ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হতেই প্রেসক্রিপশনের ফটো উঠানো
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারী ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকের চেম্বার থেকে বের হতেই কতিপয় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্যবস্থাপত্রের ফটো উঠাতে রোগিকে আকড়ে ধরেন। তারা রোগির ওপর জোর খাঠানো ছাড়াও অনেক সময় অসদাচরণও করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের অনৈতিক দৌরাত্মে রোগি ও তাদের সাথে আসা স্বজনরা অতিষ্ঠ। এতে চিকিৎকরাও বিব্রতবোধ করছেন। কোম্পানীকে মাঠ পর্যায়ে নিজেদের পারফরমেন্স দেখাতে গিয়ে ডাক্তারের দেয়া ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা যে, রোগির গোপনীয়তা ভঙ্গ করছেন তা স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহম্মদ হোসেন তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে নোটিশ জারি করবেন বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিনে ১৮ ফেব্রুয়ারী রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসারের চেম্বার থেকে জনৈক নারী রোগি (৩৫) শ্বাশুড়িকে নিয়ে বের হতেই কথা না বলেই এক যুবক চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র হাতে নিয়ে ছবি তুলতে থাকেন। এতে ওই নারী রোগী ও শ্বাশুড়ি বেশ অবাক ও বিব্রতবোধ করেন। খোজ নিয়ে জানা গেছে, এ যুবকের নাম বুলবুল আহমদ। তিনি অপসোনিন ফার্মানিউটিকেল ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি। অভিযোগ রয়েছে এ কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার শহীদ সোওরার্দি নিজেও এভাবে জোর করে রোগীকে দাড় করিয়ে ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলেন। দুপুরে হাসপাতাল সড়কের সুলভ ফার্মেসীর ডা. দীগেন্দ্র চন্দ্র নাথের চেম্বার হতে জনৈক রোগি বের হলে সেলকো ফার্মাসিউটিকেল কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার দীপংকর নাথ তার হাতে থাকা প্রেসক্রিপশন নিতে চাইলে তিনি আপত্তি জানান। রোগির আপত্তির তোয়াক্কা না করে তিনি মোবাইলে ছবি তুলে নেন।
মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের এধরনের কর্মকান্ডে শুধু রোগি নয়, চিকিৎসকরা বিব্রত বোধ করেন। তারা বলেন, ফি দিয়ে একজন রোগি ডাক্তার দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র সংগ্রহ করলো। ডাক্তারকে বিশ্বাস করে অনেক গোপন রোগের কথা বললো। ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে রোগের সাংকেতিক নাম লিখে ঔষধ লিখে দিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত যুবকরা হাত থেকে প্রেসক্রিপশন কেড়ে নিয়ে ছবি তুলে নিল। রোগির গোপনীয়তা ভঙ্গ করা অনৈতিক, অনধিকার এবং আইনত অপরাধ। এটা বন্ধ হওয়া উচিত।
উপজেলা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ এসোসিয়েশনের সভাপতি আলিম উদ্দিন জানান, এভাবে রোগির হাত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছবি তুলতে খারাপ লাগে। আমরা নিজেরাও অনেক সময় অস্বস্তিবোধ করি, লাঞ্চিত হই। বড়লেখায় ইতিমধ্যে রোগির ব্যবস্থাপত্রের ছবি না তুলতে ফারিয়া সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরও কেউ কেউ ছবি তুলছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহম্মদ হোসেন জানান, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট রোগি, চিকিৎসক সবাই বিব্রত। একজন রোগির পোগনীয়তা ভঙ্গ করা অন্যায়। এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা হয়েছে। বড়লেখায় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের এধরণের অপতৎপরতা বন্ধ করতে এ সপ্তাহেই তিনি নোটিশ জারি করবেন।



মন্তব্য করুন