.বি. ডিগ্রি লাভ করে হোমিও ডাক্তার অতঃপর শুধুই ডাক্তার হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর নামের সাথে ডাক্তার সংযুক্ত হয়ে অদ্যাবধি তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যাঙ্গঁনের ডাক্তার লুৎফুর রহমান হিসাবেই খ্যাত। স্বীকৃত।
ডা. লুৎফুর রহমানের প্রেম ও পরিনয় তার পারবারিক জীবনের আরেকটি বিয়োগান্তক ঘটনা। পিতা-মাতা কিশোর লুৎফুর রহমান এবং কিশোরী আয়েশা খাতুনের প্রেম ভালোবাসা মেনে না নেওয়াতে লুৎফুর রহমান প্রেমিকা আয়েশা খাতুনের সঙ্গেঁ প্রতারনা করেননি-তিনি পিতা-মাতার অমতেই কিশোরী আয়েশা খাতুনের সঙ্গেঁ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পিতা মাতার সংশ্রব ত্যাগ করে আলাদা ভাবে বসবাস করতে থাকেন। জাত্যাভিমানী জোতদার পিতা জরদার মঈনুদ্দীন পুত্র লুৎফুর রহমানকে প্রায় ত্যাজ্য পুত্র করে পৈত্রিক সম্পত্তি-বিত্ত বেসাত থেকে বঞ্চিত করেন। অভিমানী পুত্র প্রকৃত প্রেমিক ও আদর্শ স্বামী লুৎফুর রহমান সম্পত্তির লোভে নব পরিনীতা স্ত্রীকে পরিত্যগ করেন নি। আজীবন ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন- তবুও নতি স্বীকার করত নীতি ত্যাগ করেন নি-আপোষ করেন নি। লুৎফুর-আয়েশার সুখময় দাম্পত্য জীবনের ফসল দুই পুত্র-আবুল ফাত্তাহ-নিয়ামত উল্ল্যাহ এবং তিন কন্যা হাজেরা, হাওয়া, লুৎফুন্নেছ। জীবনযুদ্ধে বিয়োগান্তক ট্রেজেডির মহা নায়ক লুৎফর রহমানের আনন্দ-বেদনা-হাসি কান্নার চীর সাথী ছিলেন তাঁর প্রিয় জীবন সঙ্গিঁনী-আদর্শ গৃহিনী আয়েশা খাতুন।
আদর্শ মানব লুৎফুর রহমান জীবন জিবিকার প্রয়োজনে সিরাজগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাই স্কুলে শিক্ষকতা এবং হোমিও প্যাথিক ডাক্তারি করলেও তিনি ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ সার্বক্ষনিক সাহিত্যিক। বৃটিশ ভারতে অভিবক্ত বাংলার মুসলিম সমাজের দৈন্যদশা অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা-চাকরি-ব্যাবসা বানিজ্য-শিক্ষা-দিক্ষায় অনগ্রসরতা দৃষ্টে তিনি পিড়া পেতেন-ভাবিত হতেন। এই বেদনা বোধ থেকে পরিত্রান এবং মুসলিম সমাজকে অগ্রসর ও পূনর্জাগরনের লক্ষে কলম তুললেন। তিনি মনে করতেন অসির চাইতে মসি-ই শক্তিশালী। কলম সৈনিক ডা. লুৎফুর রহমানের মূল্যায়ন করতে গিয়ে ডা. লুৎফুর রহমান রচনা সমগ্রের সম্পাদক আশরাফ আলী খান উক্ত গ্রন্থে যথার্থই বলেন “মানুষের শক্তির প্রধান উৎস হচ্ছে জ্ঞান- এই ছিল ডা. লুৎফুর রহমানের গভীর বিশ^াসের বস্তু। এই লক্ষে তিনি শত অভাবের মধ্যে থাকলেও জ্ঞান আহরনের দিকে কোন কার্পন্য করেন নি। তাঁর সমগ্র রচনায় মানুষের প্রতি অপরিসীম দরদ, বেদনাবোধ ও ভালোবাসার প্রচ্ছন্ন উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। মানুৃষের চীরায়ত বেদনাবোধ আর অন্তরের গভীরের বিষয় গুলোও তার লেখনীর কল্যানে অসাধারন হয়ে উঠেছে।” তাই প্রেম মানবতা ও জীবন বাদি কথা সাহিতত্যিক ডা. লুৎফুর রহমানের সকল রচনা সমগ্রই সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব – মানুষ এবং মানুষের জীবন ও জগৎ সংক্রান্ত। জীবন বিষয়ক তার রচনা সমূহ ১. উন্নত জীবন, ২. মহৎ জীবন, ৩. উচ্চ জীবন, ৪. মানবজীবন, ৫. ধর্ম জীবন, ৬. মহা জীবন, এবং ৭. যুবক জীবন। ডা. লুৎফুর রহমানের গদ্য সমূহ বিষয়ভিত্তিক, উচ্চ মার্গীয় হলেও সহজ সরল ভাষায়। মানুষের মৌলিক চিন্তাধারার ফলও ফসলকে প্রবন্ধ বলা হলে ডা. লুৎফুর রহমান যথার্থ বঙ্গীঁয় মুসলিম সমাজকে ঘুম ভাঙ্গাতে, সমাজ প্রগতিকে এগিয়ে নিতে তিনি সার্থক ও সফল। এখনও তার গদ্য গুলি ভাবনা-চিন্তার জগতের খোরক জোগায়, আত্ববিশ^াস ও আত্ব জিজ্ঞাসায় বলিয়ান করে।
ডা. লুৎফুর রহমানের পাঁচ খানা উপন্যাস সমগ্র- ১. বাসর উপহার, ২. প্রীতি উপহার, ৩. পথ হারা, ৪. রানী হেলেন, ৫. রায়হান-এ- জীবন ও জগতের কথাই বলা হয়েছে। তার সাতখানা ছোট গল্প সমগ্র ১. অহিংসা, ২. পলায়ন, ৩. রোমান্টিক বিয়ে, ৪. রানী, ৫. রাজপথ, ৬. অমাবশ্যা এবং ৭. ফিরে যাও ফিরে যাও- ও- তাই।
ডা. লুৎফুর রহমানের অপ্রকাশিত রচনার মধ্যে মানুষের পুজা, সমাজ, উর্দূ ও বাংলা সাহিত্য, মঙ্গঁল ভবিষ্যত, দূঃখের রাত্রি, ওয়াটার লু, মুসলমান, স্বর্গ তুরন গল্পের দুটি প্রবন্ধ এবং ডা. লুৎফুর রহমান রচনা পঞ্জী উল্লেখ যোগ্য। তাঁর অপ্রকাশিত রচনা সমগ্র প্রকাশ করা উচিত। এ ব্যাপারে জাতীয় প্রতিষ্টান বাংলা একাডেমী এগিয়ে আসা উচিত। আর্থীক অস্বচ্ছলতা, অভাব, অনটন, মানষিক অশান্তি, মনঃ কষ্ট ও মন বেদনায় জীবন শিল্পী ডা. লুৎফুর রহমান অসুস্থ হয়ে পড়েন- তাঁর শরীরে বাসা বাধে ক্ষয় রোগ যক্ষা। ব্যাধিটি ঘাতক ও দূরারোগ্য। অর্থাভাবে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহন সম্ভব ছিলনা। ১৯২৫-২৬ সালের দিকে যক্ষা মারাত্মক আকার ধারন করলে তাঁর শ^শুর রেল কর্ম্মচারি মোহাম্মদ বদরুদ্দীন তাকে কোলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। তখন এখনকার মত চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি, হাসপাতাল ও ডাক্তার ছিলেন না। ডাক্তার লুৎফুর রহমানের অসুস্থতা, অভাব অনটন, অসুস্থাবস্থার একটি জীবন চিত্র ফুটে উঠেছে বিখ্যাত ও বিশিষ্ট কবি গোলাম মোস্তফার -আমার চিন্তাধারা- নামক প্রবন্ধে। মার্চ ১৯৬২ সালে প্রকাশিত উক্ত প্রবন্ধে কবি গোলাম মোস্তফা লিখেছেন -“ অবস্থার চাপে পড়িয়া বাধ্য হইয়া তিনি কলকাতা ছাড়িয়া দেশে গেলেন। দূর্ভাগ্য বশতঃ তাঁহার পিতার সহিত সদ্ভাব ছিলনা। পুত্রের সব অদ্ভূত খেয়াল হয়ত পিতার ভালো লাগে নাই তাই তিনি লুৎফুর রহমান সাহেবকে কোনরূপ সাহায্য করেন নাই। ডা. সাহেব ও ত্যজ্য পুত্রের মত পিতার কোন সাহায্য না লইয়াই স্বাধীন ভাবে জীবন কাটাইয়া গিয়াছেন। ডা. লুৎফুর রহমানের চরিত্রের এ ও একটা প্রধান বৈশিষ্ট। তাহাদের বাড়িতে মস্ত বড় দালান, তাহার পিতার অবস্থা খুবই ভালো, জমা জমি, টাকা কড়ি, যথেষ্টই তাহাদের ছিল, কিন্তু নিজের ব্যাক্তিত্বকে বিসর্জন দিয়া তিনি ঐ অগাধ সম্পত্তি ভোগ করিবার জন্য লালায়িত ছিলেন না। তিনি পিতাকে ত্যাগ করিলেন, কিন্তু স্বীয় মত ও পথ-কে ত্যাগ করিলেন না। স্বগ্রাম হইতে পাঁচ মাইল দুরবর্তী মাগুরায় আসিয়া তিনি একটি কুটির বাধিলেন এবং কতিপয় পেটেন্ট ঔষধ আবিষ্কার করিয়া তাহারই উপর নির্ভর করিয়া দিন কাটাইতে লাগিলেন। এই অবস্থায় একদিন তাহার মাগুরার বাসায় গিয়াছিলাম। তখন তিনি রুগে শয্যাগত। তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে মেয়ের তখন কি কষ্ট-” কবি গোলাম মোস্তফার এই বর্ননার পর ডা. লুৎফুর রহমানের দূঃখ দূর্দশা অভাব অনটন প্রসঙ্গেঁ অধিক আলোচনার প্রয়োজন নেই।- তাঁর সার্বিক অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
প্রেম মানবতা জীবন বাদি আদর্শ সাহিত্যিক ডা., লুৎফুর রহমান মধ্য বয়সে এসেই দারিদ্রের কশাঘাতে জর্জরিত হয়ে জীবন যুদ্ধে বিপর্যস্থ্য পরাজিত হন- কিন্তু অন্যায়ের কাছে অসত্যের কাছে আত্বসমর্পন করেন নাই। কবি গোলাম মোস্তফার জীবন ঘনিষ্ট রচনায় তাই প্রমান পাওয়া যায়। জীবনের শেষ দশক অবর্ননীয় দূঃখ কষ্ট শেষে অর্ধাহারে-অনাহারে ১৯৩৬ সালে এই মায়াময় পৃথিবী থেকে চীর বিদায় নেন ডা. লুৎফুর রহমান। তাঁর শেষ নিঃশাসের সাথে সাথে একটি কষ্ট ও বেদনাময় মানব জীবনের অবসান ঘটে। ডা. লুৎফুর রহমানের সাহিত্য কর্ম্মের সময় ছিল মাত্র ১৯ বৎসর। এই ক’বছরে বাংলা গদ্য সাহিত্যে যে প্রজ্ঞা ও পান্ডিত্য, মেধা ও মননের ছাপ রেখে গেছেন তা-ঐতিহাসিক- সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
একটি কঠিন ও বৈরী সময়ের সাহিত্য সেবী ছিলেন ডা. লুৎফুর রহমান। তখন ইংরেজ আমল। বঙ্গীঁয় মুসলিম সমাজের ঘোর দূর্দিন। তখন এখনকার মত এত পত্র পত্রিকা-মিডিয়া-সুশীল সমাজ, প্রকাশনা সংস্থা ছিলনা- এতসব কঠিন বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে জীবনকে জয় করার চেষ্টা করেছেন জীবন শিল্পী ডা. লুৎফুর রহমান। কিন্তু মৃত্যুকেত তিনি জয় করতে পারেন না, কারন এটা খোদায়ী বিধান। তাকে মৃত্যোকে আলিঙ্গঁন করতেই হয়েছে। সু-সাহিত্যক ডা. লুৎফুর রহমানের অপ্রকাশিত রচনা সমূহ প্রকাশের জন্য বাংলা একাডেমী এবং আমাদের জাতীয় প্রকাশনা সংস্থা সমূহের এগিয়ে আসা উচিত। কারন এটিও আমাদের জাতীয় দায়িত্ব।
এবার তাঁর জন্মের একশত বিশ বছর পূর্ন হল। এই বর্ষ পূর্তিতে তার উজ্জল স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
[ষাটর দশকের লেখক ও কলামিষ্ট। মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র এডভোকেট হাই কোর্ট। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাব]

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com