জনগনের উপর কোন পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দিবেননা- ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার : পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, দেশের জনগনকে কোন অবস্থাতেই অবহেলার চেষ্টা করবেননা। জনগন সিদ্ধান্ত নিবে আগামী মধ্য ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে কাদেরকে দায়িত্ব দিবে। কোন অবস্থাতেই জনগনের উপর কোন মতামত, কোন পিআর চাপিয়ে দিবেননা। দেশের সংবিধান অনুয়ায়ি সরাসরি ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বানের কথা লিখা আছে। এসময় তিনি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যারা অন্দোলন করেছেন, তাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
পিআর পদ্ধতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশ অনেক আছে, যেমন গ্রেট বৃটেন কোথায় সেদেশে কি আপনার পি আর এর প্রাকটিস হয়? পাশ্বর্বতী দেশ ইন্ডিয়ায় শুধু দক্ষিণ ইন্ডিয়ায় অনেক প্রদেশ আছে এর মধ্যে মাত্র তিনটি প্রদেশে পি আর প্রাকটিস করে। তাও নিম্ন কক্ষে করে না। ভারত একটি বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে তারা তো করে না? তাই আজকে যারা পিআর পদ্ধতি চান, খুব ভালো কথা। তাহলে জনগণের কাছে যান জনগণকে বোঝান জনগণ যদি মেনে নেয় আলহামদুলিল্লাহ। জনগণ যেটি রায় দিবে সবাই মেনে নিবেন। সেই অনুযায়ী হবে। কিন্তু বর্তমানে জামায়াতসহ অন্যান্যদল যারা পিআর চায়।
ঐক্যমত কমিশন আপনাদের সাথে কথা বলছে। আমরা দেখছি পত্র পত্রিকায়। আপনারা সেই সময় রাজনৈতিক কর্মসূচী দিয়ে মাঠে ডুবে গেলেন। আপনারা এটি কি বুঝাতে চান? আপনারা কী সংঘাতের দিকে যেতে চান? আপনারা কী জনগণের মতামতকে কী গুরুত্ব দিতে চান না? আপনারা কী আলোচনার টেবিলকে অবিশ্বাস করতে চান? না কি আপনারা অন্য কিছু চান? আপনার কি নির্বাচনটা পিছিয়ে যাক সেটি চান? আজকে চৌদ্দ মাসেও এই দেশে জাতীয় নির্বাচন মধ্য ফেব্রুয়ারী হবে কি হবে না সেইটা নিয়ে মানুষের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। আর পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ওই দেশ থেকে শিক্ষা নেন।
শনিবার ২০ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মৌলভীবাজার পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথাগুলো বলেন।
তিনি আরও বলেন আমাদের জানতে ইচ্ছা করে যে, বাংলাদেশের সংবিধানে কোথাও কি স্বৈরাচার হওয়ার কথা কী লেখা ছিল? কিন্তু সংবিধানের তো কোনো দোষ নেই, দোষ হচ্ছে, যারা দিনের ভোট রাতে করেছেন। যারা বিনা ভোটে নির্বাচন করেছেন। যারা ডামি নির্বাচন করেছেন। জনগণকে দেশের মালিক মনে না করে খালি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য আর প্রশাসন আর বিচার মন্ত্রনালয়ের কিছু সংখ্যক মানুষকে কব্জা করে দেশ শাসন করার চেষ্ঠা করেছেন। দেশটাকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করার চেষ্ঠা করেছেন, দোষ তো তাদের? দোষ তো সংবিধানের নয়? সংবিধানে তো ভাল ভাল কথা লিখা ছিল।
মৌলভীবাজার পৌর বিএনপির আহবায়ক, সৈয়দ মমশাদ আহমদ এর সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো: আব্দুর রহিম রিপনের পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সম্মেলনের উদ্বোধক মো: ফয়জুল করিম ময়ুন।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ভিপি মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মৌলভী আব্দুল ওয়ালী সিদ্দিকী ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল মুকিত, জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান।
পৌর বিএনপি সম্মেলন ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন মো: ফখরুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন মুজিবুর রহমান মজনু ও আবুল কালাম বেলাল।
সম্মেলনের শুরু হওয়ার আগে জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
এদিকে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে বিকেল চারটারদিকে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। কাউন্সিল অধিবেশনে গোপন ব্যালটে নেতৃত্ব নির্বাচিত করার জন্য পৌর বিএনপির সভাপতি, সিনিয়র সহ সভাপতি, সম্পাদক, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোট ১৬ জন প্রার্থী অংশ নেন।
মৌলভীবাজার পৌরসভার মোট নয়টি ওয়ার্ডে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ৬৩৯জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার উৎসবমূখর পরিবেশে প্রয়োগ করছেন। দীর্ঘ দিন পর গোপন ব্যালটে গনতান্ত্রিক পরিবেশে বিএনপির আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচিত করার দায়িত্ব পাওয়াতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উৎসবমূখর পরিবেশে কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ভোট দিচ্ছেন।



মন্তব্য করুন