বড়লেখায় স ন্ত্রা সী হাম লায় মা মলা করায় ভাইকে দিয়ে ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতির কাউন্টার মা মলা

আব্দুর রব : বড়লেখায় সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে জামায়াত নেতার প্রবাসী ভাইসহ দলের ও স্বজনদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও দোকান লুটের ঘটনায় থানায় মামলা করার ১১ দিন পর ওই আওয়ামী লীগ নেতা ভাইকে বাদি করে আদালতে কাউন্টার মামলা করিয়েছেন।
মামলায় নবম শ্রেণির দুইজন ছাত্র (কিশোর), একজন প্রবাসি ও একজন ছাত্রদল নেতাকে আসামি করা হয়েছে। এই মিথ্যা ও হয়রানিমুলক মামলার প্রতিবাদে বড়লেখা সদর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী রোববার ৩১ আগস্ট রাতে পৌরশহরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
জামায়াতের অভিযোগ, ওয়ার্ড জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামের ভাই প্রবাসী ফয়ছল আহমদ মুন্নার ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করেনি। কিন্তু ঘটনার ১১ দিন পর উল্টো অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজ উদ্দিনের ভাই আব্দুল গণি ভুক্তভোগী জামায়াত নেতার ভাইসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা মামলা ঠুকে দিয়েছে। এই কাউন্টার মামলায় একজন প্রবাসী, এক ছাত্রদল নেতা এবং নবম শ্রেণির দুই ছাত্রকে বয়স বাড়িয়ে আসামি করা হয়েছে।
বড়লেখা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বড়লেখা সদর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি রবিউল ইসলাম সোহেল। এসময় সদর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি হাফিজ জয়নাল আবেদীন, ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি ফয়জুর রহমান, ভুক্তভোগী ৯ম শ্রেণির ছাত্র আবু বকর ও আবু সাঈদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে রবিউল ইসলাম সোহেল বলেন, গত ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালনে ডিমাই বাজারে সমবেত হয়। সমাবেশে বড়লেখা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে আজেবাজে স্লোগান, গালিগালাজ এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে। এসময় তারা সদর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর ৯নং ওয়ার্ডের সেক্রেটারি মো. সিরাজুল ইসলামের ভাই প্রবাসী ফয়ছল আহমদ মুন্নাকে বাজারে একা পেয়ে হত্যার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজ উদ্দিন খাসিয়া দা গলায় ধরে হত্যার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আব্দুল আজিজ বসু রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে মুন্না মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে আওয়ামী যুবলীগের ক্যাডাররা মিলে এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়ে কয়েকজন নিরীহ মানুষের উপর দা, রড, লাঠি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। বাজারের সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়াও আব্দুল আজিজ বসু জামায়াত নেতা মো: সিরাজুল ইসলামকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। হামলাকারীরা বেলাল আহমদের দোকানে ঢুকে নগদ টাকা ও মালামাল লুট করে নেয়। বাজারের লোকজন এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় এবং পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
রবিউল ইসলাম সোহেল অভিযোগ করেন, প্রবাসী ফয়ছল আহমদ মুন্নার ওপর হামলার পর হামলা ও লুটপাটে জড়িত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। কিন্তু পুলিশ এখনও হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজ উদ্দিন এবং জড়িত আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের গ্রেফতার করেনি। উল্টো প্রকৃত ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘটনার ১১ দিন পর ২৬ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতার ভাই আব্দুল গণি আদালতে জামায়াতের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের নামে একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করেছে। যা বর্তমানে ডিবিতে তদন্তাধীন। মামলায় নবম শ্রেণির ছাত্র আবু সাইদ ও আবু বক্করকে বয়স বাড়িয়ে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া দুই বছর ধরে প্রবাসে থাকা জুনেদ আহমদ ও ছাত্রদল নেতা সাকিল আহমদকেও আসামি করা হয়েছে।
রবিউল ইসলাম সোহেল ফ্যাসিষ্টদের দোসরদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং জামায়াত নেতার ভাইসহ নিরীহ লোকজনের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করেন।
বড়লেখা থানার ওসি মো: মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, ১৫ আগস্ট রাতে ডিমাই বাজারের ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেফতারের জন্য একাধিকবার পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। ঘটনার পরই আসামিরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করেছে। তবে, পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
মন্তব্য করুন