ভালোবাসার বাধায় ট্রেনে ঝাঁপ দিলো প্রেমিক যুগল
ইমাদ উদ দীন॥ দীর্ঘ দিন থেকে ছিল মন দেওয়া নেওয়া। কিন্তু তা দু’পরিবারের বাধায় হচ্ছিল না প্রকাশ। দুজনের মধ্যে বয়ে চলা গভীর এই সম্পর্ক সহপাঠীরা জানলেও সে ভাবে সায় দিতনা তাদের পরিবার। বরং পরিবার থেকে তাদের শাসানো হত এই প্রেম সম্পর্ক বিচ্ছেদের। কিন্তু এই বাধায় দমিয়ে রাখতে পারেনি তাদের। কিন্তু পরিবারের ভয়ে তাদের সম্পর্ক অনেকটা প্রকাশিত না হলেও গোপনে প্রেমের সম্পর্ক এগিয়ে চলছিল। পরিবার ও স্বজনদের কারনে একে অপরকে জীবনে একসাথে পাবেনা এমনটি ভেবেই অন্য পথ খোঁজছিলো দু’জন।
কিন্তু কোন পথই নিরাপদ না ভেবে হয়ত এই কঠিন সিন্ধান্ত নেয় তারা। দু’পরিবারের বাধায় পরিণতি ভালো হবেনা ভেবেই হয়ত একসাথে পরলোকে গমনের সীধান্ত। প্রতিবেশি ও সহপাঠিদের সাথে আলাপে এমন ধারনার কথা জানালেন তারা। শুক্রবার ভোরে কোন এক সময় এক সাথে এই প্রেমিক যুগল ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয় প্রাণ বির্সজন দেয়। এমন ধারনা পুলিশেরও। তবে কোন কারনে তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন সে বিষয়ও এখনো স্পষ্ট ভাবে জানাননি উভয় পরিবারের সদস্যরা। জানা যায় কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার (৩০ মার্চ) ভোরে তাদের ছিন্ন ভিন্ন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিক্ষার্থী যুগল প্রেমিকের মৃত্যুর এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এডিশনাল এসপি (কুলাউড়া সার্কেল) মো: আবু ইউছুফ। পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে নিহতরা হলেন, উপজেলার মেরিনা চা বাগানের বাসিন্দা এভেন মারাকের মেয়ে সন্ধ্যা সাংমা (১৬) ও একই এলাকার আলেকজান্ডারের ছেলে জয়ন্ত রুরাম (১৯)। হিতদের মধ্যে সন্ধ্যা সাংমা দিলদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ও জয়ন্ত রুরাম কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ভোরে ঢাকা থেকে সিলেটগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন নর্থন এলাকা অতিক্রমকালে একাধিক হর্ন বাজাতে শুনা যায়, ধারণা করা হচ্ছে ওই সময় তারা দু’জন আত্মহত্যা করতে পারে। তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে এলাকাবাসী ও সহপাঠীরা জানিয়েছেন। কুলাউড়া রেলওয়ে পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মো.মনির হোসেন জানান, নিহত দু’জন আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের। ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করতে পারে। তাদের সাথে থাকা দুটি মোবাইল ফোন ঘটনাস্থলে পাওয়া গেছে। দুইজনের জুতা, দেহাবশেষ দুই স্লিপারের ভিতরে পাওয়া গেছে জানিয়ে এডিশনাল এসপি (কুলাউড়া সার্কেল) আবু ইউছুফ বলেন, প্রেমের কারণে আত্মহত্যা করতে
পারে। উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপালে পাঠানো হয়েছে। দু’ কিশোর প্রেমিক যুগলের প্রেমের কারনে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে একই সাথে আতœহত্যায় ওই এলাকায় উৎসুক মানুষের ভীড় ছিল লক্ষণীয়। তবে প্রেমিক যুগলের মৃত্য নিয়ে জনমনে না প্রশ্ন ও কৌতুহল পরিলক্ষিত হচ্ছে।



মন্তব্য করুন