কনস্টেবল নিয়োগে জেলা পুলিশের স্বচ্ছতা

March 7, 2018,

স্টাফ রিপোর্টার॥ সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে তদবীর, ঘোষ বাণিজ্য, প্রতারণা ও বা দালালীর বিষয় প্রায়ই এ বিষয়টি শুনা যেতো। সম্প্রতি এসব বিষয় থেকে রক্ষা পেতে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ ব্যাপক প্রচারণা চালায়।  পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের কয়েকদিন পূর্ব থেকে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল প্রতারক বা দালালদের কবল থেকে রক্ষা পেতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সচেতনতামূলক মাইকিং, পৌষ্টার, মোবাইল ফোনে এসএমএস সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও এবিষয়ে সচেতনতা মূলক ব্যাপক প্রচারনা চালান।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত পুলিশের এ নিয়োগ নিয়ে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন ও তদবির যাতে না হয় সে বিষয়ে আগে থেকে সর্বোচ্চ প্রচারণা চালান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল। প্রত্যহ সকাল ৯ টায় মৌলভীবাজার পুলিশ লাইন্সে পুলিশ ট্রেইনিং রিক্রুট কনস্টেবল (পুরুষ/মহিলা) পদে লোক ভর্তির কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালানো প্রচারণায় বলা হয়, কেহ আর্থিক লেনদেনসহ কোন প্রকার প্রতারনা করার চেষ্টা করলে তাকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট সোপর্দ করা, ভূয়া ঠিকানা বা ভুল তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার অপচেষ্টা পরিহার করা, কারো কোন আশ্বাসের মাধ্যমে টাকা পয়সা লেনদেন না করা এবং কোন অসাধু দালাল যদি কোন ধরণের প্রতারনা করে তার তথ্য প্রদান করা ইত্যাদি। এ সব প্রচারনা কনস্টেবল পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল অপচেষ্ঠা উপেক্ষা করে স্বচ্ছতা ও সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে জেলা পুলিশ।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক নির্বাচিত ও তাদের পরিবারের সদস্যরা জেলা পুলিশের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তেমনই প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। ফলে এবারের নিয়োগে স্বচ্ছতার দৃষ্টান্ত গড়েছেন মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ।

পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বাছাই পর্বে ১,৭৪০ জন নারী-পুরুষ প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে প্রাথমিক ভাবে ৭৬১ জনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে ৪০২ জন উত্তীর্ণ হয়। মৌখিক যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মধ্য থেকে ৭০ জন পুরুষ সাধারণ ক্যাটাগরিতে, একই ক্যাটাগরিতে ১৩ জন নারী, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুরুষ ৮ জন, উপজাতি কোটায় ৩ জন অপেক্ষমান সহ পুরুষ ৯ জন ও পুলিশ পোষ্য কোটায় পুরুষ ৩ জন ও একজন নারীকে  নির্বাচিত করা হয়। যাদের মেধা ও যোগ্যতা নিখুঁতভাবে পর্যালোচনা করে বাছাই করা হয়।

কনস্টেবল নিয়োগে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত একাধিক প্রার্থী জানান, আর্থিক লেনদেন তদবির ও কোনো দালাল না ধরেই নিজ যোগ্যতায় তারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সাধারণ নারী কোটায় ৮০ নং রোলের প্রার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, আমি সব পরীক্ষায় ভালভাবে উত্তীর্ণ হয়েছি। শুধু তাই নয়, ভাইবা পরীক্ষায় আমি সবার মধ্যে ২য় স্থান অধিকার করি। বাছাই পর্বের প্রথমদিন পুলিশ সুপার স্যার আমাদের বলেছিলেন যোগ্যতা যার সেই চাকরি পাবে। সেই থেকে আমি আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষা দেই। কোনো তদবির ও দালাল না ধরেই আমি নির্বাচিত হয়েছি।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল বলেন, এ নিয়োগে কোনো সাধারণ ও নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে চেষ্টা করেছি। এতে কেউ কোনো দুর্নীতির সুযোগ পায়নি। আমার কার্যকালে ৪ বার পুলিশ নিয়োগ নিয়েছি। বিভিন্ন ভাবে তদবির আসে কোনো কাজ হয়নি। সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com