“প্রবেশঃ অনুপ্রবেশ সমাচার”
মুজিবুর রহমান মুজিব ॥ প্রবেশ- অনুপ্রবেশ প্রসেঙ্গঁ বাংলাদেশের সমকালীন সমাজ ও রাজনীতি উত্তপ্ত না হলেও বহুল আলোচিত-সমালোচিত। তর্কিত। বিতর্কিত। স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দেশের প্রাচীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা একদশকাধিক কাল যাবত ক্ষমতায়। হামেশাই ক্ষমতাসীন দলের পালে হাওয়া এবং হালে পানি থাকে। নিয়ম না হলেও এটাই প্রচলিত প্রথা। পাকিস্তানী ঔপনেবেশিক শাসনামলে পাকিস্তানের প্রাষাদ ষড়যন্ত্রী প্রতিক্রিয়াশীল কায়েমী স্বার্থবাদি চক্র ও সরকার গণতন্ত্রকে নির্বাসন দিয়ে মিলোক্রেসীর নামে ডান্ডাতন্ত্র কায়েম করে। জেল ঝুলুম নির্য্যাতনের মাঝে ও বাংলা ও বাঙ্গাঁলিদের অকৃত্তিম বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগকে সংঘটিত করে দেশব্যাপী গণতান্ত্রীক আলোন্দালন অব্যাহত রেখে ছয়ষট্টি সালে বাংলা ও বাঙ্গাঁলির মুক্তি সনদ, পূর্ন প্রাদেশিক স্বায়ত্ত শাসনের দাবী সম্বলিত ঐতিহাসিক ছয় দফা কর্মসূচী ঘোষণা করলে বাংলার সমাজ ও রাজনৈতিক জীবনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঐতিহাসিক ছয় দফা কর্মসূচী ব্যাপক ছাত্র-যুব-জন সমর্থন পেলে পাক ফৌজি সরকার বঙ্গঁ শার্দূল শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সহকর্মিদের বিরুদ্ধে কুখ্যাত আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করেন। ইতিপূর্বে পাক ফৌজি সরকার এভডো, প্রডো, ডি.পি. আর, জাতীয় গণবিরোধী কালাকানুন জারী করে মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোল প্রতিহত করেন। সেই সময় বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিব সহ সকল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কারাগারে আটক থাকলে একমাত্র আমেনা বেগম বাহিরে থাকায় আওয়ামী লীগের অফিসে বাতি জ্বালাতেন। তখন গণমানুষের দল আওয়ামী লীগের দুর্দিন থাকায় দলে প্রবেশ অনুপ্রবেশ ঘটে নি, বরং নেতৃবৃন্দ জেলে, মফস্বল পর্য্যায়ে দলের শক্ত সাংঘটনিক কাঠামো ও কার্য্যক্রম ছিল না। পঁচাত্তোরের পনেরোই আগষ্ট নিজ বাস ভবন ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরের বাস ভবনে স্বাধীনতার মহান ¯’পতি, মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে নির্মম ভাবে হত্যা, তাঁর সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীবর্গকে হত্যা ও গ্রেফতার, তেছরা নভেম্বর জেল খানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতা শূন্য ও কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হয়। পঁচাত্তোর থেকে ছিয়ান্নব্বই সুদীর্ঘ একুশ বৎসর আবার কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হয়। বঙ্গঁবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ প্রধান এর দায়িত্বভার নিয়ে আওয়ামী লীগ-কে শক্তিশালী ও পূণর্ঘটনে আত্ব নিয়োগ করেন। তখন আওয়ামী লীগে প্রবেশ-অনুপ্রবেশ ঘটেনি। বরং দলে বহুধা বিভক্তি এসেছে। কোরবান আলী-শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ প্রভাবশালী ও প্রবীন নেতা দলত্যাগ করেছেন।
সমর্থক সদস্য- কর্মি-সংঘটক-নেতৃবৃন্দই একটি দলের প্রাণ। একটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মি-সমর্থকগণ দলকে সংঘটিত-শক্তিশালী করতঃ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা প্রাপ্ত হন- দলীয় আদর্শ, নির্বাচনী এজেন্ডা-ইশতেহার বাস্তবায়ন করতঃ দেশ ও জাতিকে উন্নতি অগ্রগতি ও প্রগতির পথে নিয়ে যান। একটি রাজনৈতিক দলের নীতি, আদর্শ, দলের নেতার দেশ প্রেম বলিষ্ট ও গতিশীল নেতৃত্ব, ত্যাগ-তিতিক্ষা দৃষ্টে সাধারণ জনগণ আকৃষ্ট হয়ে সেই দলে যোগদান করেন। স্বস্বদলের মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করেন দেশ সেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। রাজনীতি-রাজা-বাদশাহর নীতি নয়, রাজনীতি’ কে- জননীতি বলা যেতে পারে। কারণ এই রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র- সরকার পরিচালিত হয়ে থাকে। চলার পথে রাজনীতিবিদদের ভূলত্রুুটি থাকলেও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ফল-ফসল বৃটিশ বিরোধী অভিবক্ত ভারত বর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলন-বৃটিশ বিতাড়ন, ভারত বিভক্তি, পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যোদ্বয়।
উনিশশ-একাত্তোর সালের সসস্ত্র-স্বাধীনতা সংগ্রাম-একটি রাজনৈতিক আন্দোলনের ফল ও ফসল। সত্তোর সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ নিরঃঙ্কুশ সমর্থন জানালেও পাক ফৌজি প্রেসিডেন্ট লেঃ জেঃ এ.এম.ইয়াহিয়া খাঁন সংখ্যাগরিষ্ট দলের নেতা বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পঁচিশ মার্চ একাত্তোরে অপারেশন সার্চ লাইট নামে গনহত্যা শুরু করলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ অনিবার্য্য হয়ে উঠে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ছিল একটি রাজনৈতিক যুদ্ধ-জন-যুদ্ধ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দেশের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগ শ্রেণি চরিত্র গত ভাবে একটি মাল্টিক্লাশ পেটিবুর্জুয়া পার্টি।
বাংলাদেশের জামাতে ইসলামী, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি সি.পি.বি. শ্রেণীভিত্তিক: সংঘটন-ক্ল্যাশিক্যাল ওর্গেনাইজেশন, ই”ছা করলেই জামাত,সি.পি.বি. চীন রাশিয়া পহ্ণী বামঘরানার কমিউনিষ্ট দল সমূহে সদস্যপদ পাওয়া যায় না, কর্মকর্তা হওয়া যায় না। ক্ল্যাশিক্যাল পার্টি সমূহে সদস্যপদ প্রাপ্তি এবং কর্মকর্তা হওয়ার ব্যাপারে দলীয় বিধি-বিধান-প্রক্রিয়া এবং গঠনতান্ত্রীক পদ্ধতি রয়েছে। এসব বিধি বিধান ও প্রক্রিয়া পদ্ধতি অনুসরন না করে দলীয় সদস্যপদ প্রাপ্ত হলেও দলীয় পদ প্রাপ্তি, কর্মকর্তা নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন। তবে ক্ষমতাসীন দলেই মৌসুমী পাখিদের ওড়াওড়ি বেশি থাকে। ক্ষমতাসীন দলের কর্তা-নেতা হলে ঘুষ না খেলে দূর্নীতি না করেও কতেক সামাজিক-রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। পাওয়ার পার্টির নেতা হলে বেশুমার সালাম-আদাব মিলে মনটা ফুরফুরা চনমনে থাকে। অফিস-আদালতে গেলে খাতির তোয়াজ পাওয়া যায়। এককালীন একজন জাদরেল আমলা ডক্টর আনোয়ার কামালের ভাষায়-উই ওলয়েজ স্যেলুট দি রাইজিং সান। দলবদল করে ক্ষমতাসীন দলে আশ্রয় নেয়া প্রসঙ্গেঁ দলত্যাগী ও যোগদানকারী কতেক নেতা-কর্মির মতে, তাঁরা দল বদল করেন না, সরকার বদল হয়, তাঁরা নিজেদেরকে-প্রেজেন্ট গর্ভনমেন্ট পার্টি পি.জি.পি. বলে দাবী করেন।
দেশব্যাপী বর্তমানে ঘুষ-দূর্নীতি-অনাচার-দুরাচার এর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা এই শুদ্ধি অভিযানে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষনা করেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবও তাঁর নিজস্বভাব ও ভঙ্গিঁমায় সু-ষ্পষ্টভাবে দলীয় নেতা-কর্মিদের ছাড় না দেয়ার দ্যের্তহীন ঘোষনা দিয়েছেন। দেশব্যাপী বানিজ্যায়ন-দূবৃত্তায়ন-দূর্নীতি ও ভ্রষ্টাচারের জোয়ার চলছে। মাস্তান, সন্ত্রাসী, চাঁদা বাজদের অত্যাচারে নিরীহ দেশবাসী দিশাহারা। ক্যেসিনো কালচারে রাজধানীর ক্রীড়াঙ্গঁন কলুসিত। আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার কৃতদের অধিকাংশই শাসক দল এর সহযোগী সংঘটন যুবলীগ এর নেতা। মিডিয়া ও পত্রিকা মারফত দেশ বাসি সেসব দৃশ্য দেখে ¯’ম্ভিত। হতবাক। শাসক দলের নাম ভাঙ্গিঁয়ে এত সব পাতি নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার ও দূর্নীতির মাধমে শতশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই দূঃসাহসী অভিযান নিঃ সন্দেহেই প্রশংসনীয়। দূর্নীতিবাজ-চাঁদা বাজদের দায় দল না নিয়ে তাঁদের অনেক কেই অনুপ্রবেশ কারি বলে আখ্যায়িত করেছেন অনেক নেতা। দলের সাধারণ সম্পাদক মাননীয় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব ইতিপূর্বে এতদ্ সংক্রান্ত কাউয়া-তত্ব দিয়ে মিডিয়া মহলে আলোচিত হয়েছিলেন। -কাউয়া- সমাচারে সরকার, দল কিংবা জনগণের কোন উপকার হয় নি। যুবলীগের বয়োঃবৃদ্ধ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও আদি ও অকৃত্তিম আওয়ামী লীগার কিংবা আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিবিদ ছিলেন না। পত্র পত্রিকার সংবাদ মোতাবেক আর্থীক ভাবে অস”ছল ওমর ফারুক চৌধুরী টেন্ডুপাতার কারবারি ও জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গেঁ জড়িত ছিলেন। আত্মীয়তার সুবাদে ও প্রভাবে চৌধুরী সাহেব পরিণত বয়সেও যুবলীগের চেয়ারম্যান দশকাধিক কাল যাবত। অথচ স্বাধীনতা উত্তর কালে স্বাধীনতা সংগ্রামী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মনি বাংলার যুব শক্তিকে জাতি গঠন মূলক কাজে সম্পৃক্ত করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ গঠন করেছিলেন। দেশব্যাপী বিপুল সাড়া জাগিয়ে ছিলেন-তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। প্রতিভাবান ও মেধাবী রাজনীতিবিদ বলিষ্ট কলম সৈনিক শেখ ফজলুল হক মনির বয়স তখন বত্রিশ-তেত্রিশ কোঠায়।
আওয়ামী যুব লীগের সত্তরোর্ধ-যুবক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী পদ বানিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দূর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতা ও পদ হারিয়ে এখন-পথহারা পাখি কেঁদে ফিরি একার-মত অব¯’া। পত্রিকান্তরে খবরে প্রকাশ তাঁর ধানমন্ডির আলীসান বাসাবাড়িতে এখন সুনসান নীরবতা। দর্শনার্থী, চামচা, মোসাহেব, ধান্দাখোর চান্দাবাজ-রা লা- পাত্তা। ওমর ফারুক চৌধুরীর রহস্যজনক নীরবতা, আশ্চয্য জনক আত্ম গোপন প্রমাণ করে তাঁর ডালমে কুচ নয় বহুত বহুত কালা হ্যায়।
প্রবেশ-অনুপ্রবেশ- এর বিষদ আইনী ব্যাখ্যা ও বর্ণনা ব্যাপক। বাংলা ভাষায় এর অর্থ ও ব্যাখ্যা পরিষ্কার। প্রবেশ মানে-প্রবেশই-এর কোন বেআইনী ব্যাখ্যা নেই। অনু প্রবেশকে-বেআইনী প্রবেশ বলা যেতে পারে। কোন ব্যক্তি গৃহস্বামির অনুমতি ব্যতিত কিংবা তাঁর অজ্ঞাতে গৃহ প্রবেশ করলে সেই ব্যক্তিকে অনু প্রবেশকারি বলা চলে। অনু প্রবেশ কারি গৃহস্বামীর অজান্তে কোন মালা মাল নিয়ে গেলে চুরি বলে। বলপূর্বক হলে ডাকাতি। এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ-লার্কিং হাউজ ট্রেসপাশ বাই নাইট, ধারা চারশত সাতান্ন, তিন শত আশি। এটি একটি গর্হিত, নিন্দনীয় তৃতীয় শ্রেণির অপরাধ।
বিভিন্ন দল থেকে শাসকদল আওয়ামী লীগে যোগদানকারীগণকে ঢালাও ভাবে অনু প্রবেশকারী বলা আইন সঙ্গঁত ভাবে সঠিক হবে না। কারণ জাতীয় পর্য্যায়ে অনেক নামজাদা রাজনীতিবিদ আছেন দল বদল করেন, বিশেষতঃ নির্বাচনের সময়। যদিও রাজনৈতিক দল সমূহ ফুটবল ক্লাব এবং রাজনীতিবিদ গণ ফুটবল প্লেয়ার নহেন। পেশাদার ফুটবল প্লেয়ারগণ হাই রেটের কারনে ক্লাব বদল করেন। বিশ্ব ফুটবলের তারকা খেলোয়াড় নেইমার, লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানা রোনাল্ড প্রমুখের ট্রান্সফার ফি- এর পরিমাণ শুনলে তাজ্জব হতে হয়। ভিমরি খেতে হয়। সকল রাজনীতিবিদগণ পেশাদার রাজনীতিবিদ নহেন। তারা দেশও জাতির সেবক, কেহ কেহ রাষ্ট্র নায়কও হন। রাজনৈতিক দল সমূহ স্পোর্টস ক্লাব নয়। দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে গণদাবী ও গণ আকাংখার প্রেক্ষিতে একেক সময় একেকটি রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে। একটি রাজনৈতিক দল একটি শক্তিশালী জাতি, কল্যান মূলক রাষ্ট্র গঠনও রাষ্ট্র পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য অবদান ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রাজনীতিবিদ গণেরও ত্যাগ তিতিক্ষার শেষ নাই। কতেক লোভী অসৎ রাজনীতিবিদ, দূর্নীতিবাজ মেরুদন্ডহীন ও নপূংশক আমলার সহযোগিতায় রাজনীতিকে কালিমা গ্র¯’ ও বিতর্কিত করলে ও রাজনীতি, রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দল সমূহের ঢালাও দোষারূপও অপবাদের অবকাশ নেই অনুচিত ও বটে। বিগত সেনা সমর্থিত, তিন উদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারামলে দেশের রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী সকলের উপর দিয়েই গর্দিস গিয়েছে আজাব হয়েছে। তখন সংসদ নির্বাচিত সরকার না থাকায় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ প্রেস ও মিডিয়াই জাতির ভরসার স্থল ছিলেন।
একটি রাজনৈতিক দলে যোগদান কারী কে অমুক ভাইয়ের আগমন শুভে”ছা স্বাগতম বলে স্বাগত জানানো হয়, ফুলেল শুভে”ছা ও জ্ঞাপন করা হয়। সেখানে অজান্তে-অজ্ঞাতে-যোগদান পদ প্রাপ্তির অবকাশ নেই। তাঁকে অনুপ্রবেশকারীও বলা চলে না। এককালের বিখ্যাত বাম রাজনীতিবিদ কমরেড নূহ আলম লেনিন আওয়ামী লীগে যোগদান করে সভাপতি মন্ডলি সদস্য হয়ে ছিলেন। বিখ্যাত বামদের মধ্যে কমরেড নুরুল ইসলাম নাহিদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত প্রমুখ স্বম্বদল ত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করে কেন্দ্রীয় পদ ও মন্ত্রীত্ব প্রাপ্ত হয়েছিলেন। সম্প্রতি বি,এন,পি’র কেন্দ্রীয় নেতা ইনাম আহমদ চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগদান করে দলের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত হয়েছেন। এদের কাউকেইত অনুপ্রবেশ কারী বলার অবকাশ নেই। অবশ্য দলের সাধারণ সম্পাদক মাননীয় সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব অনুপ্রবেশ কারীদের একটি সংজ্ঞা প্রদান করেছেন- এই ব্যাখ্যা মোতাবেক দলে যোগদানকারী সকলকে অনু প্রবেশ কারী বলা যাবে না, কিংবা অনু প্রবেশ কারী নয় বলে দাবী করেছেন। দলীয় সাধারণ সম্পাদক সাহেব এর অনু প্রবেশকারী সংক্রান্ত এই বিষদ ব্যাখ্যা ভিন্ন দলীয় যোগদানকারীদের মানসম্মান রক্ষা হয়েছে। রক্ষা করেছে।
আওয়ামী যুবলীগের এককালীন অফিস পিয়ন আনিস অনু প্রবেশ কারী ছিলেন না। দলীয় চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী দয়া পরবর্শ হয়ে তাঁকে অফিসে চাকরি দিয়েছিলেন, অতঃপর নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে অফিস পিয়ন-কে অফিস সেক্রেটারি, বানিয়ে চাঁদাবাজি ধান্দাবাজির সুযোগ করে দিয়ে তিনি দলের বদনাম কুড়ালেন- বানিজ্যায়ন-দূর্বিত্তায়ন করলেন- জাতীয় পত্র পত্রিকার সংবাদ তাই বলে। জাতীয় অনুসন্ধানী দৈনিক সমূহ এই তথ্য ফাঁস না করলে জাতি কিছুই জানতেন না।
দেশব্যাপী সরকারী শুদ্ধি অভিযানে ধৃত- অভিযুক্ত সকলেই নবাগত নহেন-অনেকেই খান্দানী ও বটেন। অপরাধি-কে অনুপ্রবেশ কারী কিংবা নবাগত বলে দায়িত্ব এড়াবার কোন অবকাশ নেই, সকল অপরাধিকে এক চোখে দেখে সকলের জন্যই সমান ভাবে আইনী প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা উচিত। ক্ষমতা লোভী পি.জি.পি. পšি’াগণকে পরিক্ষা, নিরীক্ষা না করে দলীয় পদ কিংবা মনোনয়ন দেয়া উচিত নয়। দিলে পদ বানিজ্য ও মনোনয়ন বানিজ্যের অভিযোগ উঠে যায়।
¯’ানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড.তোফায়েল আহমদ, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল প্রমুখ জ্ঞানী-গুনী ও বিজ্ঞজন পদবানিজ্য-মনোনয়ন বানিজ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত বলছেন। লিখছেন। সেখানে থেকেও আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। ক্ষমতা লোভী পি.জি.পি. মার্কা যোগদানকারী গণ প্রসঙ্গেঁও শাসক দলের সদাসর্বদা সতর্ক থাকা উচিত। নচেত মারাত্মক রকম ক্ষতির ¯’ল বটে।
[ষাটের দশকের সাংবাদিক। মুক্তিযোদ্ধা। কলামিষ্ট। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব। আইনজীবী]



মন্তব্য করুন